মহানবীকে ‘কটূক্তি’: প্রতিবাদী কর্মসূচি দিয়ে হামলার শিকার তাহেরী
ভারতে মহানবী (সা.)কে কটূক্তির প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধনের ডাক দিয়েও ‘নিরাপত্তা হুমকির’ কথা জেনে তা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছেন আলোচিত ইসলামী বক্তা গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরী। পরে ডিসির সঙ্গে আলোচনা করতে যাওয়ার সময় মাদ্রাসা ছাত্ররা তার গাড়িতে হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
ফেইসবুকে ভিডিও বার্তায় হামলাকারীদের ‘উগ্রবাদী’ আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে তাহেরী বলেছেন, নইলে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত সারা দেশে কঠোর কর্মসূচি দেবে।
সোমবার বিকালে জেলা শহরের টি এ রোড এলাকায় হামলার শিকার হন তিনি।
তাহেরী জানান, বিকাল ৫টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনটির আয়োজন করা হয়েছিল। তবে রোববার প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানার ওসি ও পরে জেলার এসপি নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকার কথা বলেন।
এসপি বিষয়টি নিয়ে ডিসির সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। এ কারণে রোববার রাতেই কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
বিকালে তিনি কয়েকজনকে নিয়ে তাহেরী ডিসির কাছে যাচ্ছিলেন সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে। গাড়িটি কাউতলী যাওয়ার পথে টি এ রোড এলাকায় সেতু অতিক্রম করতেই একদল মাদ্রাসার ছাত্র আক্রমণ করে বলে ভাষ্য তার।
তাহেরী বলেন, “ব্রিজটা পার হওয়ার পর আমি দেখলাম কতিপয় মাদ্রাসার ছাত্র, অর্থাৎ জামিয়া ইউনুসিয়া বরাবর… সেখানে কিছু ছাত্র দৌড়ে আমার গাড়িটাতে আক্রমণ করে।
“তারা কোনো কথাই শুনতে প্রস্তুত না, তারা গাড়ির সামনের গ্লাসগুলো ভাঙচুর করে এবং আমাকে হামলা করার জন্য খুব জোর চেষ্টা করে।…আল্লাহর রহমতে আমি সেখান থেকে চলে আসতে পেরেছি।”
হামলাকারীরা ‘উগ্রবাদী’ মন্তব্য করে এই ধর্মীয় বক্তা বলেন, “আল্লাহর হাবির (স.) এর শানে (সম্মানে) ভারতে কটূক্তি করা হয়েছে। সারা বাংলাদেশে প্রতিবাদ করা হবে, কীসের কওমি, কীসের হেফাজত, কীসের জামায়াত, কীসের সুন্নি?
“গত রাতেই আমি কওমিদের পক্ষ থেকে ফেইসবুক পোস্টে দেখেছি, আমরা যেখানে প্রোগ্রাম করব, সেখানেই তারা বাধা প্রধান করবে। পাশাপাশি আমাকে ঢুকতে দেবে না। আমি দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, আল্লাহর রসুলের শানে যারা কটূক্তি করেছে, তার প্রতিবাদ কি বেদাত?”
“যারা আমার মানববন্ধনটা বন্ধ করার জন্য প্রশাসনকে বিভিন্ন ভাবে থ্রট দিয়েছে, তারা কোন ইসলামটাকে লালন করে?…আমার গাড়িতে অ্যাটাক করে তারা কি ভারতের সেই উগ্রবাদী কটূক্তিকারীর পক্ষাবলম্বন করেছেন? ভারতের নবী বিদ্বেষীদের দালাল কি বাংলাদেশেও আছে?”
তিনি বলেন, “যে শহরে আল্লাহর হাবীব (স.) এর পক্ষে কটূক্তিকারীদের বিরুদ্ধে স্বাধীনভাবে কথা বলা যায় না, আমি নিঃসন্দেহে বলতে পারি, সেই শহরের উগ্রবাদীদের জন্য আমার হাজারবার ঘৃণা।”
ঘটনাস্থলের ডানে-বামে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে জানিয়ে তাহেরী বলেন, “কারা আমার গাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে এবং আল্লাহর হাবীব (স.) এর পক্ষে কটূক্তিকারীদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কারা বন্ধ করেছে, প্রশাসনকে কারা থ্রেট করেছে, প্রশাসন তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনুন।”
হেফাজত, কওমি ও বিভিন্ন ঘরানার আলেমদের তিনি বলেন, “আপনাদের সঙ্গে আমাদের আকিদার দ্বন্দ্ব আছে, এটা থাকবে। কিন্তু আপনারা যদি এই ধরনের প্রোগ্রাম বানচাল করেন, তাহলে কোন ইসলামকে আপনারা মানেন?…দেশবাসীর কাছে আমার জিজ্ঞাসা, তারা কোন ইসলামটা লালন করেন?”
এই ঘটনায় জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, “গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরীর পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। তিনি ফোনের মাধ্যমে হামলার বিষয়টি জানিয়েছেন।”