নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক পরিচয় ১০ এপ্রিল সংখ্যায় প্রথম পৃষ্ঠায় চার কলাম জুড়ে সাংবাদিক দর্পণ কবীর-এর লেখা একটি প্রতিবেদন আমেরিকায় বাঙালীদের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদ-এর মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক আবার সামনে তুলে এনেছে। পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটি হুবহু তুলে ধরা হলো। পাঠক নন্দিত প্রয়াত লেখক হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যুর পর তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ, চিকিৎসা সেবা, মরদেহ প্রেরণে টালবাহানা, কোথায় কবর দেয়া হবে-এ সব নিয়ে লেখকের পারিবারিক পর্যায়ে অনেক ঘটনা-অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম হয়েছিল। লেখকের অসুস্থতার সময়কালে সঠিক সেবা ও পর্যাবেক্ষণ এবং চিকিৎসা নিয়ে তার পাঠক ও ভক্তদের মনে অনেক প্রশ্ন আজো রয়ে গেছে। হুমায়ুন আহমেদের শেষ দিনগুলো কেমন ছিল? মৃত্যুর আগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি কি অবহেলার শিকার হয়েছিলেন? আরো বেশি সেবা-নজরদারি থাকলে তিনি কি আরো কিছুদিন বেঁচে থাকতে পারতেন? এই প্রশ্ন শুধু লক্ষ লক্ষ পাঠকদের মনেই নয়, তাঁর পরিবারের সদস্যদের মনেও আছে। এই প্রশ্নগুলো লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনের কাছে করতে চেয়েছিলেন হুমায়ুন আহমেদের পরিবারের সদস্যরা। আলোচনা কোরে একটি দিনও নির্ধারণ করা হয়েছিল। কথা ছিল পরিবারের সকল সদস্যদের সামনে হুমায়ুন আহমেদের চিকিৎসার বিষয়ে শাওনের কাছে প্রশ্ন করা হবে। শাওন প্রশ্নের জবাব দেবেন। শাওন এধরনের পারিবারিক বৈঠকে আসতে সম্মত হননি। ফলে পারিবারিক বৈঠকটি হয়নি। ফলে হুমায়ুন আহমেদের মা, ভাইবোন এবং সন্তানরা প্রশ্নগুলোর জবাব শাওনের কাছ থেকে পাননি। এ থেকে তাদের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলছে। এদিকে নিউইয়র্ক প্রবাসী বিশ্বজিত সাহা’র লেখা ‘হুমায়ুন আহমেদের শেষ দিনগুলো’ গ্রন্থ প্রকাশিত হবার পর প্রশ্নগুলো প্রবলভাবে আবার সামনে চলে এসেছে। এই গ্রন্থটিতে প্রকাশিত তথ্য-উপাত্তের পক্ষে-বিপক্ষে বিবৃতি লড়াই শুরু হয়েছে। নতুন করে উঠে এসেছে, হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যুর দায়ভার নিয়ে বিতর্ক। বিশ্বজিত সাহার গ্রন্থটির প্রতিপাদ্য বিষয়ের বোটমলাইন (সারমর্ম বক্তব্য) হচ্ছে, মৃত্যুর আগে অজানা কারণে লেখক হুমায়ুন আমমেদ অবহেলার শিকার হয়েছিলেন এবং ২০ জুন হুমায়ুন আহমেদ নিজ বাসায় চেয়ার থেকে পড়ে না গেলে বা পড়ে যাবার পর সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতলে তাকে নেয়া হলে হয়তো হুমায়ুন আহমেদ সুস্থ হয়ে দেশে ফিরতে পারতেন। ‘হুমায়ুন আহমেদের শেষ দিনগুলো’ গ্রন্থে লেখকের বক্তব্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দালিলিক প্রমাণ দেয়া হয়েছে। তবে এই গ্রন্থটির অনেক অংশে মিথ্যা তথ্য দেয়া হয়েছে বলে দেশের ২০ জন লেখক-বুদ্ধিজীবী ইতিমধ্যে বিবৃতি দিয়েছেন। তারা কেন এবং দালিলিক প্রমাণের বিরুদ্ধে এমন বিবৃতি দিয়েছেন, তা আলোচনার দাবি রাখে। বিষয়টি আগ বাড়িয়ে হৈতষীর মায়াকান্নার মত। তাঁরা বলতে চেয়েছেন, বিশ্বজিত সাহার গ্রন্থটির কারণে হুমায়ুন আহমেদের প্রতি অসম্মান করা হয়েছে। অথচ গ্রন্থটিতে সেরকম কিছু নেই। বরং হুমায়ুন আহমেদের