Main Menu

থাইল্যান্ডের রাজা ভুমিবল, একজন পিতা, একজন শাসকের মৃত্যু

+100%-

thaikingডেস্ক ২৪:: থাইল্যান্ডবাসীর পিতা এবং তাদের হৃদয় বলে উল্লেখিত রাজা ভুমিবল আজ বিকেলে না ফেরার দেশে চলে গেলেন হাজারো লাখো দেশবাসীকে কাদিয়ে। সারা পৃথিবীর মধ্যে দীর্ঘতম রাজা বলে বিবেচিত ভুমিবল পরিনত বয়সেই মারা গেছেন। সন্তানহীন চাচার সিংহাসনের অধিকারী হয়েছিলেন মাত্র ১৮ বছর বয়সে। সত্তর বছর শাসনকালে দেশের বহু রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সময় ঐক্যের প্রতীক ছিলেন রাজা। তার প্রতি দেশের জনগনের ভালোবাসা নিখাদ এবং সন্দেহাতীত।

thai

রাজা ভুমিবল আদুলেয়াদজে

অনেকদিন ধরেই তিনি হাসপাতালে, অনেক দিন ধরেই তিনি তার প্রিয় প্রজাদের সামনে আসতে পারেন না। গত কয়েকদিন ধরে রাজকীয় প্রাসাদ সুত্র এবং হাসপাতাল সুত্র থেকে তার চরম অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়ে দেশের আনাচে কানাচে। হাজারো মানুষ রাজার প্রিয় রঙ হলুদ আর সুস্থতার রঙ গোলাপী জামা পড়ে শ্রিরাজ হাসপাতালের সামনে ক্রমাগত প্রার্থনা করে যাচ্ছিল।

thai1

হাসপাতালের সামনে কান্নারত থাই জনগন

থাইল্যান্ডে বেশিরভাগ জনগন জন্মেই এই রাজাকেই দেখেছেন। তার জন্য বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে অনেক অনেক আবেগীয় লেখা হয়েছে। তার থেকে বেছে একটা শেয়ার করলাম সবার সাথে যা পোষ্ট করা হয়েছিল রাজার মৃত্যুর খানিক আগে।

thai2

আকাশপানে চেয়ে ক্রন্দনরতা

“থাইল্যান্ডের বাইরে আমার বন্ধুরা।

তোমরা হয়তো অবাক হচ্ছো তোমাদের সব থাই বন্ধুর প্রোফাইল ছবিতে আমাদের রাজার ছবি দেখছো। ভাবছো কি হলো?
কারন হলো আমাদের প্রিয় রাজা যে ভালো নেই, আমরা সবাই তার সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছি।
তোমরা হয়তো আরো অবাক হচ্ছো কেন থাই জনগন তাদের রাজাকে এত ভালোবাসে?
আমাকে গর্বের সাথে বলতে দাও।
আমাদের রাজা ভুমিবল তার দীর্ঘ সত্তর বছরের রাজত্বকালে কখনো অন্য রাজার মত বিলাসী জীবন যাপন করেন নি। আমি যতদুর মনে করতে পারি তিনি দিন রাত জনগনের সেবায়, তাদের উন্নতির জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে গেছেন।
তিনি তার দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়েছেন তার প্রজাদের অবস্থা দেখতে। যেখানে আমরা যেতেও সাহস করি না। তার হাতে থাকতো মানচিত্র আর পেন্সিল। নির্মান করেছিলেন রাজার অধীনে হাজারের ও উপরে বিভিন্ন প্রজেক্ট, যেমন পানি, কৃষি, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ আরো অনেক কিছু যা আমরা কল্পনাও করতে পারি না।

thai3

কর্মঠ রাজা ভুমিবল

তার রাজপ্রাসাদ অন্য রাজাদের প্রাসাদের মত ছিল না। সেই প্রাসাদ ছিল তার নেয়া বিভিন্ন পরিকল্পনার গবেষণাগার যা পরবর্তীকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রয়োগ করা হয়েছিল সাফল্যের সাথে।
শুধু আমাদের দেশের রাজা বলেই যে আমরা তাকে ভালোবাসি তা নয়। তাকে ভালোবাসি কারন তিনি সারা জীবন সাধারন মানুষের সাথে সাধারন মানুষের মত কাজ করে গেছেন। কিন্ত তার বদলে উনি কখনো আমাদের কাছে কিছু চান নি।
এই জন্য থাই জনগনের কাছে আমাদের রাজা ভালোবাসা আর ভালোমানুষের প্রতীক।
ধর্মীয়
তোমাদের ধর্ম যাই হোকনা কেন অনুরোধ রইলো আমাদের প্রিয় রাজার সুস্থতার জন্য একটুখানি প্রার্থনা ”
লেখক :
Tatrawee harikul

কিন্ত না লাখো মানুষের কোন প্রার্থনাই অবিসংবাদিত রাজা ভুমিবল আদুলেয়াদজে কে সুস্থ করতে পারে নি। ৮৮ বছর বয়সে বার্ধক্য জনিত বিভিন্ন রোগের সাথে যুদ্ধ করতে করতে তিনি নির্বান লাভ করলেন। সন্ধ্যা সাতটায় আনুষ্ঠানিক ভাবে তাকে মৃত ঘোষনা করা হলো। তার একমাত্র ছেলে এখন থাইল্যান্ডের রাজা বলে ঘোষিত হলো।

লেখাটির মাধ্যমে এক অসাধারন দেশপ্রেমিক রাজা এক পিতার মত শাসকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন।

সব ছবি নেট থেকে নেয়া।

 

 






Shares