সরাইলে শত বছর পর নিজ অর্থায়নে রাস্তা র্নিমান
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের হাওর এলাকার শত বছরপর নিজের উদ্যোগে রাস্তা নির্মিত হচ্ছে। প্রায় ৫০ হাজার একর জমি থাকলেও রাস্তার অভাবে ফসল ঘরে আনতে কষ্টের সীমা ছিল না এ গ্রামের কৃষকের। আবার হাওরে বর্ষা এলেই রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে যায় । র্বষায় ৬ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে আনতে হয় কৃষকের ফসল। দীর্ঘদিন পার হলেও কারো কোন পদক্ষেপ ছিল না রাস্তাটি নিয়ে। তাই এ গ্রামের বাসিন্দা শেখ মুখলেছ উদ্দিন হেলাল নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করেন ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরকোণে অবস্থিত নোয়াগাঁও গ্রাম। এই গ্রামে প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের বসতি। গ্রামের সাথেই একাকার হয়ে আছে হাওর বেষ্টিত ধুল্লাইর বিল। হাওর থেকে কৃষকের ফসল ঘরে আনতে এ গ্রামের একটি মাত্র রাস্তা। জনপ্রতিনিধিসহ অনেককেই রাস্তাটির কথা বলার পরও রাস্তা নির্মাণে কেউ এগিয়ে আসেন নি।
কৃষকরা জানায় ধান কেটে সরাইল-নাছিরনগর সড়কের পুটিয়া ব্রিসের পূর্ব পাশ^ থেকে ৪/৫ হাজার টাকা খরচ করে পরিবহনের মাধ্যমে ৬ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে ধান ঘরে তুলতে হয়। রাস্তাটি নির্মান হলে এ এলাকার কৃষকের ফসল ঘরে তুলতে খরচ কমে যাবে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা।
ওই গ্রামের ৭৫ বছরের বৃদ্ধ মোবারক হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কাদা পানি দিয়ে চলাচল করতে জীবনটা কেটে গেল কিন্তু আমাদের ভোগান্তি নিরসনে কেউ এগিয়ে এলো না।’
মাঞ্জু মিয়া,মকিম খান,মোঃ লায়েছ মিয়া, আব্দুল ওয়াদুধ, সামছুল আলমসহ গ্রামবাসীরা বলেন, ‘গ্রাম থেকে বের হয়ে ধুল্লাইর বিলে যাওয়ার একমাত্র এই রাস্তা। সারাদেশে বিভিন্ন রাস্তা ঘাট পাকা হলেও আমরা এমন দূ‘র্ভাগা কেউ রাস্তাা নির্মাণ করে দেয়নি। অথচ আমাদের এ হাউরে ৪০ থেকে ৫০ হাজার একর জমি রয়েছে। আমাদের অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয় কার্তিক থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত। ‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরে চেয়ারম্যান মেম্বারসহ বিভিন্ন জায়গায় ধর্ণা দিয়েও কেউ এগিয়ে আসেনি। অবশেষে মুখলেছ উদ্দিন হেলাল নিজের টাকা দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে দিচ্ছে”।
শেখ মুছলেহ উদ্দিন হেলাল জানান, বৃটিশ আমল থেকে চার কিলোমিটার এরিয়া নিয়ে এ গ্রামের ফসলির মাঠ। এ মাঠের সমস্ত ফসল এ রাস্তা দিয়ে আনা হয়। কার্তিক মাস থেকে জৈষ্ট মাস পর্যন্ত এ মাঠের ফসল আনার সময় রাস্তা পানিতে তলিয়ে থাকে। তখন কৃষক ধান কেটে সরাইল –নাছিরনগর সড়কের পুটিয়া ব্রিসের পূর্ব পাশ থেকে পরিবহনে ৬ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে আনতে হয়। তাদের কষ্টের কথা চিন্তা করে আমি আমার নিজের টাকায় রাস্তা র্নিমান করে দিচ্ছি।