প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রেখে তাঁর শেষ দিনগুলোর চিকিৎসা সেবার বিষয়াদি উল্লেখ করা হয়েছে। সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাগজ-পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। এই গ্রন্থটি বিবৃতিদাতারা পুরোপুরি পড়েছেন কিনা-সন্দেহ আছে। এ ছাড়া মেহের আফরোজ শাওন পৃথক এক বিবৃতিতে বিশ্বজিত সাহাকে অশোভন ভাষায় আক্রমণ করেছেন। বিশ্বজিত সাহা’র ‘হুমায়ুন আহমেদের শেষ দিনগুলো’ গ্রন্থ প্রকাশিত হওয়ার পর হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যু নিয়ে অমীমাংশিত বিষয়গুলো উঠে এলো। সকলে জানেন, হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যু হয় গত বছর ১৯ জুলাই দুপুর ১ টা ৩৫ মিনিটে। তবে বিশ্বজিত সাহা’র গ্রন্থে বলা হয়েছে (পৃষ্টা-৮২) হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল ১৮ দিন আগে অর্থাৎ গত বছরের ২ জুলাই। এদিন থেকে বেলভ্যু হাসপাতালে হুমায়ুন আহমেদকে ১০০% ভেন্টিলেশনে রাখা হয় বলে গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে। ১০০% ভেন্টিলেশনে রাখা মানে সংজ্ঞাহীন অবস্থা। এটিকে ক্লিনিকালি ডেড বলে মনে করা হয়। এ কথাটি কঠোরভাবে গোপন রাখা হয়েছিল। ১০০% ভেন্টিলেশনের কথা জানতেন শাওন এবং ‘অন্য প্রকাশ’র প্রকাশক মাজাহারুল ইসলাম। পরে ভেন্টিলেশনের কথা জানতে পারেন জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন। হুমায়ুন আহমেদ যে কোন সময় মারা যাবেন-এ কথা জানার পরও রহস্যজনক কারণে শাওন এবং মাজাহার উল্টো মিডিয়ার কাছে বলতে থাকেন, ‘হুমায়ুন আহমেদের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, তিনি সুস্থ আছেন।’ এমন কি, ১৯ জুলাই হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যুর দেড় ঘন্টা আগে ভয়েজ অব আমেরিকাকে দেয়া সাক্ষাতকারে শাওন দাবি করেছিলেন, হুমায়ুন আহমেদ সুস্থ আছেন। তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। এর দুদিন আগে ১৭ জুলাই ঢাকার একাধিক জাতীয় দৈনিকে নিউইয়র্ক প্রতিনিধির বরাত দিয়ে হুমায়ুন আহমেদ জীবন-মৃত্যুর সন্নিকটে শীর্ষক রিপোর্ট ছাপা হলে লেখকের স্ত্রী শাওন এবং প্রকাশক মাজাহার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এ ধরনের সংবাদের কারণে মামলা করার হুমকি দেন। ১৮ জুলাই বিকেলে বেলবিউ হাসপাতালের সামনে এটিএন বাংলা, এটিএন নিউজসহ কয়েকটি পত্রিকার সাংবাদিকদের কাছে মাজাহারুল ইসলাম দাবি করেন হুমায়ুন আহমেদ সুস্থ হয়ে উঠছেন। এ সময় লেখকের ভাই জনপ্রিয় লেখক ও শিক্ষক ড. জাফর ইকবালকে দিয়েও শারীরিক সুস্থতার কথা বলানো হয়। অথচ পরেরদিন হুমায়ুন আহমেদ মারা যান। এদিকে হুমায়ুন আহমেদের ক্লিনিক্যালি মৃত্যুর কথা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন হুমায়ুন আহমেদের শেষ সময়ের হিতাকাঙ্খী বিশিষ্ট লেখক ড. জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত। তিনি বলেছেন, মৃত্যুর আগের দিনও হুমায়ুন আহমেদের চিকিৎসক মিঃ মিলার, আমার স্ত্রী পূরবী দত্তকে (ই-মেইলে) জানিয়েছেন, হুমায়ুন আহমেদ সুস্থ হয়ে উঠবেন। তবে বেলভ্যু হাসপাতালে হুমাায়ুন আহমেদকে ভেন্টিলেশনে রাখার একদিন পর ৩ জুলাই সস্ত্রীক নিউইয়র্কে আসেন লেখকের ভাই ড. জাফর ইকবাল। ১০০% ভেন্টিলেশনে থাকায় তিনি হুমায়ুন আহমেদের সঙ্গে একবারও কথা বলতে পারেননি। কথা বলতে পারেননি ২ তারিখে আসা কনিষ্ঠা কন্যা বিপাশা এবং তার