নাসিরনগরে “বীরের কন্ঠে বীরত্বগাঁথা” শীর্ষক মাস ব্যাপী অনুষ্ঠানের শুভ উদ্ভোধন



এম.ডি.মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর হতে::৭১’র রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্ব-কন্ঠে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। “বীরের কন্ঠে বীরত্বগাঁথা” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে মাস ব্যাপী এ আলোচনা সভার শুভ উদ্ভোধন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল বাকী।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ৫ মার্চ সোমবার নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের হল রুমে অনুষ্ঠানের উদ্ভোধন করা হয়। উপজেলার ২৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাসব্যাপী এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন মুক্তিযোদ্ধা আলোচনায় অংশ গ্রহণ করে আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযোদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে এ ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানের আয়োজন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন ও গীতা পাঠ করেন স্কুলের দুজন শিক্ষার্থী। জাতীয় সংঙ্গীত পরিবেশন করে অনুষ্ঠানের মূলপর্ব শুরু হয়। মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে দুজন মুক্তিযোদ্ধা চোখের জলে কাদিঁয়েছেন উপস্থিত ২৫০০জন ছাত্রছাত্রীকে। কেদেঁছেন উপস্থিত অতিথিবৃন্দ,সাংবাদিক ও সুশিল সমাজ।
মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল বাকী বক্তব্যে বলেন, তখন ৭১ সাল। নাসিরনগর উপজেলাকে চর্তুদিক থেকে আক্রমন করা হয়েছিল। নাসিরনগর প্রথম আক্রমণ করা হয়েছিল হরিপুর বড়বাড়ি ঘাট হয়ে গুনিয়াউক,চৈয়ারকুড়ি ও ফুলপুর হয়ে নূরপুরে। এরপর কুন্ডা হয়ে নাসিরনগরে। আমি কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা সহ কুলিকুন্ডা গরুর বাজারে আশ্রয় নিয়েছিলাম। আমার সাথে ছিল তিনজন আর কুলিকুন্ডার স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ছিল ৭ জন। সর্বমোট ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা সহ আমরা যখন গরুর বাজারে যাই তখন নাসিরনগর থানার অসি ছিল তোফায়েল আহমেদ। তিনি ফাকাঁ গুলি করে আমাদের আত্মসর্মপন করার জন্য বলেন। তখন আমি আমার সহকর্মীদের নির্দেশ দিলাম মরব তবু আত্মসর্মপণ করবনা। অপারেশন শেষ করে যখন বাড়িতে আসলাম তখন আমার বাবা বলেন এত মুক্তি যোদ্ধাদের খাবার আমি কি ভাবে জোগার করব। তখন আমি আমার মাকে বলেছিলাম আমার রাইফেলে ২০ টি গুলি আছে ১৯টি গুলি পাকহানাদারদের জন্য আর একটি আমার বাবার জন্য। বাবাকে বলে দিও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কোন প্রকার অভিযোগ যেন না করে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম মশিউর রহমান বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়ে মুক্তিযোদ্ধের সঠিক ইতিহাস আগামী প্রজন্মকে জানাতে চাই। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাস ও বিকৃতি হতে থাকে। সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে আমাদের এ আয়োজন। নতুন প্রজন্মের প্রতি এমনটাই আশা তাঁর।