সক্রিয় হচ্ছে ‘সুইসাইডাল স্কোয়াড’, সর্তক প্রশাসন



ইউসুফ সোহেল : একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী ও নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়কে ঘিরে জামায়াত-শিবিরের দুধর্ষ ক্যাডাররা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সুইসাইডাল স্কোয়াড গঠনসহ বড় ধরণের নাশকতামূলক কর্মকান্ডের প্র্রস্তুতি নিচ্ছে- সম্প্রতি গোয়েন্দাদের দেওয়া এমন তথ্যের ভিত্তিতে দেশের সকল রেঞ্জের ডিআইজি, ডিজি র্যাব, অতিরিক্ত মহা-পুলিশ পরিদর্শক (এসবি), এসপি, মেট্রোপলিটন পুলিশকে সর্তকতা ও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্র জানায়, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের ওই ২ নেতার রায় যে কোনও সময় ঘোষণা হতে পারে। রায়কে ঘিরে দেশের ৪০টি জেলায় একযোগে জ্বালাও-পোড়াও, ভাংচুর ও বোমাবাজিসহ বড় ধরনের নাশকতার ছক এঁটেছে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা। রায় ঘোষণার প্রথম ধাপে সহিংসতার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে ৫০-৬০ জন নারী-পুরুষের সুইসাইডাল স্কোয়াড। তারা আঘাত হানতে পারে স্বস্ব এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম, ফেসবুক, মসজিদের মাইকে গুজব ছড়িয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটাতে পারে দুষ্কৃতিকারীরা। সংগঠনটির উচ্চ পর্যায়ের নেতাসহ বুয়েট এবং দেশের কয়েকটি সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের নির্দেশনায় এসব কর্মকান্ডের ছক কষা হয়েছে। তৎপর রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের জামায়াত পন্থী শিক্ষার্থীরাও।
সূত্রটি আরও জানায়, পরিকল্পিতভাবে সহিংস আন্দোলন সংগ্রামের জন্য সারাদেশে শতাধিক টিম গঠন করা হয়েছে। এ টিমগুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক ও বর্তমান শিবির নেতা ও বুয়েট এবং দেশের কয়েকটি সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা। শুধু পুরুষ নয়, শরীরে বোমা বহনকারী শিবিরের বিপুল সংখ্যক নারী সুইসাইডাল স্কোয়াড সদস্যও এখন মাঠে। এ দলের প্রত্যেককে গোপন স্থানে দীর্ঘমেয়াদি প্রশিণ দেয়া হয়েছে। অধিকাংশরাই কুংফু কারাতে ও অস্ত্র পরিচালনায় পারদর্শী। দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সবুজ সংকেত পেলেই পুলিশ ও সরকারি দলের নেতাদের ঘায়েল করতে তারা ঝাঁপিয়ে পড়বে জনসমাগমস্থলে। অন্য ইউনিটের ৫০ থেকে ১শ জন সদস্যের কাজ হবে আকস্মিক তান্ডব চালিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে গত ২৯ মে এমনই ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। বিষয়টি জানানো হয় সকল বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককেও।
সহিংসতার আগাম পূর্বাভাস পেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্তা-ব্যক্তিরা পুলিশ ও র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের কর্মকান্ডের বিষয়ে বিশেষ বৈঠক করেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের সকল রেঞ্জের ডিআইজি, ডিজি র্যাব, অতিরিক্ত মহা-পুলিশ পরিদর্শক (এসবি), এসপি, মেট্রোপলিটন পুলিশকে সর্তকতা ও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহনের কঠোর দিক-নিদের্শনা দেয় পুলিশ সদর দপ্তর। এরই ধারাবাহিকতায় সারা দেশে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বিশেষ অভিযান।
ডিএমপি ও র্যাব সদর দফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জামায়াত শিবিরের যে কোনও ধরনের পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে তারা প্রস্তুত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশক্রমে রাজধানীসহ সারাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
রায়কে ঘিরে জামায়াত-শিবিরের নাশকতা চালানোর পরিকল্পনার বিষয়ে পুলিশের মহা-পরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার আমাদের সময়কে জানান, এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে বলা যাবে। তবে দেশে যে কোনও ধরণের বিসৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয় এজন্য পুলিশ সর্তক রয়েছে।