সকল আন্তঃনগর ট্রেনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে যাত্রাবিরতি এবং আন্তঃনগর মর্যাদায় ঢাকা গামী একটি নতুন ট্রেন চালু করা করার দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান



আজ মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোঃ দিদারুল আলমের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে সম্মিলিত সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষে মোঃ ইব্রাহিম খান সাদাত, জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি পীযূষ কান্তি আচার্য, জেলা জামায়াতে ইসলামের আমির মোবারক হোসেন আকন্দ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক জাবেদ রহিম বিজন, জেলা নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রতন কান্তি দত্ত, তরী বাংলাদেশের আহবায়ক শামিম আহমেদ সদস্য খালেদা মুন্নি, জেলা জামাতের প্রচার সম্পাদক কাজী সিরাজ সহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
রাজধানী থেকে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম এবং পূণ্যভূমি সিলেট যাতায়াতের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ স্থল ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এখানে প্রায় ৩৩ লক্ষ লোকের বসবাস। বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম রেমিটেন্স প্রেরণকারী জনগণ এ জেলার বাসিন্দা। বৃহত্তম গ্যাসক্ষেত্র তিতাস, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, সারকারখানা,আন্তর্জাতিক নদীবন্দরে আশুগঞ্জ, স্থলবন্দর আখাউড়া সহ নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় আয়ের জোগানদার এই জেলা। কিন্তু অতীব দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে এখানকার মানুষকে তৃতীয় শ্রেণীর মর্যাদায় দেখে রাষ্ট্র। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের ব্রাহ্মণবাড়িয়া আগমন ও নির্গমন হয়ে থাকে। প্রবাসী এবং চিকিৎসার্থে রাজধানীর সাথে নিত্য যোগাযোগের ভোগান্তি কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে কারাগারের নির্যাতনের থেকেও ভয়াবহ বলে মনে হয়। সর্বশেষ ভারতীয় ঋণে আশুগঞ্জ- আগরতলা চার লেন রাস্তার বেহাল দশায় কত প্রান যে রাস্তার উপর গিয়েছে তার কোনও হিসাব নেই। সড়ক পথে মাত্র একশত কিলোমিটার পেরিয়ে রাজধানীতে যেতে ন্যূনতম ৪ ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টা বা তারও বেশী সময় লাগে যা ধুলা ধুয়ায় আচ্ছন্ন।
সহজতম ও স্বল্পসময়ে ঢাকা যাওয়া-আসার মাধ্যম রেলগাড়ী। কিন্তু এখানেও আমাদের জেলাবাসীর সাথে করা হচ্ছে চরম বৈষম্যমূলক আচরণ। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার রেলের সীট সংখ্যা কমিয়ে দেয়। নানা আন্দোলন সংগ্রামেও সীট বৃদ্ধি, গাড়ী যুক্ত করা, সিলেট থেকে ঢাকা গামী কালনী, উপবন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা গামী সুবর্ণ বা সোনার বাংলা, সদ্য যুক্ত কক্সবাজার অভিমূখী পর্যটক বা কক্সবাজার এক্সপ্রেস, চট্টগাম থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার বিজয় এক্সপ্রেস কোনটিরই স্টপেজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া দেয়া হচ্ছে না। একটি কমিউটার ট্রেন থাকলেও সর্বনিম্নমানের কোচ এবং গুটি কয়েক কোচ দিয়ে
চালানোর ফলে তাতেও ভোগান্তির শেষ নেই।
বিবৃতিতে নিম্নলিখিত দাবী সমূহ উপস্থাপন করা হয়।
১। ঢাকা-সিলেট যাওয়া আসার গাড়ী কালনী এবং উপবন এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টপেজ প্রদান
২। চট্টগ্রাম-ঢাকা, ঢাকা-কক্সবাজার পথে চলাচলকারী সকল ট্রেনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাত্রা বিরতি প্রদান
৩। আন্তনগর মর্যাদায় একটি নতুন ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা পথে চালু করা যার কোচসংখ্যা ন্যূনতম ১৬টি।
৪ । বর্তমানে চালু তিতাস কমিউটার ট্রেনের ভাঙা কোচ বাদ দিয়ে নতুন ১৬টি কোচ প্রদান
৫। চট্টগাম ময়মনসিংহ রুটে চলাচলকারী বিজয় এক্সপ্রেস এর যাত্রাবিরতি প্রদান
৬। ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে যাত্রীদের সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে। টিকিট কাউন্টার সংখ্যা বাড়াতে হবে, টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করা। আসনবিহীন টিকিট আনলিমিটেড করা।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়- ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে টিকিট বিক্রিতেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন সর্বোচ্চ আয় দিয়ে রেলের উন্নয়নে অংশীদার হিসাবে আছে। উল্লেখিত দাবী সমূহ বাস্তবায়নে নানান সময়ে প্রতিশ্রুতি, ঘোষণা, চিঠি চালাচালি, আন্দোলন, সংগ্রাম, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রভৃতি কর্মকান্ড পরিলক্ষিত হলেও বাস্তবতা হচ্ছে যে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী শুধু আশ্বাসই পেয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। যখনই আন্দোলন হয় তখনই মুলা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। পড়ে আর তা বাস্তবায়ন হয়না।
বিবৃতি দাতাগণ উপর উল্লেখিত দাবীসমূহ বাস্তবায়নে ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেয়। অন্যথায় ২৮ ফেব্রুয়ারী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপর দিয়ে চলাচলকারী সকল ট্রেন যাতায়াত সর্বসাধারণ জনতা বন্ধ করে দেবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।প্রেস রিলিজ