ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ সরাইল-আশগঞ্জ
মৃত-প্রবাসীদের ভোটসহ বিজয় ছিনিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের স্থগিত হওয়া তিন কেন্দ্রের পূণ:ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৯ জানুয়ারি।
আসনটির মোট ১৩২ কেন্দ্রের মধ্যে ১২৯ কেন্দ্রের ফলাফলে বিএনপি প্রার্থী উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে ৮২ হাজার ৭২৩ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধিস্বতন্ত্র প্রার্থী প্রার্থী মঈন উদ্দিন মঈন ‘কলার ছড়ি’ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৭২ হাজার ৫৬৪ ভোট। সে হিসেবে তাদের ভোটের ব্যাবধান ১০ হাজার ১৫৯। আর স্থগিত হওয়া তিন কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ৫৭৪। এর মধ্যে মৃত ও প্রবাসে থাকা ভোটার সংখ্যা ৫৬৩ জন।
আসনটির স্থগিত হওয়া তিনটি কেন্দ্রের পূণ:ভোটে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মঈন উদ্দিন মঈন ভোটের আগের রাতেই মৃত ও প্রবাসীদের ভোটসহ শতভাগ কাস্টিং এর মাধ্যমে ধানের শীষের বিজয় ছিনিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূইয়া।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরের সবুজবাগ এলাকায় নিজ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে আব্দুস সাত্তার বলেন, শত অনিয়ম ও বৈরি পরিবেশেও সরাইল-আশুগঞ্জের জনগণ ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করেছে। পরে নিশ্চিত পরাজয় বুজতে পেরে ভোটের দিন রাতে ধানের শীষ অধ্যুষিত তিনটি কেন্দ্র স্থগিত করানো হয়। এরপরও স্থগিত হওয়া তিনটি কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা থেকে মৃত ও প্রবাসে থাকা ভোটারদের বাদ দিলে আমার প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী থেকে ধানের শীষের ভোট বেশি থাকে। মূলত নির্বাচন কমিশন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিলে ওই তিন কেন্দ্রে পুনঃভোটেরই প্রয়োজন হয়না। তিন কেন্দ্রের মোট ভোটারদের মধ্যে মৃত ও প্রবাসে থাকা ভোটার সংখ্যা ৫৬৩ জন বলে সংবাদ সম্মেলনে তথ্য দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুস সাত্তার বলেন,স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কতিপয় দুস্কৃতিকারী লোকজন বাড়ি-বাড়ি গিয়ে হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে বলছে যে, ৯ তারিখের পুনঃনির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে যেন কেউ আমার দলীয় এজেন্ট হিসেবে কেন্দ্রে না যায় এবং আমাকে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে। অন্যথায় জানমালের ক্ষতি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার ভয় দেখিয়ে চলছে। ফলে আমিসহ আমার দলীয় লোকজন চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক, সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য যে, গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের তিনটি কেন্দ্রে অনিয়ম ও গোলযোগের অভিযোগে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। স্থগিত হওয়া এই তিনটি কেন্দ্র হলো- যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সোহাগপুর (দক্ষিণ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ তিন কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ৫৭৪। আর সাত্তার ১০ হাজার ১৫৯ ভোটে এগিয়ে আছেন। তিনটি কেন্দ্রই আশুগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী মঈন উদ্দিনের বাড়ি আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর গ্রামে।