Main Menu

প্রথম আলো বন্ধুসভার সহমর্মিতার ঈদ পোশাক পেল ৭৩জন

+100%-

মায়ের সঙ্গে এসেছেন আট বছর বয়সী শিশু নিম্মি বেগম ও ১১ বছর বয়সী মোসাম্মদ সানু।মা অন্যের বাসাবাড়িতে কাজ করেন। নতুন জামা পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই দুই শিশু পড়িয়ে দেখেন ঠিকঠাক আছে কি না। পোশাক পছন্দ হওয়ায় দুই শিশুর মুখে মুহুর্তেই ফুটে উঠল রাজ্যের হাসি।তারা নতুন পোশাক ঈদের দিন পরবে বলে জানাল।

এভাবে রোববার বিকেল চারটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বন্ধুসভার ‘সহমর্মিতার ঈদ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সুবিধাবঞ্চিত শিশু, নারী ও পুরুষের মাঝে নতুন কাপড় বিতরণ করা হয়। বন্ধুসভার ‘সহমর্মিতার ঈদ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশ ও দেশের বাইরের ১১৪টি বন্ধুসভা দেশব্যাপী ঈদের উপহারসামগ্রী বিতরণ করছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভার উদ্যোগে বিভিন্ন বয়সের ৭৩জন সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে নতুন জামা-কাপড় বিতরণ করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে সহমর্মিতার ঈদ কর্মসূচীর নতুন পোশাক বিতরণ করা হয়।
নিম্মি ও মোসাম্মদ সানুর সঙ্গে আরেক শিশু তাদের আড়াই বছর বয়সী বোন তন্নিও এসেছিল।পরে বন্ধুসভার সদস্যরা তাৎক্ষণিক মার্কেটে গিয়ে ওই শিশুর জন্য নতুন কাপড় কিনে দেন।
কাজীপাড়ার বাসিন্দা সুমন মিয়া। সঙ্গে ছেলে আল আমিনকে নিয়ে আসেন। বাবা ও ছেলে উভয়ই ঈদের নতুন কাপড় পেয়েছে। কাপড় পেয়ে তারা বাবা-ছেলে ভীষণ খুশি। তারা বলেন, কাপড়গুলো সুন্দর হয়েছে। ঈদের দিন এই পোশাক পড়।

রিকশা চালক প্রতিবন্ধী হেলাল মিয়া বলেন, ভাড়ায় রিকশা চালিয়ে কোনো রকমে দিনযাপন করছি। সামান্য আয় থেকে স্বল্প খরচে ছেলেমেয়েদের কাপড় কিনে দিয়েছি। নিজের জন্য কেনার টাকা হাতে নেই। পুরনো কাপড় পরেই ঈদ করব ভেবে ছিলাম। কিন্তু এখন নতুন কাপড় পেয়েছি। আমিও ঈদের নতুন কাপড় পড়ব।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে চতুর্থশ্রেণির কাজ করতেন রাজ্জাক মিয়া। বয়স বেশি হওয়ায় চাকুরিও শেষ হয়ে গেছে। রাজ্জাক মিয়া বলেন, গরবীদের খবর কেউ রাখে না। ঈদে নতুন কাপড় পড়তে পারব ভাবিনি। বন্ধুসভার সহমর্মিতায় নতুন কাপড় পেলাম। তাদের ধন্যবাদ।
আমেনা বেগম অন্যের বাড়িবাড়ি কাজ করেন। তিনি বলেন, নয় বছর বয়সী মেয়ে শিশু নতুন জামা এবং আমি নতুন শাড়ি পেয়েছি। কাপড়গুলো রুচিসম্মত। পছন্দ হয়েছে। এই নতুন কাপড়ে এবার ঈদ কাটবে।

বন্ধুসবার ‘সহমর্মিতার ঈদ’ কর্মসূচির এই নতুন কাপড় বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শাহাদৎ হোসেন, স্থানীয় আতিকুর রহমান, বন্ধুসভার সভাপতি শাহাজাহান মিয়া, সহসভাপতি মাইনুদ্দিন রুবেল ও অন্যন্যা সাহা, সাধারণ সম্পাদক সাদ হােসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান ও করবী চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ মোল্লা, দপ্তর সম্পাদক শারমিন হক, প্রচার সম্পাদক আরেফিন শোভন, পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক ফৌজিয়া হক, পরিবেশ ও সমাজকল্যান সম্পাদক তানজিলা রহমান, মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক সালমা আক্তর, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক মাজাহারুল করিম, বন্ধুসভার সদস্য নাজরিন আক্তার ও প্রিয়াংকা আক্তার, বন্ধুসভার সাবেক সদস্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শেখ তানিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বন্ধুসভা সভাপতি শাহাজাহান মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক সাদ হোসেন বলেন, ‘এটা সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য প্রথম আলো বন্ধুসভার ঈদ উপহার। সারা দেশে বন্ধুসভার বন্ধুরা নিজেদের খরচের একটা অংশ বাঁচিয়ে প্রতিবেশীর হক আদায় করছে। সুবিধাবঞ্চিতরা আমাদের প্রতিবেশী। তাই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এসেছি। আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৭৩জনের মাঝে নতুন কাপড় বিতরণ করেছি।’