Main Menu

ডাটা রিকভারিতে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন মাহবুব হোসেন শাহী

+100%-

রিপোর্ট ॥ বাংলাদেশে ডাটা রিকভারিতে প্রথমবারের মতো বিশেষজ্ঞ সনদ পেলেন মোঃ মাহবুব হোসেন শাহী। দীর্ঘদিন ধরে দেশে এ সেবাটিকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। ক্ষতিগ্রস্ত বা নষ্ট হয়ে যাওয়া ডিজিটাল মেমোরি ডিভাইস (হার্ডডিস্ক ড্রাইভ) থেকে উপাত্ত পুনরুদ্ধারে তার জ্ঞান, দক্ষতা ও সাফল্যের কথা উল্লেখ করে চীনভিত্তিক ডাটা রিকভারি প্রযুক্তি ম্যানুফ্যকাচারার ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ‘ডলফিন ডাটা ল্যাব’ সম্প্রতি মাহবুবকে ‘সার্টিফিকেট অব এক্সিলেন্স’ প্রদান করেছে। এর আগেও অবশ্য বিশ্বের একাধিক প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃত পেশাদারদের তালিকায় তার নাম এসেছে। ডাটা রিকভারিতে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ স্বীকৃতি পাওয়া মাহবুবের গল্পের শুরুটা প্রায় এক যুগ আগে। স্কুল জীবন থেকেই তার হার্ডওয়্যারের প্রতি বিশেষ ঝোঁক ছিল। একটি পুরনো হার্ডডিস্ক ড্রাইভ থেকে পারিবারিক কিছু উপাত্ত হারিয়ে যাওয়ার পর ডাটা রিকভারির বিষয়টি তাকে আকৃষ্ট করে। ইন্টারনেট থেকে সংশ্লিষ্ট লেখা পড়তে পড়তে তিনি এক পর্যায়ে ডাটা রিকভারি বিশেষজ্ঞদের একটি বৈশ্বিক অনলাইন প্লাটফরমের সন্ধান পান, যা তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে বলে মনে করেন মাহবুব। প্রতি মুহুর্তে বিশ্বজুড়ে জটিলতম ডাটা রিকভারি কেসগুলোর বিশ্লেষণ, বিশেষজ্ঞ মতামত, কার্যকর সমাধান ও ভুলত্রুটি সম্পর্কে জানার পাশাপাশি নিজের অভিজ্ঞতাও ভাগাভাগি করেছেন সেখানে। বিভিন্ন জটিল কেস নিয়ে মাহবুব হোসেনের বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয় বিশ্বের একাধিক ডাটা রিকভারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ও প্রকাশনায়। গত ছয় সাত বছরে তিনি বেশ কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সাথে সহযোগিতা-অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করেছেন। মধ্যপ্রাচ্য, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশ থেকে আউটসোর্সিংয়ে কাজ এসেছে তার কাছে। দেশেও ব্যক্তি পর্যায়ের গ্রাহক থেকে শুরু করে ছোট-বড় অনেক প্রতিষ্ঠানকে সেবা দিয়েছে তার প্রতিষ্ঠান ডাটা রিকভারি স্টেশন (ডিআরএস)। মাহবুবের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সবকিছুই ঘটে গেছে অনেকটা নীরবে। তার আক্ষেপ, বাংলাদেশে বিষয়টির গুরুত্ব এখনো যথেষ্ট উপলব্ধি করা হচ্ছে না। অথচ সাম্প্রতিক বছর গুলোয় উপাত্ত হারিয়ে যাওয়া বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মতো সমস্যা অনেক বেড়ে গেছে, বিশেষ করে বহনযোগ্য হার্ডডিস্ক ড্রাইভে। মেমোরি ডিভাইস ও ডাটার সুরক্ষা সম্পর্কে ব্যবহারকারী, এমনকি সংখ্যাগরিষ্ঠ টেকনিশিয়ানের মধ্যে সচেনতার অভাবই এর কারণ বলে মনে করেন তিনি। মাহবুব বলেন, ‘নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে, এমনকি তথ্য-প্রযুক্তি শিল্প সংশ্লিষ্টদের কাছেও উপেক্ষিত থেকেছে ডাটা রিকভারির মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবাটি। অথচ দেশের অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকেই গুরুত্বপূর্ণ উপাত্ত পুনরুদ্ধারে বিদেশে যেতে হয়। ব্যয় হয় দশগুণেরও বেশি অর্থ, অপচয় হয় কষ্টার্জিত বৈদেশিক মূদ্রা।’ সীমিত সামর্থে বিদেশ থেকে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এনে নিজ প্রচেষ্টাতেই ঢাকায় একটি ছোট ল্যাব গড়ে তুলছেন মাহবুব। ২০১৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তার প্রতিষ্ঠান দেশেই প্রায় ৬২ শতাংশ সমস্যা সমাধানের সক্ষমতা অর্জন করে। এ হার শতভাগে উন্নীত করার লক্ষ্যে ডিআরএস ২০১৪ সালের শেষের দিকে হার্ডডিস্ক ড্রাইভের মাইক্রো-সার্জারির কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শেষে এর বাণিজ্যিক সাফল্য সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী তার প্রতিষ্ঠান। একাধিক বিদেশি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এক্ষেত্রে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে বলে জানা গেছে। ব্যবসায়ে প্রশাসনে স্নাতক/গধংঃবৎ’ং মাহবুব একটি বেসরকারি বিমান সংস্থায় তার কর্মজীবন শুরু করেন, তার লক্ষ্য বাংলাদেশে স্বল্প খরচে ডাটা রিকভারির শতভাগ সেবা নিশ্চিত করা। দেশে একটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটও প্রতিষ্ঠা করতে চান তিনি। মাহবুব হোসেন শাহী দৈনিক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুল হোসেন এবং নির্বাহী সম্পাদক দেওয়ান ফয়জুন নাহারের জ্যেষ্ঠ পুত্র






Shares