সরাইলে সরকারি জায়গায় অবৈধ ভাবে মার্কেট নির্মাণ
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকেঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল এলাকায় সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে মার্কেট নির্মাণ করেছেন স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী। নিয়ম না থাকলেও ওই জায়গার শ্রেণী পরিবর্তন করে লীজ নিতে ভূমি দস্যুরা ভূমি কর্মকর্তাদের সাথে রফাদফা করেছেন। ২০ লাখ টাকার বাণিজ্যের বিষয়টি চাউর রয়েছে গোটা এলাকায়। এদিকে সরকার হারিয়েছে বড় অংকের রাজস্ব। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সরাইল-অরুয়াইল সড়কের পাশে পাকশিমুল বাজার সংলগ্ন ওই সরকারি জায়গাটির বর্তমান বাজার দর প্রায় দেড় কোটি টাকা। গতবছর সড়ক নির্মাণ হওয়ার পর স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী অবৈধভাবে দখলে নেয় জায়গাটি। ম্যানেজ করেন স্থানীয় ভূমি অফিসকে। পরে কৌশলে হাতে নেন তারা তখনকার সহকারি কমিশনার (ভূমি) কে। দিব্যি সেখানে নির্মাণ করেন একাধিক মার্কেট। বিষয়টি নিয়ে একাধিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয় প্রশাসন নড়েচড়ে উঠেন। সরকারি এ জায়গাটি ছেড়ে দিতে প্রথমে দখলদারদের চিঠি দেওয়া হয়। পরে ওই জায়গা থেকে অবৈধ মার্কেট উচ্ছেদ করতে প্রশাসন উদ্যোগ নেয়। দখলদারদের সহযোগিতা করার অভিযোগে শাস্তিমূলক বদলি করা হয় তৎকালীন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে। একসময় রহস্যজনক কারণে এ জায়গা দখলমুক্ত করার সব উদ্যোগ ধামাচাপা পড়ে যায়। সম্প্রতি সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে জায়গার শ্রেণী পরিবর্তনের পর সংশ্লিষ্ট ভূমি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় নিজেদের নামে লীজ (বন্দোবস্ত) নেওয়ার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে ফেলেছেন দখলদারা। পাকশিমুল গ্রামের ইউপি সদস্য মোতালেব মিয়া বলেন, এই জায়গাটি সরকারি ১নং খাস খতিয়ানভূক্ত। এখানে সড়ক নির্মাণের পর এ জায়গা এখন অনেক মূল্যবান। এখানকার কয়েকজন লোক এই জায়গায় একাধিক মার্কেট নির্মাণ করে। সরকারি জায়গা থেকে এই মার্কেট উচ্ছেদের কথা ছিল। এখন শুনছি মার্কেট উচ্ছেদ না করেই এ জায়গা লীজ দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গতবছর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে দেশের সরকারি সকল জায়গার শ্রেণী পরিবর্তনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা আছে। তবুও এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তারা মোটা অঙ্কের অর্থবাণিজ্যে আগের তারিখ ব্যবহার করে সরকারি মূল্যবান জায়গা শ্রেণী পরিবর্তনের পর বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে লীজ দিয়ে যাচ্ছেন। তেলিকান্দি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. নবী হোসেন ভূইঁয়া বলেন, পাকশিমুলের ওই সরকারি জায়গায় নির্মিত মার্কেট উচ্ছেদ করা হয়নি। এ জায়গাটির শ্রেণী পরিবর্তন করে এখানের ৩৩টি ভিটি নির্ধারিত ব্যক্তিদের নামে বন্দোবস্ত (লীজ) দেওয়ার জন্য বেশকয়েকদিন আগেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে সরকারি জায়গা শ্রেণী পরিবর্তনের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ জায়গার লীজ সংক্রান্ত সকল কিছু দেখছেন জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)। উনারা ইচ্ছে করলে জায়গার শ্রেণী পরিবর্তন করতে পারেন। এ কাজে অর্থ লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেন এ ভূমি কর্মকর্তা। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (সদ্য বদলি) মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান খান বলেন, এই উপজেলায় এসিল্যান্ড পদ শূন্য থাকায় পাকশিমুল এলাকার সেই সরকারি জায়গার লীজ সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকান্ড সম্পন্ন করছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)। তার নির্দেশে আমরা প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এরবেশি আমার জানা নেই। |
« সরাইলে পুত্রবধূর ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি আহত ॥ পুত্রবধূ আটক (পূর্বের সংবাদ)
(পরের সংবাদ) হরতালের সমর্থনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল »