Main Menu

রিকশাচালকের হাতে হাতকড়া! ৫ হাজার টাকায় ছাড়

+100%-

মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল।  সরাইলে নিরপরাধ রিকশাচালক আমিরের হাতে হাতকড়া পড়িয়েছে পুলিশ। থানা হাজতে থাকতে হয়েছে ৩ ঘন্টা। শুধু নামের মিলের অপরাধে তাকে গত বৃহস্পতিবার রাতে চুন্টা বাজার থেকে গ্রেপ্তার করেন এস.আই মাঈনুল ইসলাম। জাতীয় পরিচয়পত্র ও যক্ষা রোগাক্রান্তের কাগজপত্র দেখানোর পরও থানা থেকে ছাড়া পেতে তাকে গুনতে হয়েছে ৫ হাজার টাকা। মাসে ১ হাজার টাকা সুদে ওই টাকাটা ম্যানেজের কথা জানিয়েছেন আমিরের পরিবারের সদস্যরা। কি অপরাধ ছিল এ রিকশাচালকের? কে বহন করবে তার সুদের দায়? এসব প্রশ্ন এখন সর্বত্র।

ভুক্তভোগী আমির, পরিবার ও স্থানীয় লোকজন জানায়, চুন্টা গ্রামের বাসিন্ধা আমির আলী (৫১)। রিকশাচালিয়ে সংসারের ঘানি টানছেন। গত ২-৩ মাস ধরে তাকে বাড়িতে গিয়ে খুঁজছে পুলিশ। তার নামে কোন মামলা মোকদ্দমা নেই। নামে মিল থাকায় ঘুরে ফিরে পুলিশ আমির আলীর কাছেই আসছেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আমির আর রিকশাচালক আমির এক ব্যক্তি নয়। বিষয়টি একাধিকবার পুলিশকে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন স্থানীয় লোকজন। কিন্তু আমলে নেননি পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে চুন্টা বাজার থেকে আমিরকে গ্রেপ্তারের পর হাতকড়া পড়িয়ে থানায় নিয়ে আসেন এস.আই মাঈনুল ইসলাম। আমিরের স্ত্রী পুত্র সহ স্বজনরা থানায় গিয়ে তার জাতীয় পরিচয়পত্র দেখান। যক্ষা রোগাক্রান্ত আমিরের চিকিৎসকের কাগজও প্রদর্শন করেন। মন গলে পুলিশের। প্রথমে ৩ হাজার। পরে ২ হাজার। মোট ৫ হাজার টাকা দেওয়ার পর থানা হাজত থেকে ছাড়া পায় আমির। ততক্ষণে চলে ৩ ঘন্টারও অধিক সময়। মূলত গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামী আমির ও রিকশাচালক তরু মিয়ার ছেলে আমির এক ব্যক্তি নয়। একজনের বদলে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমির আলী বলেন, ২-৩ মাস ধরে পুলিশ আমাকে যন্ত্রণা দিচ্ছে। আমি বারবার বলছি এ আসামী নয়। অন্য কেউ। কারন আমার বাবার নামের সাথে কাগজের বাবার নাম মিলে না। পুলিশ শুনল না। শেষ পর্যন্ত আমাকে হাতকড়া পড়িয়েই ছাড়ল। রাত ৮টায় নিয়ে গেল। ৫ হাজার টাকা নিয়ে ছাড়ল রাত ১১টার পর। আমিরের স্ত্রী খায়েরা খাতুন ও ছেলে ইব্রাহিম বলেন, নির্দোশ লোকটিকে নিয়ে দ্বিতীয় তলায় থানার লকআপে রাখছে। তিনি আসামী নয় মর্মে কাগজপত্র দেওয়ার পরও টাকা ছাড়া ছাড়বে না। কি আর করব। যক্ষা রোগী। শীতের রাত কোথায় কিভাবে থাকবেন? এমনটা ভেবে প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা লাভে ৫ হাজার টাকা এনে পুলিশকে দিলাম। পরে ছাড়া পেল আমির আলী।
এস. আই মো. মাঈনুল ইসলাম বলেন, সকল অভিযোগ মিথ্যা। আমিরকে গ্রেপ্তার করিনি। থানায় এনে তার পরিচয়টা যাচাই করেছি। স্থানীয় ইউপি সদস্য, ইউপি চেয়ারম্যান বা গণ্যমান্য লোকজনকে জিঞ্জেস করলেই তো পরিচয়টা জানতে পারতেন। এ কথা এড়িয়ে তিনি বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টিও মিথ্যা। কারা বলেছে? তাদের নামটা বলুন।






Shares