Main Menu

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের প্রতিদান পেলেন মোকতাদির, হচ্ছেন মন্ত্রী

+100%-

ছিলেন তুখোড় ছাত্রনেতা। সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল মুক্তিযুদ্ধে। করেছেন সরকারি চাকরি। অবসর নিয়ে আবার রাজনীতিতে।

হয়েছেন চারবারের সংসদ সদস্য।

বর্ণাঢ্য সেই রাজনৈতিক জীবনেরই যেন প্রতিদান পেলেন র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের এই সংসদ সদস্যকে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছে। এ অবস্থায় প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের কোনো সংসদ সদস্য।

জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসন থেকে টানা চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে আলোচনা চলছিল। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩(সদর-বিজয়নগর) আসনে (নৌকা প্রতীক) ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭২ ভোট পেয়ে চতুর্থবারের মতো বিজয়ী হন।

র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ১৯৫৫ সালের ১ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চিনাইর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মো. আবদুর রউফ চৌধুরী।

মোকতাদির চৌধুরী ঢাকা মাদরাসা-ই-আলীয়া থেকে ফাজিল পাস করার পর ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রথম সাধারণ সম্পাদক। তিনি ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭১ সালের মুজিব বাহিনীর অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করলে পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে তার একটি পা আঘাতপ্রাপ্ত হয়। ১৯৭৩-৭৪ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের গ্রন্থনাও প্রকাশনা সম্পাদক এবং ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠন হলে ২১ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত হন। ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হলে তিনি দেশব্যাপী গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলন ও প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অবদান রাখেন।

১৯৭৫ সালের ২০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিলের নেতৃত্বদান ও ৪ নভেম্বর ঢাকার রাজপথে প্রথম প্রতিবাদ মিছিলের অন্যতম সংগঠক হিসেবে ভূমিকা রাখেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৬ সালের অক্টোবরে গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় দুই বছর কারাবরণ করেন এবং ১৯৭৮ সালের সেপ্টেম্বরে মাসে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মুক্তি পান। ১৯৮৩ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন এবং ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালের একতরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের অফিসারদের নিয়ে গঠিত জনতার মঞ্চের অন্যতম সংগঠক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেন। ২০১০ সালের ২২ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট লুৎফুল হাই সাচ্চু মৃত্যুবরণ করলে এই আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তিনি প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বার, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

মোকতাদির চৌধুরী এমপি নবম জাতীয় সংসদে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, দশম জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং একাদশ জাতীয় সংসদে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।সর্বশেষ গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বিশাল ভোটের ব্যবধানে টানা চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।সূত্র: কালের কন্ঠ






Shares