ময়না তদন্তে গৃহবধু হত্যার আলামত আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরছে
মোহাম্মদ মাসুদ , সরাইল থেকে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের ধামাউড়া গ্রামের হালিমা বেগম (২৫) নামের সেই গৃহ বধুকে নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যার আলামত মিলেছে ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে। লাশ দাফনের ৩৫ দিন পর হত্যার বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে। আসামীরা ঘুরছে প্রকাশ্যে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্র জানায়, আট বছর আগে উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের কালিশিমুল গ্রামের মৃত সিরাজ আলীর মেয়ে হালিমা বেগমের সাথে অরুয়াইল ইউনিয়নের ধনু মিয়ার ছেলে মিজানুর রহমানের (৩৫) বিয়ে হয়। বিয়ের বছর খানেক পর মিজান মধ্যপ্রাচ্যে গমন করেন। তার এক বছর পর মিজান দেশে ফিরে বেকার জীবনযাপন করতে থাকেন। কয়েক মাস ধরে মিজান ইটালী যাওয়ার জন্য হালিমার পরিবারে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। অপারগতায় হালিমার সাথে মিজানের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে হালিমার উপর নির্যাতন শুরু করে মিজান ও তার পরিবারের লোকজন। তিন সন্তানের জননী হালিমা স্বামীর অত্যাচারে দিশেহারা হয়ে পড়েন। হালিমার মা হাসেনা বেগম (৪৫) বলেন, আমি টাকা দিতে রাজি হয়েছিলাম। ইতিমধ্যে অনেকবার টাকা দিয়েছিও। এখন জমি বিক্রি করে পাঁচ লাখ টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় গত ৫ নভেম্বর সকালে মিজান ও তার পরিবারের লোকজন হালিমাকে মারধর করে। এক পর্যায়ে তারা মুখে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। পরে হালিমার লাশ ঘরে রেখে মিজানসহ পরিবারের সবাই পালিয়ে যায়। তখন মিজানের বাবা ধনু মিয়া (৬০) গ্রামে প্রচার করে হালিমা গলায় ফাঁস দিয়ে আতœহত্যা করেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ৬ নভেম্বর জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করেন। ওই দিন হালেমার মা হাসেনা বেগম স্বামী মিজানুর রহমানকে প্রধান আসামি করে তার মা বাবা ও ভাই বোনসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে সরাইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ময়না তদন্তে হত্যার আলামত পেয়েছেন জেলা সদর হাসপাতাল মর্গের চিকিৎসা কর্মকর্তা বিশ্বনাথ ভৌমিক। তিনি তার ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে এটিকে গলাচেপে হত্যা বলে উল্লেখ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। গতকাল সোমবার বিশ্বনাথ ভৌমিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। হালিমার চাচা হাফেজ শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার কয়েকদিন পরই সব আসামি গ্রামে ফিরে আসেন। তারা এখন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তারে কোন তৎপর হচ্ছে না। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আলী আরশাদ বলেন,আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।