নাসিরনগরে সাত মাসের শিশুর লাশ নিয়ে ব্যাপক হৈ চৈ
মোঃ আব্দুল হান্নান, প্রতিনিধি, নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের শ্মশানের নিকট ব্রীজের তলে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পলিথিনে মুড়ানো সাত মাসের শিশুর লাশ নিয়ে ব্যাপক হৈ চৈ শুরু হয়েছে। অপরদিকে ফান্দাউক ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা প্রণতি বালা দাসের বিরুদ্ধে অবৈধ এম আর ও অ্যাবরশনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ২৩ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০ ঘটিকায়। প্রত্যেক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে- ফান্দাউক ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শীকা প্রণতি বালা দাস একটি অবৈধ গর্ভধানকারী কুমারী মেয়েকে সারা রাত্র তার বাসায় রেখে বিভিন্ন ঔষধ প্রয়োগ করে সকাল সাড়ে ৮ ঘটিকায় অ্যাবরশন করে। ১০ ঘটিকায় সময় সাবেক এক আয়াকে দিয়ে পলিথিনে মুড়িয়ে উল্লেখিত স্থানে শিশুটির লাশ ফেলে দেয়। পথচারীরা হঠাৎ পলিথিনে মুড়ানো একটি প্যাকেট দেখে ভয় পেয়ে যায়। পরে প্যাকেটটি খুলে ছয় সাত মাসের একটি মৃত শিশুর লাশ দেখতে পায়। এই নিয়ে এলাকায় ব্যাপক হৈ চৈ শুরু হয়। বিষয়টি জানতে পেরে দুজন সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। ওই বিষয়ে সহকারী পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা (এম সি এইচ এফ পি) মাহানুর ওসমানীর কক্ষে তার সামনে প্রণতি বালা দাসকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। প্রণতি বালা দাস জানায়- বুড়িশ্বর ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের আয়া ডলি বেগম রোগীটি তার কাছে পাঠায়। বিনিময়ে প্রণতি বালা দাস কুমারীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেন। তা থেকে আয়া ডলি বেগমকে ২ হাজার টাকা দেন। ২ হাজার টাকার বিভিন্ন ঔষধ প্রয়োগ করে গর্ভপাত ঘটান। এ বিষয়ে ডলি বেগমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- দুজন মহিলার সাথে কলেজ মোড়ে তার দেখা হয়। তারা জানতে চান- কে এম আর করেন। তিনি তখন প্রণতি বালা দাসের কথা বলে দেন। এর বেশি আমি কিছু জানেন না বলে জানান। ঘটনার পর সহকারী পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা (এম সি এইচ এফ পি) মাহানুর ওসমানী সরজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে কি পেয়েছে জানতে চাইলে- তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন আমি কর্তৃপক্ষকে রির্পোট করব। কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে। তিনি আরও জানান- এম আর করার নিয়ম আছে। তবে ছয় সপ্তাহের বেশি নয়। আট সপ্তাহ পর্যন্ত হলে সিনিয়র ভিজিটর অথবা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পারমিশন নিয়ে করতে হয়। তিনি বলেন- আমাদের মাসিক এম আর রির্পোট আছে। রির্পোটে কি কি কারণে এম আর করা হয়েছে মাস শেষে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হয়, কিন্তু প্রণতি বালা দাস কোন মাসেই এম আর রির্পোট দাখিল করেননি। এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের সাথে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি ঘটনা শুনেছি। সিনিয়র ভিজিটর ঘটনাটি পরিদর্শন করেছেন। আমরা বিভাগীয় ব্যবস্থা নিব। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক অরবিন্দু দত্তের সাথে মোবাইল ফোনে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন- এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিব, তবে এই সমস্ত ঘটনা ফৌজদারী অপরাধ, ক্ষতিগ্রস্থ ব্যাক্তি ইচ্ছা করলে আইনের আশ্রয় নিতে পারে। সরজমিন ফান্দাউক গিয়ে বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে- প্রণতি বালা দাস দীর্ঘদিন যাবৎ অত্রাফিসে কর্মরত রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন এ প্রতিনিধিকে জানান- প্রণতি বালা দাস প্রতিদিন এরুপ ২/৩টি অবৈধ এম আর ও অ্যাবরশন করে থাকে। তার এই সমস্ত কাজের কারণে রোগীরা নিয়মিত সেবা পাচ্ছে না। সে প্রতিদিনই রোগীদের সেবা বাধ দিয়ে এই সমস্ত অবৈধ কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করে থাকে।