স্বামীও। আসাদুজ্জামান নূরসহ হুমায়ূন আহমেদের ঘনিষ্ঠরা নিউইয়র্কে স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ তাঁকে চিনতে পারেননি। তার মানে, ২ জুলাই থেকে লেখক হুমায়ুন আহমেদ মৃত্যুর আগ পুর্যন্ত হাসপাতাল কক্ষে অবচেতন ছিলেন। ফলে ড. জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের তথ্যটি সঠিক বলে গ্রহণ করলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। হুমায়ুন আহমেদ যদি ২০ জুন চেয়ার থেকে উল্টে পড়ে না যেতেন, তাহলে হয়তো তার জীবন আরো প্রলম্বিত হত-এমন ধারনা নিউইয়র্ক প্রবাসীদের। স্থানীয় মিডিয়াকর্মীরাও তাই মনে করেন। ১২ জুন সফল অস্ত্রোপাচার হবার পর হুমায়ুন আহমেদ হাসতে হাসতে বাড়ি ফেরেন ১৯ জুন। সুস্থ হওয়া উপলক্ষে ১৯ জুন সন্ধ্যাই হুমায়ুন আহমেদের বাড়িতে একটি পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। এদিন হুমায়ুন আহমেদকে তার প্রিয় খাবার গরুর মাংশ এবং ভাত খেতে দেয়া হয়েছিল। পার্টিতে ওয়াইন ও শ্যাম্পেনও সরবরাহ করা হয়েছিল। সেখানে ছিলেন, ঢাকা থেকে আসা প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম, আমেরিকায় বসবাসরত দু’জন লেখকসহ হুমায়ূন আহমেদের শেষ জীবনে পরিচিত হওয়া কয়েকজন ব্যক্তি। এই পার্টির পর হুমায়ূন আহমেদ অসুস্থ হন। গরুর মাংশ ও ভাত খাওয়ার কারণে তার পেটে প্রবল গ্যাসের সৃষ্টি হয়েছিল। তিনি অস্বস্থি বোধ করেন। হাসপাতাল থেকে সদ্য ফেরা একজন পোস্ট অপারেটিভ রোগীকে কিভাবে এতগুলো মানুষের সামনে ভাত ও গরুর মাংস দিয়ে খাবার দেয়া হয় এটাও প্রশ্নবোধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। হুমায়ূন আহমেদ ভাত ও গরুর মাংস পছন্দ করতেন, কিন্তু তার স্ত্রী বা হিতৈষীরা কেন হুমায়ূন আহমেদকে বিরত করেননি তাও আজ অনেক বড় প্রশ্ন। তারপর ২০ জুন বিকেলে নিঃসঙ্গ অবস্থায় চেয়ার থেকে উল্টে পড়ে যান বলে মিডিয়ার কর্মীদের জানিয়েছিলেন তাদের বাড়ির হাউজকিপার। সেসময় মেহের আফরোজ শাওন, মাজহারুল ইসলাম বক্তব্যে এবং তারপর শেষ সময়ের হিতাকাঙ্খী লেখকের লেখায় অস্বীকার ও এড়িয়ে যাওয়া। পরবর্তীতে জ্যামাইকা হাসপাতালের রিপোর্ট বের হলে পরিস্কার হয়ে যায় হুমায়ূন আহমেদের চেয়ার থেকে পড়ে যাবার কথা। হুমায়ূন আহমেদের শেষ দিনগুলো গ্রন্থের ৬৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত রয়েছে,‘ফ্যামেলি স্টেটস দ্যাট, পেশেন্ট হ্যাডস এ ফল ফ্রম চেয়ার ইয়েস্টারডে’। ২০ জুন ২০১২ সালে জ্যামাইকা হাসপাতালের রিপোর্টে আরো রয়েছে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, কনস্টিপেশন, ডায়রিয়া ও গ্যাস নির্গত হওয়ার কথা। হুমায়ুন আহমেদের পড়ে যাওয়ার ঘটনাটিই তার মৃত্যুর টার্নিং পয়েন্ট হিসাবে বিবেচনা করছেন মিডিয়া কর্মীরা। তাদের প্রশ্ন, এ ঘটনার পর তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেয়া হয়নি কেন? ডাক্তারের নম্বারের জন্য মেহের আফরোজ শাওনের বিশ্বজিত সাহার কাছে ফোন করেছিলেন? দীর্ঘ ৯ মাস তাঁর স্বামী হাসপাতালে যান, তাঁর কাছে কেন ডাক্তারের নম্বর ছিল না? ২১ জুন সকাল ৯ টা ৩২ মিনিটে তাকে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেয়া হয়। এখান থেকে তাকে নেয়া হয় সন্ধ্যায় বেলভ্যু হাসপাতালে। এখানে ২২ জুন ভোর ৫ টা ২৭ মিনিটে হুমায়ুন আহমেদের দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচার করা হয়। একটি সূত্র জানিয়েছে, জ্যামাইকা হাসপাতাল