Main Menu

‘আমি ঢাকা থেকে এসেছি, আমাকে যদি সেখানে পাঠানো হয় আমার খুব একটা সমস্যা হবে না’

[Web-Dorado_Zoom]

বাংলায় কথা বলা কি তার জন্য নিরাপদ? একটি আলোচনাসভায় মজার ছলেই একথা বলে ওঠেন নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন। আলোচনায় উপস্থিত শহরের তরুণ দর্শকদের মনে করিয়ে দেন তিনি মূলত ঢাকার বাসিন্দা। কলকাতায় সল্টলেকের অমর্ত্য সেন গবেষণা কেন্দ্রে যুব ও সামাজিক সুযোগ-সুবিধা বিষয়ক এক আলোচনা সভায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘আমি ঢাকা থেকে এসেছি এবং আমাকে যদি সেখানে পাঠানো হয় তাহলে আমার খুব একটা সমস্যা হবে না।’

তিনি ভাষাগত কুসংস্কার থেকে শুরু করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন। সেন বলেন, ‘আমি সংবাদপত্রে পড়েছিলাম যে বাংলা বলার জন্য একজনকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল। আমি চিন্তিত ছিলাম।’

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকরা যখন বাংলা বলার জন্য লোকদের বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করার বিষয় নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করেন, তখন সেন কটাক্ষ করে বলেন, ‘আমি কি বাংলায় উত্তর দেব?’

তিনি বলেন, ‘বাংলা সভ্যতার নানা গুন আছে যেগুলো আমাদের মর্যাদা দিতে হবে। যেখানে তার উল্টোটা ঘটবে সেখানে বড় ভাবে প্রতিবাদ করতে হবে।’

সেনের কথায়, ‘আমি বলছি না যে, ভারতে বাঙালি সভ্যতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে বাংলা ভাষা একাদশ শতাব্দী থেকেই বিদ্যমান।’

বিহার এসআইআর
মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার বিষয়েও সতর্ক করে দেন অমর্ত্য সেন। তিনি বলেন, ‘ভারতের অনেক মানুষের কাছে এমন কোনও নথি নেই যার সাহায্যে তারা ভোটার হওয়ার দাবি করতে পারে। যদি কিছু মানুষের উপকার করার অজুহাতে এমন একটি অনুশীলন বাস্তবায়িত হয় যা আরও অনেকের ক্ষতি করবে এবং মানুষকে বঞ্চিত করবে তাহলে এটি একটি বড় ভুল হবে।’

অর্থনীতিবিদের কথায়, ‘আমি বলছি না যে, পুরাতন তালিকায় কোনও ত্রুটি নেই- ত্রুটি অবশ্যই থাকবে। কিন্তু আমি মনে করি না যে কোনও অনুশীলনকে ন্যায্যতা দেয়ার কোনও কারণ আছে যদি এটি সংশোধন করার নামে আরো সাতটি ত্রুটি সংযুক্ত করে।’

নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গে একই রকম Special Intensive Revision বা SIR প্রয়োগ করবে কিনা তা নিয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে জল্পনা চলছে। ইতিমধ্যেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জুন মাস থেকে এই ভোটার তালিকা সংশোধন চলছে। নথি-ভিত্তিক যাচাইকরণ প্রক্রিয়াটি রাজনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসসহ বিরোধী ইন্ডিয়া ব্লক সতর্ক করে দিয়েছে যে, এটি কাগজপত্রবিহীন প্রকৃত ভোটারদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারে।

হিন্দু-মুসলিম ঐক্য
মুসলিম শাসকরা কেবল হিন্দুদের উপর অত্যাচার করতো এই আখ্যানকে প্রত্যাখ্যান করে সেন বন্ধুত্ব এবং সাংস্কৃতিক পৃষ্ঠপোষকতার উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে বলেন, মুসলিম শাসকদের অধীনেই রামায়ণ ও মহাভারত সংস্কৃত থেকে বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছিল।’

তিনি আরেকটি উদাহরণ হিসেবে দারা শিকোহের উপনিষদের ফারসি অনুবাদের কথা উল্লেখ করেন এবং সিরাজ-উদ-দৌলাকে লেখা রবার্ট ক্লাইভের একটি চিঠির কথা উল্লেখ করেন। ওই চিঠিতে ক্লাইভ সিরাজের নয়জন বন্ধুর নাম উল্লেখ করেছিলেন তাদের মধ্যে সাতজন ছিলেন হিন্দু।

সূত্র : মানবজমিন ডিজিটাল, দ্য টেলিগ্রাফ,






Shares