যাত্রীবাহী কোচ গভীর খাদে নিমজ্জিত, নিহত-৩, আহত-৫৩
প্রতিনিধি ::মোহাম্মদ মাসুদ , সরাইল থেকে, সরাইলে যাত্রীবাহী একটি কোচ নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ব্রীজের রেলিং ভেঙ্গে গভীর খাদে নিমজ্জিত হয়েছে। এতে নিহত হয়েছে দুই শিশু সহ তিনজন ও আহত হয়েছে নারী পুরুষ ও শিশুসহ ৫৩ জন। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইলের বেড়তলা নামক স্থানে গত বুধবার রাত সাড়ে সাতটায় এ মর্মান্তিক দূর্ঘটনাটি ঘটেছে। এতে মহাসড়কে তিন ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি ও র্যাবের লোকজন উদ্ধার কাজে অংশ গ্রহন করে রাত সাড়ে দশটায় খাদ থেকে ওই কোচটি সড়কে তুলে এনে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত যাত্রীরা জানায়, গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার জামালপুর গ্রামের একই বাড়ির ৪/৫ পরিবারের নারী শিশু ও পুরুষ সহ মোট ৫৫ জন যাত্রী একটি কোচ (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৫১৮৭) রিজার্ভ করে সিলেটে মাজার জিয়ারত করতে গিয়েছিল। গত বুধবার জিয়ারত শেষে তারা বাড়ির উদ্যেশ্যে যাত্রা করেন। মহাসড়কের সরাইলের বেড়তলা নামক স্থানে পৌঁছা মাত্র বিপরীত দিক থেকে আসা বেপরোয়া গতির একটি ট্রাক যাত্রীবাহী ওই কোচটিকে ধাক্কা দেয়। এতে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ৫৫জন যাত্রী সহ কোচটি ব্রীজের রেলিং ভেঙ্গে বিকট শব্দে পাশের গভীর খাদে নিমজ্জিত হয়। গাড়িটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। গাড়ির শব্দ ও যাত্রীদের আর্তচিৎকারে আশ পাশের লোকজন ও চাতাল শ্রমিকরা দৌড়ে এসে পানিতে লাফিয়ে পড়ে পানি ও কোচের ভিতরের যাত্রীদের উদ্ধার করেন। সামান্য আহত ২৮ যাত্রীকে মহাসড়কের পাশে বেড়তলা গ্রামের কর কমিশনার জিহাদ উল্লাহর বাড়িতে আশ্রয় দেয়া হয়। সেখানে তাদেরকে দুই পল্লী চিকিৎসক চিকিৎসা দেন। দেয়া হয় খাওয়া খাদ্য। গুরুতর আহত বাকী যাত্রীদের জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। হাসপাতালে নেয়ার পর ছাদেক মিয়ার শিশু পুত্র তারেক মিয়া (১০) মারা যায়। এ ছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় চারজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যায় অজ্ঞাত নামা এক পুরুষ। ওদিকে দূর্ঘটনার পর থেকেই মহাসড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের দুদিকে প্রায় ৮ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। উভয় দিকে অনেক সিরিয়াস রোগী বহনকারী এ্যাম্বোলেন্স ও আটকা পড়ে। দূর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে আসেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, মিসেস শিউলি আজাদ, উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) মোঃ শাহ আলম বকাউল। প্রশাসনের লোকজন তিতাস গ্যাস ফিল্ডের একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন রেকার (ক্যারেন) মাধ্যমে দীর্ঘক্ষন চেষ্টার পর রাত সাড়ে দশটার দিকে কোচটি খাদ থেকে তুলে আনতে সক্ষম হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা খাদ থেকে মাহাবুব (১২) নামের আরেক শিশুর লাশ উদ্ধার করেন।