লুডু খেলার টাকা নিয়ে খুন হন ট্রাক হেলপার সবুর
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার ট্রাক হেলপার সবুর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। বাজিতে মোবাইলে লুডু খেলার টাকা নিয়েই তাকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছেন এসপি মো. আনিসুর রহমান।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ তথ্য জানান।
সবুর আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা গ্রামের রহমত আলীর ছেলে। গত ৫ জুন সকালে চরচারতলা গ্রামের সারকারখানা সড়কে একটি ট্রাক থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের মা হনুফা আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
এসপি আনিসুর রহমান জানান, মামলাটি প্রথমে আশুগঞ্জ থানার এসআই শীবাস চন্দ্র দাস তদন্ত করেন। পরবর্তীতে আসামি গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য মামলাটি জেলা ডিবির এসআই মো. সোহেল কামালের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ক্লুহীন এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনে অনুসন্ধানে জানা যায়, চরচারতলা গ্রামের নিলু মিয়ার ছেলে মো. সুজন এবং একই গ্রামের মো. মান্নানের ছেলে মো. রমজান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
তিনি আরো জানান, গত ৬ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার পঞ্চবটি এলাকা থেকে আসামি মো. সুজনকে এবং ৭ সেপ্টেম্বর নরসিংদীর বেলাবো থানার নারায়ণপুর গ্রাম থেকে আসামি মো. রমজানকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আসামিরা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে তারা জানান, নিহত সবুর প্রায়ই সুজন ও রমজানের সঙ্গে বাজিতে মোবাইল ফোনে লুডু গেম খেলতো। গত ৪ জুন দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে রমজান ও সুজনের সঙ্গে ট্রাকে বাজিতে লুডু গেম খেলতে বসেন সবুর। রাত সাড়ে ৩টা থেকে ৪টার দিকে লুডু খেলায় সবুরের কাছে হেরে যান সুজন ও রমজান। পরে সুজন ও রমজান খরচের জন্য সবুরের কাছে কিছু টাকা চান। কিন্তু সুবুর টাকা না দিলে তাদের মধ্যে মারামারি হয়। একপর্যায়ে সবুরকে ট্রাকের ভেতরে থাকা রশি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত এসপি (প্রশাসন) মো. আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত এসপি (সদর দফতর) মো. আবু সাঈদ, অতিরিক্ত এসপি (নবীনগর সার্কেল) মেহেদী হাসান, সহকারী এসপি (বিশেষ শাখা) আলাউদ্দিন চৌধুরী ও ডিআইও-১ (বিশেষ শাখা) ইমতিয়াজ আহম্মেদ প্রমুখ।
পূর্বের খবর
ট্রাক থেকে পাওয়া গেল হেলপারের মরদেহ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মো. সবুজ মিয়া (২২) নামে এক ট্রাক হেলপারের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৬ জুন) সকালে উপজেলার চর-চারতলা এলাকায় আশুগঞ্জ-ফার্টিলাইজার সড়কের পাশে থাকা একটি ট্রাক থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত সবুজ একই এলাকার মো. মরম আলী মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সবুজ ট্রাকে হেলপার হিসেবে কাজ করত। অন্যান্য দিনের মত মঙ্গলবার রাতেও সে ট্রাকে ঘুমায়। পরে সকালে স্থানীয়রা ট্রাকের ভেতর তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুদ আলম জানান, নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা করা হচ্ছে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।