পৌর কলেজের ভাইস প্রিন্সিপালসহ দুই শিক্ষকের নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মেড্ডায় অবস্থিত পৌর কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আসমা বানুসহ ২ শিক্ষকের নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপর শিক্ষক হলেন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের অস্থায়ী শিক্ষক মোঃ কাউসার মিয়া।
জানা গেছে, গত ২০১১ সালে পৌর কলেজে উপাধ্যক্ষ বা ভাইস প্রিন্সিপাল পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৯২, “জনবল কাঠামো সংশোধিত ২০১৯” অনুযায়ী এই পদের পরীক্ষা লিখিত ও মৌখিক হওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্ত অজ্ঞাত কারণে তৎকালীন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী প্রভাব খাটিয়ে শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে ভাইস প্রিন্সিপাল পদে আসমা বানুকে নিয়োগ প্রদান করে। পরীক্ষায় ৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন যাদের অনেকেরই সার্টিফিকেট নাম্বার বেশি থাকলেও আসমা বানুকে ভাইবা পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর দিয়ে প্রথম দেখানো হয়। ফলে তিনি উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পান। এছাড়া বিধি লঙ্ঘণ করে অধ্যক্ষের অনুমতিপত্র না নিয়ে আবেদন করেন এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বানুমতিপত্র ছাড়াই যোগদান করেন।
এদিকে, নিয়োগ পাওয়ার পরও তার বিরুদ্ধে শিক্ষকদের সাথে অশালীন ব্যবহার, হুমকি প্রদান এবং জামাত-বিএনপির রাজনীতি কলেজের নিষিদ্ধ করার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি আওয়ামীলীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন বলেও জানা গেছে।
অন্যদিকে, কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের অস্থায়ী শিক্ষক মোঃ কাউসার মিয়ার নিয়োগেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষাগত যোগ্যতা ২ শ্রেণির অনার্স-মাস্টার্স চাওয়া হলেও তিনি প্রকৃতপক্ষে বিশেষ বি.এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। যা নিয়োগের শর্তভঙ্গ করে। এ ছাড়া কলেজটিতে এ বিষয়ের কোন অনার্স কোর্স চালু না থাকলেও শুধুমাত্র দলীয় প্রভাব বৃদ্ধির জন্য তৎকালীন সভাপতির হস্তক্ষেপে তার নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলেও জানা যায়। তার আবেদন পত্রে তিনি পাসকোর্সের শূণ্যপদে আবদেন করলেও তাকে অনার্স কোর্সের বিষয় বহির্ভূত ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের সৃষ্ট পদে নিয়োগ দেখানো হয়। ২০২০ সালে করোনা মহামারী শুরু হলে আর্থিক সংকটে অপ্রয়োজনীয় শিক্ষকদের অব্যাহতি প্রদান করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তখন কাউসার মিয়াকেও অব্যাহতি দেয়া হয়। কিন্তু ৬-৭ মাস পর দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন সভাপতি মাহবুব আলমের হস্তক্ষেপে ফের নিয়োগ পান কাউসার মিয়া।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভাইস প্রিন্সিপাল আসমা বানু নিজেকে বিএনপি পরিবারের সন্তান দাবি করে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, আমি আওয়ামীলীগের আমলে নির্যাতিত ছিলাম। আমি প্রিন্সিপালের অনিয়ম নিয়ে কথা বলেছিলাম তাই তারা আমার বিরুদ্ধে তখন থেকেই লেগে আছে।
অপর শিক্ষক মোঃ কাউসার মিয়া বলেন, বর্তমান সভাপতি এ,বিএম মমিনুল হক তাকে এ বিষয়ে কোন কথা না বলতে বলেছেন।
এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ হরিলাল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, প্রতিটি নিয়োগেই একটি করে নিয়োগ কমিটি ছিল। তাদের সিদ্ধান্তেই নিয়োগ হয়েছে। আমার নিয়োগের আগেই তাদের নিয়োগ হয়েছে।
এ ব্যপারে কলেজটির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এ,বিএম মমিনুল হক বলেন, আমি কিছুদিন হল সভাপতির দ্বায়িত্ব নিয়েছি। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখব। এর আগেও এ বিষয়ে অডিট হয়েছে বলে শুনেছি। অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক কাউসার মিয়াকে বক্তব্য দিতে না করেছেন কিনা? এমন প্রশ্নে তিনি তা সত্য নয় বলে জানান।































