Main Menu

ইউপি নির্বাচন:: ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ১১ ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে বিপাকে আওয়ামী লীগ

+100%-
union_30ডেস্ক ২৪:: আগামী ২৮ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ১১ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন।  নির্বাচনে ১১ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫৪জন প্রার্থী।   নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত ও নির্দেশ উপেক্ষা করে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের ৬জন বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী। দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে  বিপাকে আছে আওয়ামী লীগ।
ইতিমধ্যেই বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। তবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল গফুর ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে গত ১৩ মে প্রতিক বরাদ্দের পর থেকেই নির্ঘুম প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছে প্রতিদ্বন্দ্বি চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের পোস্টার।
মজলিশপুর ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. তাজুল ইসলাম (নৌকা), বিএনপি মনোনীত মো. কামরুল হাসান (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনীত মো. আল-আমিন (লাঙ্গল), ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত আল-আমীন মামুন-( মিনার) ও নির্দলীয় বশির আহমেদ (আনারস)।
বুধল ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল হক (নৌকা), বিএনপি মনোনীত এ কে এম নূরুল হাসান আলম- (ধানের শীষ), ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত আতিকুর রহমান (মিনার) ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মো. আবদুল হামিদ (আনারস)।
বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে বেকায়দায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী।
সুহিলপুর ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আজাদ হোসেন হাজারী আঙ্গুর (নৌকা), বিএনপি মনোনীত মো. মোবারক মুন্সী (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনীত মাহফুজ মিয়া (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাবিবুল্লাহ মিসবাহ (হাত পাখা) নির্দলীয় মো. আজিজুর রহমান (আনারস)        ও সাকির মিয়া ( টেলিফোন)।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আজাদ হোসেন হাজারী আঙ্গুর ছোট এলাকা ঘাটুরার। ইউনিয়নের বড় অংশ সুহিলপুর থেকে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মুসলীম লীগের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান লিটন। তবে নির্বাচনের কাগজপত্রে তিনি তার দলীয় পরিচয় উল্লেখ করেননি। বড় অঞ্চলের হওয়ায় আজিজুর রহমান লিটন সুবিধায় আছেন।
নাটাই উত্তর ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হাবিবুল্লাহ বাহার (নৌকা), বিএনপি মনোনীত মো. আবুল কাশেম (ধানের শীষ), ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত মিজানুর রহমান (মিনার), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত খায়ের মিয়া (হাতপাখা), ও নির্দলীয় মো. ফরিদ আহামেদ (আনারস)।
নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নূরুল আমিন (নৌকা), বিএনপি মনোনীত মো. নাজিম উদ্দিন (ধানের শীষ), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মো. শাহআলম (মোটর সাইকেল) ও নির্দলীয় মো. নাজমুল হক (আনারস)।
এখানে আছে পুলিশের হয়রানির অভিযোগ। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. শাহআলম জানান- পুলিশ সাবেক চেয়ারম্যান মো. হোসেন, হুমায়ুন মেম্বার, নসর ও ডাক্তার সেলিমের বাড়িতে গেছে। তিনি জানান-বিলকেন্দুয়া গ্রামে বড়বড় দু’টি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। আমার আশঙ্কা এসব তোরণ নির্মাণের ভিন্ন উদ্দেশ্যে আছে। এই ইউনিয়নে গোষ্ঠী আধিপত্যের কারণে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বেকায়দায়। মনোনয়ন পাওয়ার পর কয়েকদিন তিনি ছিলেন পুরোপুরি কোণঠাসা। ইউনিয়নের বড় দু’টি গোষ্ঠী একত্রিত হয় তার বিরুদ্ধে। ঐ দুই গোষ্ঠীর প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি মো. শাহআলম। তিনি দোলাগাজী গোষ্ঠীর নেতা। আরেকটি বৃহ গোষ্ঠী বুদাই মোল্লার গোষ্ঠীর নেতা সাবেক চেয়ারম্যান মো. হোসেন সমর্থন দিয়েছেন তাকে। আর এ কারণেই ছোট গোষ্ঠীর (ইমান উদ্দিনের গোষ্ঠী) নেতা নূরুল আমিন পড়ে যান বেকায়দায়। তাছাড়া ব্যক্তিগত ইমেজের দিক দিয়েও শাহ আলমের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি।
