প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই নিখোঁজ হন আশুগঞ্জের যুবদল নেতা ইউনুছ
প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই এবার ফেঁসে গেছেন যুবদল নেতা মো. ইউনুছ ভূইয়া (৪০)। নিজের ‘নিখোঁজ নাটক’ সাজিয়ে আত্মগোপনে থাকার ২১ দিন পর পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ইউনুছ। তিনি ওই ইউনিয়নের দগীরাসার গ্রামের মৃত আবদুল কাদির ভূইয়ার ছেলে। আশুগঞ্জ সদরের ফেরীঘাটে তার গাড়ি মেরামতের দোকান রয়েছে।
মূলত প্রতিপক্ষকে মামলা দিয়ে ঘায়েল করতেই ইউনুছ নিজের নিখোঁজ নাটক সাজিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান তিনি। তবে প্রতিপক্ষ কারা সেটি জানতে পুলিশের তদন্ত চলছে বলে জানান এসপি আনিসুর রহমান।
এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় আশুগঞ্জ উপজেলা সদরের গোলচত্বর এলাকা থেকে ‘নিখোঁজ’ হন যুবদল নেতা ইউনুছ। এ ঘটনায় ২ ফেব্রুয়ারি ইউনুছের সন্ধান চেয়ে আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী পারভীন আক্তার। পরবর্তীতে ১০ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত ৮/১০ জনকে আসামি করে থানায় অপহরণ মামলা দেন পারভীন।
পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, অজ্ঞাত অপহরণকারীরা মুক্তিপণের জন্য ইউনুছকে অপহরণ করে মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে টাকা দাবি ও গ্রহণ করেছে মর্মে থানায় মামলা করেন তার স্ত্রী পারভীন। মামলার তদন্ত চলাকালে শনিবার রাতে ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুর এলাকা থেকে ইউনুছকে উদ্ধার করে পুলিশ।
তিনি বলেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্যই ইউনুছ তার নিখোঁজ নাটক সাজান। বিষয়টি আমরা নিশ্চিত হওয়ার পর আমাদের সোর্সের মাধ্যমে ইউনুছের সঙ্গে যোগাযোগ করি। যেহেতু সে গাড়ি মেরামতকারী তাই আমাদের সোর্স নিজের গাড়ি সারানোর কথা বলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হই। সেই মোতাবেক অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজ নাটক সাজানোর ঘটনায় ইউনুছসহ তার সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তাদেরকে শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা, সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মাসুদ রানা, সহকারী পুলিশ সুপার রাকিবুল হাসান ভূইয়া ও আশুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।