সেতু ভেঙে নিচ্ছেন আ.লীগ নেতা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছলিমাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু মুছা সরকারের বিরুদ্ধে সেতু ভেঙে ইট, সুরকি, বালু ও রড নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাত দিন ধরে শ্রমিক দিয়ে তিনি এসব সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বাঞ্ছারামপুর কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুর-ছলিমাবাদ সড়কে ছলিমাবাদ গ্রামের পশ্চিম পাশে প্রায় ২০ বছর আগে একটি সেতু নির্মাণ করে এলজিইডি। ১৮ এপ্রিল ছলিমাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রুস্তম আলম এটি ভেঙে ফেলতে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে একটি আবেদন করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী এ বি এম খোরশেদ আলম বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে ছলিমাবাদ ইউপির চেয়ারম্যান রুস্তম আলম ছলিমাবাদ গ্রামের প্রবেশমুখের সেতুটি ভেঙে ফেলার প্রস্তাব দেন। ওই আবেদনে ওই স্থানে বাঁক থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে উল্লেখ করা হয়। সেতুটি ভেঙে ইউনিয়ন পরিষদের এলজিএসপির টাকায় সিসি ঢালাই দিয়ে রাস্তা পাকাকরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু ওই প্রস্তাব নিয়ে উপজেলা পরিষদে কোনো আলোচনা কিংবা কোনো রকম অনুমোদনও দেওয়া হয়নি।’
উপজেলা প্রকৌশলী আরও বলেন, ‘ছলিমাবাদ গ্রামের বাসিন্দা আওয়ামী লীগের নেতা আবু মুছা সরকার সেতুটি ভেঙে ফেলছেন বলে খবর পেয়ে আজ (গত সোমবার) প্রথমে আমার কার্যালয় থেকে লোক পাঠিয়ে বাধা দেওয়া হয় এবং পরে আমি তা ঘটনাস্থলে দেখেছি। অনুমোদন ছাড়া সেতু ভাঙার বিষয়ে উপজেলা পরিষদে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ছলিমাবাদ ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু মুছা সরকার বলেন, ‘আমি বুঝতে পারিনি, প্রকল্প অনুমোদন হওয়ার আগে সেতু ভেঙে রাস্তা করা যাবে না। এটি আমার ভুল হয়ে গেছে।’ কার অনুমতি নিয়ে সেতু ভাঙছেন—জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সোমবার বেলা দেড়টার দিকে ছলিমাবাদ গিয়ে দেখা যায়, সেতুর উত্তর পাশের অংশ ভাঙার কাজ করছেন তিনজন শ্রমিক। সেতুর দক্ষিণ দিক দিয়ে একটি বিকল্প সড়কও তৈরি করা হয়। শ্রমিক মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘ছলিমাবাদ গ্রামের আবু মুছা সরকার আমাদের সেতু ভাঙনের কাজ দিছে। আমরা কয়েকজন সেতু ভাঙনের কাজ করতাছি।’
ইউপি চেয়ারম্যান মো. রুস্তম আলম বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে আমি কালভার্ট ভেঙে ওই স্থানে সিসি ঢালাই দিয়ে রাস্তা পাকাকরণ করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। মূলত কালভার্টের এক পাশের জমি ভরাট করা হচ্ছে, আবার কালভার্টটি যে রাস্তায়, সেটিতে বাঁক থাকায় দুর্ঘটনাও ঘটছে। আবু মুছা সরকার যে কালভার্টটি ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে, তা আমি আজ (সোমবার) শুনেছি। সে কীভাবে ভাঙার কাজ করছে, তা আমার জানা নাই।’ সূত্র:: প্রথম আলো