ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় নার্সের বাবার মৃত্যুর অভিযোগ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল যা সদর হাসপাতাল নামেই বেশি পরিচিত। জেলা তো বটেই যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় আশপাশের জেলা থেকেও রোগী আসেন এখানে। কিন্তু বরাবরই রোগী ও স্বজনের নানা অভিযোগ জরুরী বিভাগ নিয়ে। অবস্থা একটু বেগতিক দেখলেই স্যালাইন লাগিয়ে রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এছাড়া জরুরী বিভাগের রোগীদের আশপাশের ক্লিনিকে পাঠানো, রাতের বেলা নার্সদের দ্বায়িত্ব দিয়ে ঘুমিয়ে থাকার অভিযোগও রয়েছে জরুরী বিভাগের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। এবার সে অভিযোগের আগুনে যেন ঘি ঢালল এক নার্সের বাবার মৃত্যুতে চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে এক স্টাফ নার্সের বাবার মৃত্যুর পর অবহেলার অভিযোগ এনে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে বিক্ষোভ করেছেন নার্সরা। ফলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আধা ঘণ্টা সেবা প্রদান বন্ধ থাকে।
সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, স্টাফ নার্স রাজিব মিয়ার বাবা বুলবুল মিয়া (৫০) হৃদরোগ জনিত কারনে অসুস্থ হয়ে পড়লে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। কিন্তু ২০ মিনিট পর্যন্ত রাজীবের বাবাকে দেখতে আসেননি চিকিৎসক শফিউল্লাহ আরাফাত- এমন অভিযোগ পরিবারের। পরবর্তীতে অসুস্থ বুলবুলকে কোন চিকিৎসা না দিয়ে মৌখিকভাবে শহরের আল খলিল হাসপাতালের ডাঃ মনিরের কাছে নিতে বলেন চিকিৎসক আরাফাত। পরে সেখানে নেওয়ার পর বুলবুলের মৃত্যু হয়।
সহকর্মীর বাবার মৃত্যুর ঘটনার জেরে রাত ৮টার দিকে সদর হাসপাতালের নার্সরা চিকিৎসক আরাফাতকে অবরুদ্ধ করে জরুরি বিভাগের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। যার কারণে জরুরি বিভাগে আধা ঘণ্টা চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়। ঘটনার খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চিকিৎসক শফিউল্লাহ আরাফাত বলেন, বিভাগে আনার সঙ্গে সঙ্গেই আমি দেখতে গিয়েছি। এরপর আমি রোগীর ইসিজি করার জন্য বলি। তারপর তারা কী করেছে আমি জানি না। পরে শুনেছি রোগী মারা গেছে। আমার কোনো অবহেলা ছিল না।’
জেলা সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক মো. শওকত হোসেন বলেন, “চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যু হয়েছে কি না, সেটি তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তে চিকিৎসকের অবহেলা প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’