আপনাদের দোয়া ও সহযোগীতা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরটিকে স্বপ্নের নগরী হিসেবে সাজাতে চাই:: সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে নায়ার কবীর
আসন্ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা নির্বাচনের মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোয়ন প্রত্যাশী ও বিশিষ্ট নারী নেত্রী নায়ার কবীর গতকাল সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার সালাম ও শুভেচ্ছা নিবেন। আমি আসন্ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার নির্বাচনকে সামনে রেখে পরিচ্ছন্ন, যানজটমুক্ত সুপরিকল্পিত, শিশুর বাসযোগ্য পরিবেশবান্ধব একটি অত্যাধুনিক পৌরসভা গঠনে আমার লক্ষ্যগুলো আপনাদের মাধ্যমে পৌরবাসীর মাঝে তুলে ধরতে চাই। সাংবাদিক পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংবাদিক ভাইদের সাথে আমাদের সম্পর্ক খুবই নিবিড়।
আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্টের কাল রাত্রিতে নিহত হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ পরিবারের সকল বীর শহীদদের। আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ১৯৭১ সালে নিহত ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা বোনদের যাদের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত মহান স্বাধীনতা। আরও স্মরণ করছি এ পর্যন্ত বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত বীর শহীদদের। আমি আরও গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের প্রয়াত সকল নেতৃবৃন্দকে।
আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগ ও আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি যিনি জাতিসর্ংঘ কর্তক ‘চ্যাম্পিয়নস অব দি আর্থ’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সংগ্রামী সভানেত্রী, গণতন্ত্রের মানসকন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে আগামী দিনে আওয়ামীলীগের একজন সারথী হিসেবে দলের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে চাই। গভীর কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য, জেলা আওয়ামীলীগের সংগ্রামী সভাপতি, আধুনিক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রূপকার, আমাদের অভিভাবক, যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা, জননেতা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপিকে। শ্রদ্ধেয় নেতা ইতিমধ্যেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগকে ঐক্যের মোহনায় বেঁধে দিয়েছেন যা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজনীতির ইতিহাসে এক নব দিগন্ত। কৃতজ্ঞতা জানাই সাবেক পৌর চেয়ারম্যান, নির্লোভ রাজনীতিবিদ, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা আল মামুন সরকারকে।
আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করিয়াছি। বর্তমানে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের বেসরকারি কারা পরিদর্শক, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে কাজ করছি। এ সকল কর্মকা-ে দলীয় নেতা কর্মী, সাংবাদিক ভাইদের ও সাধারণ জনগণের যে ভালোবাসা ও সহযোগিতা পেয়েছি তাতে আমি চিরঋণী হয়ে আছি। আপনারা জানেন গত পৌরসভা নির্বাচনে আমি মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছিলাম। দলের সিদ্ধান্ত, প্রিয়নেতা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও দলীয় প্রার্থীর প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছিলাম। সেই সাথে দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করার জন্য বিরামহীনভাবে কাজ করেছি। সময়ের ব্যবধানে আসন্ন পৌর নির্বাচনে আমিই দলীয় মনোনয়ের সবচেয়ে বড় দাবীদার। এ বিবেচনার ভার দল, দলীয় নেতৃবৃন্দ এবং পৌরবাসীর নিকট দিলাম। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি আপনাদের দোয়া ও সহযোগিতা থাকলে আওয়ামীলীগ আমার এ ত্যাগের যথাযথ মূল্যায়ন করবে।
তিতাস বিধৌত শিক্ষা সংস্কৃতিক পাদপীঠ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১৪৭ বছরের প্রাচীন এ পৌরসভার বিভিন্ন মেয়াদে ধারাবাহিকভাবে অনেকে প্রশাসক, চেয়ারম্যান ও মেয়র হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর ধারাবাহিকতায় আমার স্বামী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাসীর অতি আপনজন, সাবেক উপমন্ত্রী আলহাজ্ব এড. হুমায়ুন কবীর পরপর ২ মেয়াদে পৌরসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ছাত্র জীবনে তিতাস পাড়ের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের ভিপি ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহন করে দেশ মাতাকে স্বাধীন করেন। তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জাতীয় সংসদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন। শারীরিকভাবে অসুস্থতার কারণে তিনি গত সম্মেলনের মাধ্যমে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে পতিতালয় উচ্ছেদকরণ, সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত সমাধাকরণ ও শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর অনবদ্য অবদান অনস্বীকার্য যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাসী সকলেরই জানা। আমি তাঁর সহধর্মিনী হিসেবে তাঁর মনের মধ্যে লালিত স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে আপনাদেরকে সাথে নিয়ে বাকী জীবনটা কাজ করতে চাই। এর জন্য দলীয় নেতা কর্মী, পৌরবাসী ও সাংবাদিক ভাইদের দোয়া ও সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করি।
এ শহর আমার, এ শহর আপনার, এ শহর সকলের। আমি এ শহরটিকে স্বপ্নের নগরী হিসেবে সাজাতে চাই। সুপরিকল্পিতভাবে রাস্তাঘাট নির্মাণ, ড্রেনেজ সুবিধা, আবর্জনা পরিস্কার, প্রতিটি গলিতে বৈদ্যুতিক বাতি লাগানো, শিশুপার্ক নির্মাণ করে, যানজটমুক্ত একটি জনবান্ধব পৌরসভা হিসেবে এই শহরকে গড়তে চাই। সুর স¤্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত, অদ্বৈত মল্লবর্মন, ব্যারিস্টার এ রসুল আর তিতাস এর উর্বর পলি মাটির ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নিয়ে আমি ধন্য। আমার জীবনের শৈশব থেকে এই পর্যন্ত সবটুকু সময় কেটেছে এই শহরে। আমার ব্যক্তিগত জীবনে চাওয়া পাওয়ার কিছুই নেই। মানুষের ভালোবাসা ও সহযোগিতায় দীর্ঘপথ পরিক্রমায় আজ আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়ে অভিপ্রায় ব্যক্ত করছি- আমার স্বামী এড. হুমায়ুন কবীর এর কাছ থেকে যে রাজনৈতিক দীক্ষা পেয়েছি ও আমার দীর্ঘপথ চলায় অর্জিত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান জনপ্রিয় সফল সংসদ সদস্য, জননেতা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপির নেতৃত্বে পৌরবাসীর উন্নয়ন, সার্বিক কল্যাণ ও একটি অত্যাধুনিক পৌরসভা গঠনে বাকী জীবনটা কাটিয়ে দিতে চাই।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সাবেক উপমন্ত্রী আলহাজ অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবীর, জেলা যুবলীগ নেতা শফিকুর রহমান, শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান অপু, পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক আমজাদ হোসেন রনি, সাবেক মহিলা মেম্বার হাসনা বেগমসহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।প্রেস রিলিজ