নিয়ম রক্ষার নির্বাচনেও অনিয়মের অভিযোগ
মনিরুজ্জামান পলাশ ও মোঃ মাসুদ : কোনো সংসদ সদস্যের মৃত্যু বা অন্য কোনো কারণে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে জাতীয় সংসদের কোনো আসন শূন্য হলে উপনির্বাচনের মাধ্যমে সেখানে নতুন সংসদ সদস্য নির্বাচন করা হয়। আসন শূন্য হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে এই উপনির্বাচন করতে হয়।
অন্যদিকে সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন করতে হয়। চলতি একাদশ সংসদ যাত্রা শুরু করেছিল ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি এই সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হবে। তার আগের ৯০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ১ নভেম্বর থেকে আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে।
ফলে সংবিধানের নিয়ম রক্ষার জন্য বাধ্য হয়েই ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ আসনে উপনির্বাচন করেছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সেই নিয়ম রক্ষার নির্বাচনেও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপনির্বাচনে সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। সকাল থেকে কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে ভোটার উপস্থিতি অনেক কম দেখা যায়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার উপস্থিতি দুই একটা করে আসতে থাকে। তবে আশানুরূপ ভোটার উপস্থিতি দেখা যায় নি। সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি কেন্দ্রে জাল ভোট পড়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।
দুই একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সকাল থেকে কোথাও কোন বিশৃঙ্খলার খবর তেমন পাওয়া না গেলেও অনেকেই ভোট দিতে পারেনি। সরাইলে বিভিন্ন কেন্দ্রে হালনাগাদ ভোটার তালিকার সাথে অনেকের নামের মিল পাওয়া যায়নি। এজন্য অনেকেই ভোট না দিয়ে ফিরে যেতে দেখা যায়। সরাইলে সকাল ১০টার দিকে ভোট দিতে আসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সাংসদ এড: জিয়াউল হক মৃধা। তিনি কালিকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেন । ভোট প্রদান শেষে তিনি সংবাদকর্মীদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ভোটার তালিকার সাথে অনেকের নামের গরমিল রয়েছে। যার কারণে ভোট দিতে ভোটারদের বিলম্ব হচ্ছে। ভোট না দিতে পেরে তাদের চলে যেতে দেখা যায়। হালনাগাদে ভোটার তালিকাটা আমার কাছে গরমিল মনে হচ্ছে। আমি নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি জানিয়েছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪১০১১২, এর মধ্যে সরাইলে ২৬৬৫৯৭। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৪২ হাজার ৩শ ৩৬ জন, মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ২৪হাজার ২শ ৬০ জন। আশুগঞ্জ উপজেলায় ১৪৩৫০৫ জন ভোটার। আশুগঞ্জে মোট পুরুষ ৭৫ হাজার ৮৭ জন ও মহিলা ভোটার ৬৮ হাজার ৪ শ ১৮ জন। দুই উপজেলায় ১৭ টি ইউনিয়ন, সরাইল ৯ টি আশুগঞ্জ ৮। সরাইল আশুগঞ্জ দুই উপজেলায় ১৩২ টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলছে। এর মধ্যে সরাইল ৮৪ টি কেন্দ্র আশুগঞ্জে ৪৮ টি।
ব্যালটে সিল মারার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান আলম সাজু বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ব্যালতে সিল মারার অভিযোগ সত্য নয়, ভিত্তিহীন।’
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহগীর আলম বলেন, ‘প্রতিটি কেন্দ্রেই কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। কোথাও কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হয়েছে।’
উল্লেখ্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সাবেক স্বতন্ত্র সাংসদ উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়া গত ৩০ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। আসনে জিতলো আওয়ামীলীগ