Main Menu

ইউপি নির্বাচন:: নানা ঘোষণায় আতঙ্ক -আশুগঞ্জে বেকায়দায় আওয়ামী লীগ

+100%-

1458695908ডেস্ক ২৪:: ‘ভোট বলে কাইট্টা লাইবো। সন্ত্রাসী দিয়া কেন্দ্র দহল করবো হুনতাছি।’ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামের হেকিম মিয়া নামের একজন ভোটার নির্বাচনের হাল অবস্থা জানালেন এভাবেই। এই একজন ভোটারই নন, গোটা ইউনিয়নেই মুখে মুখে আছে এমন কথাবার্তা। বিভিন্ন স্থান থেকে সন্ত্রাসী এনে কেন্দ্র দখল, সিল মেরে ১০টায় ভোট শেষ করার ঘোষণা আতঙ্কিত করে তুলেছে সবাইকে। এমন আওয়াজে ভোটারই নন আতঙ্কে আছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাও। এর আলামত শুরু হয়েছে বলেও জানালেন এক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী।

আগামী ৪ঠা জুন এই   ইউনিয়নে নির্বাচন। বন্দরনগরীর এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদের লড়াইয়ে এবার ভিন্নমাত্রা আছে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মো. সালাউদ্দিন, বিএনপির মো. ইদ্রিস মিয়া, জাতীয় পার্টির মো. শাহজাহান, বিকল্পধারার মো. সফিউল্লাহ,স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মনির হোসেন ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নূরুল ইসলাম। এই ৬ জনের মধ্যে ৪ জন নামের প্রার্থী বলেই জানাচ্ছেন ভোটাররা। বিএনপি প্রার্থী প্রচার-প্রচারণাও চালাচ্ছেন না ঠিকভাবে। মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মো. সালাউদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. নূরুল ইসলাম। নূরুল ইসলাম এর আগেও সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত নূরুল ইসলাম যখন চেয়ারম্যান ছিলেন তখন তার পরিষদে ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত সদস্য ছিলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. সালাউদ্দিন। দলগত নির্বাচন হলেও আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়নে হিসাব-নিকাশ অন্যরকম। ইউনিয়নের গণ্ডিতে পা রাখলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. সালাউদ্দিনের প্রচার-প্রচারণাই চোখে পড়ে বেশি। সর্বত্রই তার ব্যানার-পোস্টার। এমনকি নিষিদ্ধ তোরণও শোভা পাচ্ছে ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে। ২০-৩০টি তোরণ রয়েছে তার। অভিযোগ আচরণবিধি লঙ্ঘন করে হোন্ডা নিয়ে মহড়াও দিচ্ছেন তার সমর্থকরা। কিন্তু ভেতরে অবস্থা অন্যরকম। সবার মনে নূরুল ইসলাম কমান্ডার। এমনকি আওয়ামী লীগের নেতারাও গোপনে সমর্থন করছেন নূরুল ইসলামকে। আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. সালাউদ্দিনের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু নাসের ছাড়া আর কাউকে দেখা যায়নি এতদিন। উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সফিউল্লাহ মিয়ার সঙ্গে সালাউদ্দিনের বিরোধ রয়েছে। সে কারণে সফিউল্লাহকে তার নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় প্রথমদিকে দেখা যায়নি। আলোচনা আছে উপজেলা ও বন্দর আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতাই সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে। সবার সঙ্গেই কোনো না কারণে বিরোধ রয়েছে তার। যদিও তারা নির্বাচনী সমাবেশ-বৈঠকে জেলার নেতাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, সালাউদ্দিন আর নূরুল ইসলাম কমান্ডারের চলাফেরায় অনেক পার্থক্য। তাছাড়া সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ অনেক। ওই নেতা বলেন, তাকে প্রার্থী হিসেবে চাননি আশুগঞ্জের নেতারা।  জেলার প্রভাবশালী এক নেতা তাকে প্রার্থী হিসেবে চাপিয়ে দিয়েছেন। তাই মন থেকে কেউ তার নির্বাচন করছেন না। এমন পরিস্থিতিতে জয় পাওয়ার ভিন্নপথ খোঁজা হচ্ছে বলেই জানান তিনি। দলের নেতাদের-ভোটারদের সমর্থন না থাকায় সিল মারার ওপরই ভরসা করতে হচ্ছে সালাউদ্দিনকে। স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নূরুল ইসলাম কমান্ডার বলেন- আমার সমর্থকদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। যাত্রাপুর গ্রামে সাদির নামে আমার এক কর্মীকে মারধর করা হয়েছে। হুমকি দেয়া হচ্ছে আনারস প্রতীকের নির্বাচন করলে গ্রেপ্তার করার। বলছে, নৌকার তোরণে আগুন দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেবে। আমার ব্যানার-পোস্টারও কেটে ফেলে দেয়া হচ্ছে। এসব হুমকি-ধমকিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সবার মধ্যে। তিনি বলেন, বলাবলি হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ভৈরব ও নরসিংদী থেকে সন্ত্রাসী-মস্তান এনে কেন্দ্র দখল করা হবে। ১০টার মধ্যে ভোট শেষ করে দেয়া হবে। এ কারণে ৯টি কেন্দ্রের সব কটি আমার কাছে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হচ্ছে। ভোটাররা চাচ্ছেন ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ। কথা বলার জন্য মো. সালাউদ্দিনের নম্বরে ফোন দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি। সোনারামপুর, যাত্রাপুর, তল্লা ও নাওঘাট গ্রাম নিয়ে এই সদর ইউনিয়ন। ভোটার ২৩ হাজারের বেশি।সূত্র:: মানব জমিন






Shares