স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে পা কেটে নেয়ার অভিযোগ
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আবুল বাশারের বিরুদ্ধে এক ব্যক্তির পা কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার বিকালে প্রকাশ্য দিবালোকে উপজেলার রূপসদী গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। খন্ডিত ডান পা উদ্ধার ও হামলাকারীদের ধরতে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
এলাকাবাসী বলছে, উপজেলার রূপসদী গ্রামে কালা মিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আবুল বাশারের বিরোধ চলছিল। সেই জের ধরেই আবুল বাশার ও তার লোকজন শুক্রবার বিকালে কালা মিয়া (৪৫) ও তার ছেলে বিপ্লব মিয়াকে (১৯) বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে টেঁটাবিদ্ধ করে। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে টেঁটাবিদ্ধ অবস্থায় কালা মিয়ার ডান পা কুপিয়ে হাঁটু থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এ সময় বিপ্লবের দুই পায়ের রগ কেটে টেঁটাবিদ্ধ অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মো. শরীফ জানান, ‘রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ, তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। লোকটির ডান পা হাঁটু থেকে বিচ্ছিন্ন।’
অভিযোগ সম্পর্কে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আবুল বাশার বলেন, ‘আমি ঢাকায় অবস্থান করছি, কালা মিয়ার পা আমি কেটেছি- এ অভিযোগ ঠিক না। যতটুকু শুনেছি কালা মিয়া আমাদের গ্রামের এক বাড়িতে চুরি করতে গিয়েছিল। সেই বাড়ির লোকজন ও এলাকাবাসী ধরে তাকে গণপিটুনি দিয়েছে। পরবর্তীতে কী হয়েছে আমি জানি না।’
এ বিষয়ে কালা মিয়ার স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীকে বাশার নেতা ও তার ভাইয়েরা মিল্ল্যা বাড়ি থেকে ডাইকা নিয়া চল বিন্দাইয়া আমার জামাইয়ের অর্ধেক পাও কাইট্যা নিয়া গেছে ও আমার ছেলেরে দুইডা চল (টেঁটা) বিন্দাইয়া পাওয়ের রগ কাইট্যা লাইছে। আমি গরিব মানুষ, আমি এইডার একটা বিচার চাই।’
হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতর কালা মিয়া বলেছেন, ‘আমারে বাড়ি থেকে বাশার ও তার বাহিনীর লোকজন ডাইক্যা নিয়া চল (টেঁটা) বিন্দাইয়া দাও দিয়া কুপাইয়া কুপাইয়া ডাইন পাওডার (পা) হাঁটুর উপর থেকে নিচ পর্যন্ত কাইট্যা লইয়া গেছে।
হেরা নাকি পাওডা (পা) ফুগাইয়া (শুকিয়ে) ফেরত দিব। আমার পাও (পা) কাটার লগে জড়িত আবুল বাশার, ধন মিয়া, মনির মেম্বার, আনার হোসেন, আমাদুল, আলিসহ আরও কয়েকজন। ব্যথা করতাছে মনে হয় মইরা যামু।’
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সালাহ্ উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠিয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।