মিরাজ অ্যাটাক কেঁপে গেল ইংল্যান্ড
আর চার দিন পরেই ১৯তম জন্মদিন পালন করবেন তিনি। কিন্তু চার দিন আগেই জন্মদিনের আগাম পুরস্কার পেয়ে গেলেন মেহদি হাসান মিরাজ। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেকের প্রথম দিনে একাই কাঁপিয়ে দিলেন কুক অ্যান্ড কোম্পানিকে। নিলেন পাঁচ উইকেট। তাঁর দাপটে দিনের শেষে ইংল্যান্ড ২৫৮/৭।
গুগ্ল বলছে, এখনও পর্যন্ত মাত্র ১২টা প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন ডানহাতি এই অফস্পিনার অলরাউন্ডার। এই এক ডজন ম্যাচেও কিন্তু তাঁর রেকর্ড বেশ নজরকাড়া। তিন বার ৫ উইকেট-সহ মোট ৪১টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। ব্যাট হাতেও বেশ দড় মিরাজ। ব্যাটিংয়ের ধার এখনও বোঝা না গেলেও বল হাতে যে তিনি কতটা বিধ্বংসী, প্রথম ম্যাচেই বোঝালেন মিরাজ। জো রুট, গ্যারি ব্যালান্স, জনি বেয়ারস্টোরা তাঁর বল বুঝতেই পারেননি। বাকি দু’টি উইকেট নেন সাকিব। এই দু’জনের দাপটে ১০৬ রানে মধ্যেই পাঁচ উইকেট হারায় ব্রিটিশ বাহিনী। ষষ্ঠ উইকেটে মইন আলি এবং জনি বেয়ারস্টোর ৮৮ রানের পার্টনারশিপে কিছুটা ম্যাচে ফেরে ইংল্যান্ড। দু’জনেই হাফ সেঞ্চুরি করেন। দু’জনেই অবশ্য মিরাজের শিকার। এত দিন বাদে টেস্ট খেলতে নেমেও ইংল্যান্ডকে নাকানি চোবানি খাইয়ে বাংলাদেশ বুঝিয়ে দিল, ওয়ান ডে, টি২০-র পর এ বার টেস্টেও ছাপ ফেলতে শুরু করেছে তারা। তবে বোলিং ভাল হলেও কোচের মূল চিন্তার জায়গা ব্যাটিং। সেই পরীক্ষায় সাকিবরা পাশ করে কি না সেটাই এখন দেখার।
মিরাজ বাদে বাংলাদেশের হয়ে এ দিন অভিষেক হয়েছে কামরুল ইসলাম রব্বি এবং সাব্বির রহমানের।
এ দিন অ্যালেক স্টুয়ার্টকে টপকে ইংল্যান্ড ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বাধিক সংখ্যক টেস্ট (১৩৪টি) খেলার রেকর্ড গড়েলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। তবে রেকর্ডের দিনটি বড়ই হতাশায় কেটেছে তাঁর। মাত্র ৪ রানে সাকিবের দ্বিতীয় বলে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। চার চারটি রিভিউ আপিলে বেঁচে যাওয়া মইন আলি বড়ই ভাগ্যবান। ইংল্যান্ড ইনিংসে সর্বোচ্চ ৬৮ রান করেছেন তিনি।
টেস্ট অভিষেক ইনিংসে ৫ উইকেট, এমন বোলিং নাকি আশা করেননি মেহেদি হাসান মিরাজ। বললেন, “পাঁচ উইকেট পাব ভাবিনি। ডেব্যুতে যেন আমি অ্যাভারেজ পারফর্ম করতে পারি, এই যেমন একটা-দু’টা উইকেট, ব্যাটিংয়ে গোটা তিরিশেক রান। অভিষেকর দিনেই বোলিংয়ে কর্তৃত্ব করব, এটা ভাবিনি।” অভিষেকে নিজেকে মেলে ধরার পেছনে বয়সভিত্তিক দলের কোচ সোহেল ইসলাম এবং বাঁ হাতি স্পিনার আবদুর রাজ্জাকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ দল থেকে শুরু করে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে যখন খেলেছি,তখন সোহেল স্যার আমাকে গাইড করছেন। জাতীয় লিগে যখন খেলেছি, তখন রাজ ভাই (আবদুর রাজ্জাক) গাইড করেছেন। টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়ার পর উনি আমাকে একটা কথাই বলেছেন, লঙ্গার ভার্সনে যে জিনিসটি করেছিস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সেটাই করবি। বলেছেন, কোনও ভেরিয়েশন করার দরকার নেই। তুই যদি এক জায়গায় বল করে যাস তা হলে তোর বল কেউ খেলতে পারবে না।”