Main Menu

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক দুই মন্ত্রী সহ ১০৬ জনের নামে নাশকতার মামলা

+100%-

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সংঘর্ষের ঘটনায় সাবেক গৃহায়ণ ও গনপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকসহ ১০৬ জনের নামে নাশকতার মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ৪০ থেকে ৫০জনকে আসামী করা হয়।

গত সোমবার রাতে জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক ইব্রাহিম আহমেদ ওরফে শাহীন বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলার বাদী ইব্রাহিম আহমেদ ওরফে শাহীন শহরের কান্দিপাড়ার বাসিন্দা।

সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর ও বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪-(কসবা-আখাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

মামলার উল্লেখ্যযোগ্য আসামীরা হলেন, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সহধর্মীনি, মাউশির সাবেক মহাপরিচালক ও ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রেজারার প্রফেসর ফাহিমা খাতুন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬- (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ.বি তাজুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫-(নবীনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(আশুগঞ্জ-সরাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাইন উদ্দিন মঈন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ এ.কে একরামুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হেলাল উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর সভার সাবেক মেয়র মিসেস নায়ার কবির, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন, জেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডিউক চৌধুরী, সদস্য ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি হাসান সারোয়ার, জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ.এইচ মাহবুব আলম, কসবা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুস্তম খা প্রমুখ।

মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, গত জুলাই আগষ্ট মাসে চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সকল স্তরের সমন্বয়কগনসহ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে সরকার বিরোধী আন্দালনে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেন ছাত্রদল নেতা।

গত ৪ আগস্ট গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুলের সামনে ছাত্রদলের আহবায়কের নেতৃত্বে সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। সে সময় সাবেক গণপূর্ত মন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একরামুজ্জামানের নির্দেশে মামলার আসামীরাসহ অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জন আসামী তাদেরকে প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে দা, লাঠি, লোহার রড, কিরিজ, পিস্তল, বল্লম, পেট্রোল, কেরোসিন, ককটেল, হাতবোমা নিয়ে বৈষম্যবিররোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে চর্তুদিকে ঘেরাও করে। মোকতাদিরের নির্দেশে আসামীরা আন্দোলনরত কয়েকজন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীদের চুলের মুষ্ঠি ধরে লোহার রড, বাঁশের লাঠি দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। তারা মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ করে ঘটনাস্থলে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে। ককটেলের স্প্রীন্টারের আঘাতে ছাত্রদলের আহবায়কসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। আসামীরা ঘটনাস্থলে থাকা পাঁচটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলে। এদিকে সেদিক পালানোর চেষ্টা করলে তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাটিতে ফেলে এলোপাথারি কিল, ঘুষি, লাথি সহ বুকের উপর উঠে আঘাত করে। আসামীরা হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে গুলিও করে। গুলির আঘাতে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীসহ পথচারী অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন।

এ ব্যাপাওে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ছাত্রদলের আহবায়ক বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলায় দুইজন মন্ত্রী, একাধিক সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ১০৬জনকে আসামী করা হয়।সূত্র: যায়যায়দিন