Main Menu

মেয়ের নির্দেশনায় বাবা অন্ধ মনির হোসেনের রিক্সা চালিয়ে জীবন সংগ্রাম

+100%-

Rezuu-1451920775-68bbe69_xlargeডেস্ক ২৪:: মানুষের জীবন কত বৈচিত্রময়। একই দেশে কেউ কোটি কোটি অবৈধ টাকার উপর শুয়ে আয়েশ করছে কেউবা অন্ধ দুচোখ নিয়ে রিক্সা চালিয়ে জীবন সংগ্রাম করছে। কত ব্যবধান মানুষে মানুষে আমাদের এই বাংলাদেশে !

‘বাবা চালাও, এখানে থামা্ও’ এভাবেই রিকশার ক্রসবারে বসে অন্ধ রিকশাচালক বাবা মনির হোসেনকে নির্দেশনা দিচ্ছে দ্বিতীয় শ্রেণীর স্কুলছাত্রী আফরোজা ফারিয়া। আর এভাবেই বাবা-মেয়ের যৌথ পরিশ্রমে তাদের সংসার চলে। দুই বছর বয়স থেকে মনির অন্ধ, এখন রিকশা চালানোই তার পেশা। আর ছোট মেয়েটিই তার অন্ধ বাবার চোখ হিসেবে ভুমিকা রাখছে।

অনলাইন ঢাকাকে-মনির হোসেন বলেন, ‘ফারিয়ার নির্দেশনাতেই আমি রাস্তায় রিকশা চালাই। যেখানে যে রকম ব্রেক করার প্রয়োজন সেভাবেই ফারিয়া আমাকে নির্দেশনা দেয়।আর সেভাবেই আমি কাজ করি।’ ফারিয়া ফেনির সুন্দরপুরের স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী।তবেরিকশাভাড়া লেনদেনের ক্ষেত্রে সে খুবই সতর্ক। স্কুল ছুটির পর ফারিয়া রিকশার ক্রসবারে বসে এবং বাবাকে নির্দেশনা দেয়। আর ওখানে বসেই সে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছে। ৫ বছর বয়স থেকেই ফারিয়া এ কাজ করে। মনির জানান, দিনে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা আয় করি, তা দিয়েই আমাদের সংসার চলে। কেননা, মাগরিবের নামাজের পর আর রিকশা চালাতে পারি না। ছোট ফারিয়ার আগে মনিরকে এভাবেই সহায়তা করতো তার ছেলে শরীফ।শরীফ এখন বড় হয়ে গেছে, তার বয়স প্রায় ১৮ বছর।

তাই সে এখন সিএনসি অটোরিকশা চালক। কিছুদিন আগে মনির একটি টিভি প্রোগামে অংশ নিয়ে এক লাখ টাকা পেয়েছিলেন।সেই টাকা থেকেই কিছু টাকা ছেলের ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের জন্য দেন।বাকী টাকার কিছু অংশ নিজের চোখের চিকিৎসায় খরচ করেন।তার এখনো বিশ্বাস তিনি হয়তো আবারো দেখতে পাবেন। যদিও এই মুহূর্তে চোখে দেখার চিন্তা মনিরের উচ্চভিলাস। মনির জানান, তার দ্বিতীয় সন্তান স্বর্ণা আক্তারের (১৬) বিয়ে হয়েছে। তাই রিকশা চালানো বন্ধ করার জন্য তার উপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। ২৮ বছর ধরে সন্তানের নির্দেশনায় রিকশা চালাচ্ছেন মনির হোসেন।

দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে মনির বললেন ‘ আমি তো রিকশা চালানোর চাইতে অন্য কোনো কাজ ভাল করতে পারবো না। তাই এভাবেই কেটে যাবে আমার জীবন।’






Shares