Main Menu

ঝুলে আছে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফোর লেন মহাসড়ক প্ৰকল্প

+100%-

কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধরখার পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার ফোর লেন জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের কাজ প্রায় আড়াই বছর ধরে ঝুলে আছে । এ সময়ে সড়কের দুই পাশের গাছকাটা ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। কাজ বন্ধ থাকায় সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টের কয়েক কিলোমিটার চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে দেখা দিয়েছে দুর্ভোগ। মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে হাজারো যানবাহন, ঘটছে দুর্ঘটনা। অধিকাংশ সময় দীর্ঘ যানজটে নাকাল হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ ।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ এবং প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর একনেক সভায় কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধরখার পর্যন্ত ফোর লেন মহাসড়ক প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। আন্তঃআঞ্চলিক যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহনে এ সড়ক গুরুত্বপূর্ণ। দেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী ভারত, ভুটান, নেপাল এবং পূর্ব প্রান্তে মিয়ানমার ও চীনের কুনমিং শহরের সঙ্গে বাংলাদেশের সড়কপথ পণ্য ও যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে বিবেচিত। কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কটি এ রুটের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মহাসড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর ও আখাউড়া স্থলবন্দরের লিংক রোডের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের যোগাযোগব্যবস্থা ও মালামাল পরিবহনে আরো সুফল মিলবে।

সূত্র জানায়, এ মহাসড়কের অনুমোদিত প্রকল্পব্যয় ৭ হাজার ১৮৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা । এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া ৪ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা। অন্যদিকে ভারত সরকারের ২ হাজার ৮১০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ঋণ সহায়তা দেওয়ার কথা। প্রকল্পের অনুমোদিত মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৬ সালের ৩০ জুন। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও সড়কে গাছকাটা ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। এরই মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকারের পটপরিবর্তনের পর এ প্রকল্পের ভারতীয় ঠিকাদারিপ্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী গত ১০ আগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেলে প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে এ সড়কপথের বিভিন্ন বিভিন্নস্থানে প্রায় ৪ কিলোমিটার অংশ খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

এতে হাজারো যানবাহন ও যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সওজের একাধিক সূত্র জানায়, এই প্রকল্পের কাজ দেরিতে হলেও বন্ধ হবে না । এতে আড়াই বছর ধরে ঝুলে থাকা এ প্রকল্পটিও আশা জাগাচ্ছে।

সড়কটি পরিদর্শনে এসে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারতীয় পক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে । বলা হয়েছে, ‘তোমরা আসো, কাজ করো—আমাদের অসুবিধা হচ্ছে। যত দ্রুততার সঙ্গে সম্ভব কাজ করো।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার নজরে রয়েছে। জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে সড়কটি দেখার জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আমাকে পাঠিয়েছেন। এই জনদুর্ভোগ লাঘবে সড়কটি মেরামত করার অনুমোদন দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস।’

ফোর লেন প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার আশীষ মুখার্জী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারত সরকার থেকে ঋণ সহায়তা পাওয়ার বিষয়ে আমরা অপেক্ষায় আছি। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভারতে পাঠিয়েছি। বিষয়টি দুই দেশের সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিষয়। তবে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলমান রয়েছে। এ বছরের শেষ দিকে হয়তো আমাদের অর্থ ছাড় দেওয়া হতে পারে। প্রকল্পটি শেষ করতে সরকার আন্তরিক।’

সওজ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা জানান, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ঋণচুক্তির আওতায় এই মহাসড়ক চার লেন করা হবে। প্রকল্পের কাজ শেষ করা গেলে দেশের পূর্ব-দক্ষিণ অংশের সঙ্গে উত্তর- পূর্ব অংশের যোগাযোগ সহজ হবে ।সূত্র: ইত্তেফাক






Shares