দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকের ভূমিকা তদন্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের কমিটি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ‘নাপা সিরাপ খেয়ে’ দুই ভাইয়ের মৃত্যুর অভিযোগের ঘটনা তদন্তে আরো একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুই শিশু মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকের কোন গাফিলতি ছিল কিনা? বা তারা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেয়েছিল কিনা? তা তদন্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের পক্ষ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শনিবার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক আক্তার হোসেনকে প্রধান করে এ কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, আবাসিক চিকিৎসক ডা. রানা নূর শাসম (সদস্য সচিব) এবং মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক মাজহারুল ইসলাম ।
কমিটি আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে বলে জানিয়েছেন তত্বাবধায়ক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান ।
এদিকে, এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুপুর সাহাকে প্রধান করে তিন সদস্যের পৃথক আরেকটি পরিদর্শন কমিটি করা হয়েছে। কমিটি গতকালই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগকারীদের বক্তব্য শুনেন।
এছাড়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মহিউদ্দিনকে প্রধান করে করা তিন সদস্যের কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাতে আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে ‘নাপা সিরাপ খেয়ে’ ইয়াছিন খান (০৭) ও মোরসালিন খান (০৫) নামে দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ তোলেন স্বজনরা। মৃতরা দুর্গাপুর গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক সুজন খানের ছেলে।
ওই দুই শিশুর মা লিমা বেগম সাংবাদিকদের জানান, ইয়াছিন ও মোরসালিনের জ্বর ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ির পাশে মা ফার্মেসি থেকে নাপা সিরাপ এনে তাদের খাওয়ানো হয়। সিরাপ খাওয়ার পরই দুইজন বমি করতে থাকে। অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে তাদের আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং এরপর জেলা সদর হাসাপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে নেওয়ার পথে রাত ৯টার দিকে ইয়াছিন এবং বাড়িতে আনার পর রাত সাড়ে ১০টায় মোরসালিনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর গতকাল রাত থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সকল ফার্মেসিতে সাময়িক সময়ের জন্য নাপা সিরাপ বিক্রি বন্ধ ঘোষণা করে জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি।