ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে শিশুদের পরিচর্যা ও বাল্যবিবাহ বন্ধে কর্মশালা
আন্তর্জাতিক বেসরকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ড কনসার্ন (বাংলাদেশ) ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর এনসিওর প্রোট্রেকশন এন্ড জাস্টিট থ্রু ইনট্রিগ্রেটেড এ্যাপ্রোচ (ইপজিয়া) প্রকল্পটির মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে শিশুদের পরিচর্যা ও বাল্যবিবাহ বন্ধে কর্মশালার আয়োজন করা হয়। উক্ত কর্মশালাটি সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ হল রুমে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন উপজেলা যুব-উন্নয়ন কর্মকর্তা জনাব মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন সুহিলপুর ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুর রসিদ ভুইয়া, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এর সভাপতি জাহাঙ্গীর কবীর খান দুলাল, কমিউনিটি প্রোট্রেকশন কমিটির সহ-সভাপতি মোজাম্মেল হক, এনজিও প্রতিনিধি এস এম শাহিন ও আই.ডি.পি এস এর প্রোগ্রাম অফিসার ফ্লোরেন্স নীপা অধিকারী।
এসময় প্রধান অতিথি তার বক্তবে বলেন শিশুদের নিরাপত্তা দিকে আমাদের বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে,যাতে করে কোন শিশু সার্বিক সুরক্ষা,বিকাশ,অংশগ্রহন থেকে বঞ্চিত না হয়। আমরা যারা রয়েছি আমাদের বড় একটি দায়িত্ব হলো শিশুদের সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। আমরা সব সময় বাল্য-বিবাহের বিরুদ্ধে। শিশু বিবাহ বা বাল্য-বিবাহ যাতে করে কোন জায়গায় না হতে পারে সেদিকে সচেতন থাকবো। সঠিক ভাবে সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করলে এই সমস্যা গুলো সমাজ থেকে অবশ্যই দূর হবে।
সুহিলপুর ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুর রসিদ ভুইয়া বলেন-আমাদের বাল্য-বিবাহ রুখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি এ সময় ওয়ার্ল্ড কনসার্ন বাংলাদেশকে ধন্যবাদ দেন যে, তারা বাল্য-বিবাহ বন্ধে নানা কর্মসুচি বাস্তবায়ন করছে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এর সভাপতি জাহাঙ্গীর কবীর খান দুলাল বলেন ইউনিয়ন পর্যায়ে আমাদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে শিশুদের পরিচর্যা ও বাল্যবিবাহ বন্ধে কাজ করার জন্য। আমাদের ইউপি সদস্য,শিক্ষক, ধর্মীয় নেতা বা স্থানীয় নেতা কর্মীদের মাধ্যমে প্রতিটি জায়গায় শিশুদের পরিচর্যা ও বাল্যবিবাহ বন্ধে সচেতনতা মুলক সভার আয়োজন করতে হবে। বাল্য-বিবাহ দেওয়া আমাদের জন্য খুবই অন্যায় একটি বিষয় তাই আমাদের সবার এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন আমরা শিশুদের পরিচর্যা ও বাল্যবিবাহ বন্ধের বিষয়ে সবাই সচেতন থাকবো এবং অন্যদেরকে ও এ বিষয়ে সচেতন করব।
এনজিও প্রতিনিধি এস এম শাহিন বলেন- শিশুদের প্রতি আমাদের সচেতন হতে হবে। মায়েদের উদ্দ্যেশ করে বলেন আপনাদের আরো বেশি সচেতন থাকতে হবে। বাল্য-বিবাহের বিষয়ে বলেন এটি একটি আমাদের সমাজের বড় সমস্যা। আমাদের সবার এই বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি আরো বলেন বাল্য-বিবাহের ক্ষতিকর দিক গুলো সবার কাছে তুলে ধরতে হবে। আই.ডি.পি এস এর প্রোগ্রাম অফিসার ফ্লোরেন্স নীপা অধিকারী বলেন-আমরা আমাদের ছেলে -মেয়েদের বাল্য-বিবাহ কেনো দেই,কি কারনে দেই তা খুজে বের করে সমাধান করতে হবে। আমার আমাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া প্রতি বিশেষ যতœবান হয়ে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে, সেই সাথে বৈষম্য দুর করে ছেলে-মেয়েদের সমান ভাবে দেখতে হবে। মেয়েদেরকে কোনভাবেই ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেওয়া যাবে না। বাল্য-বিবাহের কূফল সকলের কাছে তুলে ধরতে হবে। শিশুদের পরিচর্যা ও বাল্যবিবাহ বন্ধের কর্মশালার সঞ্চালনা করেন ইপজিয়া প্রোগ্রাম অফিসার প্রবাল সাহা (অর্ক)। তিনি উপস্থিত সকলকে উদ্দেশ্য করে বলেন শিশু সুরক্ষা ও বাল্য-বিবাহের প্রতিরোধের বিষয়ে আমাদের সবার এক সাথে কাজ করতে হবে। শিশুদের যত্ন বা সুরক্ষার জন্য বিশেষ ভাবে পিতা-মাতাদের সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় মাসিক মিটিং এর ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন বাল্য-বিবাহ ভয়ানক একটি বিষয়। আমাদের বাল্য-বিবাহ প্রতিরোধ নিয়ে নানা কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে, সমাজের সকল স্তরের মানুষের কাছে বাল্য-বিবাহের কূফল বা ভয়াবহতা তুলে ধরতে হবে। তাহলে কিছুটা হলেও সমাজ থেকে বাল্য-বিবাহ দেওয়ার হার কমে আসবে। উপস্থিত সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন আমরা সকলে নিজে সচেতন থাকবো ও অন্যদেরকে বাল্যবিবাহ বন্ধে সজাগ থাকতে সহযোগিতা করবো। প্রেস বিজ্ঞপ্তি