সাদেকপুর ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এ কে এম আবদুল হাই (নৌকা), বিএনপি মনোনীত মো. জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনীত মো. আবুল খায়ের (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মো. নাজিম উদ্দিন (হাতপাখা), ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মো. ইকবাল হোসাইন (আনারস)।
তালশহর পূর্ব ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. এনামুল হক (নৌকা), বিএনপি মনোনীত মো. নজরুল ইসলাম (ধানের শীষ), নির্দলীয় মো. সোহেল (আনারস) ও মো. মনিরুল ইসলাম (চশমা)।
তালশহর পূর্ব-ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর একটি অফিসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আর এই ঘটনায় মামলা দেয়া হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মনিরুল ইসলামসহ তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। মনিরুল সাংবাদিক সম্মেলন করে তার প্রচারণায় বাধা, কর্মী-সমর্থকদের পুলিশি হয়রানির অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ইউনিয়নের ৭ গ্রাম তেলীনগর, চানপুর, মোহনপুর, ধানসার, সোনাসার, পুতাই ও অষ্টগ্রামের মধ্যে অষ্টগ্রাম ছাড়া বাকি ৬ টি গ্রামের ভোটাররা তাকে সমর্থন দিয়েছেন। অষ্টগ্রাম থেকে আওয়ামী লীগ, বিএনপি দলীয় প্রার্থী ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন করছেন। গ্রামের জোটগত অবস্থানের কারণে আমার অবস্থান ভালো হওয়ায় আমি ও আমার কর্মী-সমর্থকদের টার্গেট করা হয়েছে। তিনি জানান, গত ১৫ই মে দিবাগত রাতে সোনাসার গ্রামে কাপড় দিয়ে নির্মিত আওয়ামী লীগ প্রার্থীর একটি অফিসে কে বা কারা আগুন দেয়। সাজানো এ ঘটনায় আমাদের হয়রানির পথ বের করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় এক কর্মীকে। দেয়া হয় মামলা। পরদিন ১৬ই মে বিকেলে মোহনপুর গ্রামে আমার সমর্থকরা একটি উঠোন বৈঠক আয়োজন করে। কিন্তু পুলিশের বাধার কারণে সেটি হতে পারেনি। এখন পুলিশ মনিরুল ও তার সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে। তিনি বলেন পরিকল্পিতভাবে একের পর এক ঘটনায় ভোটাররা শঙ্কিত, আতঙ্কিত। ভোটের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে হয়রানির মাত্রা আরো বাড়বে বলে তিনি আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। তিনি আরো অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দের আগেই প্রতীক ব্যবহার করে প্রচারণায় নিষিদ্ধ অসংখ্য তোরণ নির্মাণ করেন ইউনিয়নের প্রধান প্রধান সড়কে। প্রতীক ব্যবহার করে আগাম পোস্টার ছাপিয়ে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেন। কিন্তু এ বিষয়ে নিরব নির্বাচন প্রশাসন। মনিরুলের দু‘টি নির্বাচনী অফিসও ভাঙচুর করেছে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা।
রামরাইল ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. শাহাদাত খান (নৌকা) , বিএনপি মনোনীত মো. সাদেকুর রহমান (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনীত মো. আবুল কাশেম (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মো. হেলাল উদ্দিন (হাতপাখা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মো. মশিউর রহমান সেলিম (আনারস) ও আবদুল গফুর (চশমা) এবং জাসদের মো. শাহানেওয়াজ (মশাল)।
রামরাইল ইউনিয়নে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবদুল গফুরকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য করা হয়েছে। এলাকায় জোর গুজব তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হুমকি দেয়। তবে এই ইউনিয়নে আরেকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। তিনি হচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান সেলিম। তাই গফুরকে বসিয়ে দিলেও আওয়ামী লীগের বেকায়দা অবস্থার অবসান হয়নি।
সুলতানপুর ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ফিরোজুর রহমান (নৌকা), বিএনপি মনোনীত শেখ মো. মহসিন (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মো. আক্কাস মিয়া (হাতপাখা), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী জসিম উদ্দিন (আনারস) ও মো. শেখ শরীফুল ইসলাম     ( টেলিফোন)।
মাছিহাতা ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আল-আমিন (নৌকা), বিএনপি মনোনীত মো. সাব্বির আহমেদ খান (ধানের শীষ), এনপিপি মনোনীত মো. রফিকুল ইসলাম (আম), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মো. মাসুম (হাতপাখা) ও নির্দলীয় মো. আকবর কবির (আনারস)।
বাসুদেব ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. এম আলম ভূইয়া, (নৌকা), বিএনপি মনোনীত মো. লিয়াকত আলী (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির মো. আসাদুজ্জামান রঞ্জু (লাঙ্গল) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত (হাতপাখা)।





Shares