পরকীয়ায় নয় দুশ্চিন্তা থেকেই সন্তানদের খুন করেন মা !
ডেস্ক:: রাজধানীর বনশ্রীতে ২ সন্তানকে নিজেই শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন মা মাহফুজা মালেক। তবে পরকীয়ার জেরে নয়, সন্তানদের পড়াশোনার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকেই তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
সকালে পরকীয়ার জের ধরে দুই শিশু হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জানালেও দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে ভিন্ন এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব। উত্তরায় র্যাবের সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে এ তথ্য জানান।
এর আগে সকালে র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা রুম্মন মাহমুদ গণমাধ্যমে পাঠানো এক খুদেবার্তায় জানিয়েছিলেন শিশুদের হত্যায় পরকীয়ার পাশাপাশি মা মাহফুজার মানসিক সমস্যা ও সম্পত্তিগত বিরোধও জড়িত। র্যাব ৩-এর কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, পরকীয়ার জেরেই নিজ সন্তাদের হত্যা করেছেন মা। বুধবার র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে মাহফুজা এ হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলেও জানান মোস্তাক আহমেদ।
দুপুর সোয়া ১টায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মুফতি মাহমুদ বলেন, ‘মা মাহফুজা মালেক ম্যানজেমেন্টে মাস্টার্স করেছেন। এ ছাড়া তিনি দুই বছর একটি কলেজে শিক্ষাকতাও করেন। তিনি উচ্চ শিক্ষিত হওয়ায় ছেলে মেয়ের পড়াশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ ছিলেন। এরই প্রেক্ষাপটে গত ২৯ তারিখ বিকেল সাড়ে পাঁচায় তাদের গৃহশিক্ষক চলে যাওয়ার পর নিজের বেডরুমে দু সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন মাহফুজা। ’
মুফতি মাহমুদ জানান, ‘মায়ের বেডরুমে ছেলে আলভি আগে থেকেই ঘুমানো ছিল। পরে মা মেয়ে অরণিকে ডেকে নেন তার রুমে। এরপর মেয়ের গলায় থাকা মায়ের উড়না দিয়ে প্রথমে গলায় উড়না প্যাঁচিয়ে মেয়েকে হত্যার চেষ্টা চালায়। এসময় দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তিও হয়। পরে মেয়েকে শ্বাসরোধ করে মারতে সমর্থ হয় মা। এরপর ছেলে আলিকে ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসরোধ করে মারা হয়।’
র্যাব জানায়, এর পর মাহফুজা স্বামী আমানউল্লাহ মালেককে সন্তানদের অসুস্থতার কথা বলে বাসায় আনেন। আমানউল্লাহ এসে সন্তানদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করে। বিরাণি খেয়ে বিষক্রিয়ায় সন্তানদের মৃত্যুর ঘটনা পুরোটাই মা মাহফুজার বানানো।
মুফতি মাহমুদ জানান, এ বিষয়ে এখন মামলার প্রস্তুতি চলছে। এরপর তদন্ত সাপেক্ষে আরো বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।
গত সোমবার বিকেলে বনশ্রীর ৪ নম্বর রোডের ৯ নম্বর বাসায় দুই ভাই-বোন সিদ্ধেশ্বরীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান অরণি (১৪) ও হলি ক্রিসেন্ট স্কুলের নার্সারির শিক্ষার্থী আলভি আমানের (৬) মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।