থেকে হুমায়ুন আহমেদকে বেলভিউ হাসপাতালে নেবার সময় অহেতুক কালক্ষেপণ করা হয়। প্রশ্ন উঠেছে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে হুমায়ূন আহমেদকে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেয়া হয়, মেহের আফরোজ শাওন কেন সাথে আসেননি। আর তিনিই বা যখন এলেন, তখন হুমায়ূন আহমেদকে বেলভ্যু হাসপাতালে ট্রান্সফার করার স্বাক্ষর লাগবে তখন। স্বামীকে হাসপাতালে নেয়া হয়, তখন না হয় তিনি গেলেন না। কিন্তু ফানসু মন্ডলের গাড়ীতে হুমায়ূন আহমেদ যখন আর তীব্র ব্যথা সহ্য করতে পারছিলেন না, তখন ৯১১ কল করতে হয়। ৯১১ মানে জরুরী বিভাগে। তখনও কেন মেহের আফরোজ শাওন হাসপাতালে যাননি এই প্রশ্নও এখন আরো সামনে এসে গেছে। হাসপাতালে আসার জন্য তাঁকে আনার জন্য যেতে হয় জ্যামাইকা হাসপাতাল থেকে ফানসু মন্ডলকে। এদিন জ্যামাইকা হাসপাতাল থেকে বেলবিউ হাসপাতালে রেফার করা হলে তাকে কিভাবে নেয়া হবে, এ নিয়েও সময় নষ্ট করা হয়। বিশ্বজিত সাহা টেলিফোন করে একটি প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্স ঠিক করলে প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম অনুরোধ করেন আরো কয়েকটি এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া দেয়ার প্রতিষ্ঠানের সন্ধান করতে। অপেক্ষাকৃত কমমূল্যে প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে সময় নষ্ট হয় এদিন। যেখানে হুমায়ুন আহমেদের তড়িৎ চিকিৎসা করাটা জরুরি, সেখানে তুচ্ছ ঘটনায় সময় নষ্ট করার কারন কি? আর চিকিৎসার প্রশ্নে ব্যয় সঙ্কোচন কেন? সূত্র আরো জানিয়েছে, প্রকাশক মাজাহারুল ইসলাম হুমায়ুন আহমেদের চিকিৎসা ব্যয় কমাতে তৎপর ছিলেন। অথচ প্রায় ৭০ হাজার ডলার অনুদান সংগৃহীত হয়েছিল এই বরেণ্য লেখকের চিকিৎসার জন্য। উদ্যোগ নিলে আরো বিপুল অর্থ অনুদান সংগ্রহ করা সম্ভব ছিল। ২০ জুন চেয়ার থেকে হুমায়ুন আহমেদ কেন পড়ে গিয়েছিলেন এবং তাকে হাসপাতালে তখনই কেন নেয়া হয়নি-এই প্রশ্নের মধ্যে এই বরেণ্য লেখকের মৃত্যু বিতর্ক ঘুরপাক খাচ্ছে। শাওন এবং তার পক্ষাবলম্বনকারী লেখক-বুদ্ধিজীবীরা প্রয়াত লেখক হুমায়ুন আহমেদের পরিবারের সুনাম রক্ষার কথা বলেছেন। হুমায়ূন আহমেদের মরদেহ নিয়ে ঢাকায় ফেরা নিয়ে প্রথম শ্রেণীর টিকেট নিয়ে বাগড়া এবং একদিন পর দেশে মরদেহ নিয়ে যাওয়া। আগের দিন চলে গেলেন ড. জাফর ইকবাল ও তাঁর স্ত্রী। ১৯ তারিখে মুত্যুর পর ডেথ সাটিফেকেটে গুলশানে কবর দেয়ার কথা লেখা, তারা দুদিন পরে জেএফকে এয়ারপোর্টে বললেন তিনি জানেননা। প্লেন থেকে নামার পর বললেন হুমায়ূন আহমেদকে কবর দেয়ার জন্য বলে গেছেন নুহাশ পল্লীতে। আর যখন হুমায়ূন আহমেদের প্রথম পক্ষের সন্তানরা যখন আপত্তি জানালেন, বললেন মেহের আফরোজ শাওন, হুমায়ূন আহমেদের কবর হবে নুহাশপল্লীতে। তিনি আদালতে যাবেন। আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত হুমায়ূন আহমেদের মরদেহ বারডেমের হিমাগারে পড়ে থাকবে। আশা করি ঘটনাগুলো শুধু প্রবাসের পত্রিকা নয় বাংলাদেশের পত্রিকাতেও প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা ভাষার বরেণ্য লেখকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অমীমাংসিত প্রশ্নের জবাব আদায় করেছেন না বা এর কোন ব্যাখা দিচ্ছেন না তারা। ফলে হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যু নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক অবসান হচ্ছে না। |