৫৭ ধারার মামলার আসামিকে চিনেন না বাদী! ওসির কারসাজিতেই মামলা!
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারায় সীমান্ত খোকন নামে এক সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা মামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বাদী।
মামলার বাদী উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের কিশোরপুর গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ মিয়া আসামি সীমান্ত খোকনকে চিনেন না বলেও জানিয়েছেন।
সীমান্ত খোকন ‘ডেইলি অবজারভার’ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি। তিনি মামলা দায়েরের ঘটনায় নবীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম সিকাদারকে দায়ী করেছেন। ওসি আসলাম তাকে ৫৭ ধারায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেছেন সীমান্ত।
গত মঙ্গলবার (০১ জুলাই) রাতে নবীনগর থানায় আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় সীমান্ত খোকনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন মাসুদ মিয়া।
ওই মামলার আর্জিতে বলা হয়, গত ২৪ জুলাই দুপুরে নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের কিশোরপুর (টানচক) গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ মিয়ার স্ত্রী ও তার শিশুকন্যা রোদে কম্বল শুকানোর জন্য বাড়ির ওঠানে গেলে তার ভাই দিদার মিয়া ও তার স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয়।
এতে মাসুদ মিয়ার স্ত্রী ও তার শিশুকন্যা আহত হয়। এ ঘটনায় ২৫ জুলাই সীমান্ত খোকন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেন।
ওই পোস্টে আপন চাচা তার ভাতিজিকে ধর্ষণ করে এবং মা-মেয়ে দুজনই ঘরে বন্দি অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন বলে উল্লেখ করেন।
এছাড়া পুলিশকে বিষয়টি জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। তবে খোকনের এ স্ট্যাটাসটি ভিত্তিহীন ও উস্কানিমূলক এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে মাসুদ ও তার পরিবারকে সমাজের কাছে হেয়প্রতিপন্ন করেছে বলে মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে।
তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে মামলার বাদী মাসুদ মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, সীমান্ত খোকন নামের কোনো সাংবাদিককে আমি চিনি না। যাকে চিনি না তার বিরুদ্বে মামলা দেয়ার প্রশ্নই উঠে না। এ মামলার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।
সীমান্ত খোকন অভিযোগ করে বলেন, ওসি আসলাম সিকদার কৌশলে বাদীর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে আমার বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা রেকর্ড করেছেন। গত ২৭ জুলাই ওসি আমার বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন।
নবীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম সিকদার বলেন, বাদী মাসুদের লিখিত আর্জি পেয়েই মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এখন হয়তো বাদী ভয়ে মামলার বিষয়টি অস্বীকার করছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে ওসির সঙ্গে কথা বলেছি। বাদীর আর্জিতেই নাকি মামলা নেয়া হয়েছে। তবে বাদী যদি এখন অস্বীকার করে থাকেন তাহলে অবশ্যই সেটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।