Main Menu

জীবন ও কাজে প্যাশন ফিরে পেতে ৫টি ধাপ

+100%-
unnamed“এই মেসেজগুলো কী আসতেই থাকবে? এর কি কোন শেষ নেই?”
সকালে অফিস ডেস্কে বসে মেইল চেক করতে গিয়ে রাগে ফেটে পড়লো নওরীন। দরকারী অদরকারী মেইলে ইনবক্স সয়লাব। আর কত ভালো লাগে এগুলো? অথচ একটা সময় নতুন মেইল এলে রীতিমত উত্তেজনা অনুভব করতো সে। একসময় যা ছিলো উত্তেজনাপূর্ণ, সময়ের পরিক্রমায় তাই এখন পানসে, এবং বিরক্তিকর। গিটারটা পড়ে থাকে ধূলোচ্ছন্ন হয়ে। প্রিয় জিন্সগুলো ধোয়া হয় না দিনের পর দিন। এভাবেই আনন্দের মৃত্যু ঘটে, কাঁধের ওপর জমা হয় বিশাল বোঝা। এর থেকে পরিত্রানের উপায় কী?
১। কিছু সময় বরাদ্দ রাখুন নিজের জন্যে
এ ক্ষেত্রে অনেকেই অভিযোগ করবেন যে তার সময় নেই, এত ব্যস্ততা…ইত্যাদি। এখানেই আমাদের ধারণাটা ভুল। বিরতি নেয়া মানে ব্যস্ত অফিসের জরুরী কাজ  মুলতবী রেখে ধানমন্ডি লেকে গিয়ে সাঁতার কাটা না। ব্যস্ততা যেহেতু অনিবার্য, তাই এর ভেতর ডুবে থেকেই নিজেকে সময় দিতে হবে। বেশি না, গোটা দিনে মিনিট বিশেক সময় তো দিতেই পারেন তাই না? এই সময়টায় মাথা থেকে ভারী ভারী সব চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। ব্যস্ততার গুমোট চশমাটা খুলে ফেলুন চোখ থেকে। নতুন এক পার্সপেক্টিভ থেকে নিজেকে দেখুন, কোথায় দাঁড়িয়ে আছেন আপনি? খুব একা? খুব বেশি স্ট্রেসড? নিজেকে ভালোবাসুন। বিশ্বাস স্থাপন করুন। নিজের প্রতি ভালোবাসার থেকে বিশ্বস্ত আর কিছু নেই এই পৃথিবীতে। আপনিই পারেন আপনার অন্তর্গত সৌন্দর্য আবিষ্কার করতে। আর নিজেকে এভাবে দেখলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে, নতুন কাজের জন্যে স্পৃহা পাওয়া যায়, মোটিভেশন জন্মায়। তাই নিজেকে ভালোবাসুন, সময় দিন।
২। ফিরে যান সেই সময়ে
আপনার দৈনিক বিরতির সময়টাতে সেই ফেলে আসা অতীতের নিজেকে দেখুন। সেই মানুষটা, যে তখন জীবন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা বিহীন, নার্ভাস, ছটফটে, ভীষণ স্বপ্নবাজ আর উদ্যমী, তাকে কতটা চিনতে পারছেন? মনে পড়ে, কিসে সবচেয়ে আনন্দ পেতেন? কী শিখতে চেয়েছিলেন? ভবিষ্যত ভাবনা কেমন ছিলো? নতুন অভিজ্ঞতা থেকে কী কী শিখেছিলেন?
নিজেকে অনুসন্ধানের এই সময়টাতে আপনি নিজের হারিয়ে যাওয়া অভ্যাস এবং আনন্দ খুঁজে পাবেন। বর্তমান ব্যস্ততা এবং ক্লান্তির আড়ালে ঢাকা পড়া অনুভূতিগুলোকে জীবন্ত করতে পারবেন।
৩। এবার ফিরে আসুন বর্তমানে
অতীত পরিভ্রমণ শেষ! এখন আপনার সময় হয়েছে বর্তমানে ফিরে আসার। এবার বর্তমানের সাথে অতীতের একটা তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে ফেলুন।
  • নতুন কী সব দায়িত্ব এবং চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন?
  • ব্যস্ততা বেড়ে গেছে অনেক? ক্লান্ত বোধ করছেন? কাজকে অযথা মনে হচ্ছে?
  • যে টার্গেটগুলো স্থির করেছিলেন, সেগুলো কি এখনো বলবৎ আছে, নাকি বদলে গেছে?
  • নতুন কিছু শিখছেন, নাকি সেই একঘেয়ে কাজই বারবার করে যাচ্ছেন?
  • আপনার প্যাশনের সাথে কর্মের সমন্বয় কেমন?
এসব তুলনা করার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন ঠিক কোন গলদ বা খামতির কারণে এই ক্লান্তি এবং একঘেয়েমী আপনার জীবনকে উদ্দীপনাহীন করে তুলেছে।
৪। ভাবনার গঠনে পরিবর্তন আনুন
আপনি এখন সেই কারণগুলো অনুধাবন করছেন, যার জন্যে এই একঘেয়ে এবং বিরক্তিকর কর্মজীবন। এখন আপনি কি করবেন? অভিযোগ করবেন? দুঃখে ভেঙে পড়বেন? কবে কাজ থেকে মুক্তি নিয়ে অবসর জীবনের সীমাহীন অলসতা উপভোগ করবেন তার ছক কষবেন?
এরকমটা করে আসলে খুব বেশি লাভ হবে না। যে কর্মে আপনার অরুচি, সেই কর্মের মাঝেই আপনার মুক্তি নিহিত। তার চেয়ে এসব ট্রাই করুন-
আপনি জানেন আপনি কি চান। আপনি জানেন কী হারিয়েছেন। সুতরাং, এখনই সময় পরিবর্তন আনার।
আপনার আগ্রহ এবং ভাবনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিছু কাজের অর্ডার দিন নিজের ওপর। এই ছোটখাট কাজগুলি সুন্দরভাবে করার মাধ্যমে নিজের প্রতি বিশ্বাস এবং আস্থা ফিরে পাবেন।
নতুন কিছু শিখুন, জানুন এবং এ্যাপ্লাই করুন।
কী করবেন, কী করছেন, কী করলে ভালো হবে এসব ব্যাপারে গাইড দেয়ার মত একজন মেন্টর খুঁজে বের করুন।
অবসর সময়ে বিশেষ কোন গ্রুপ বা কাল্টের সাথে সময় কাটাতে পারেন। যেমন ধরুন, পায়রা পোষা গোষ্ঠী, অথবা গিটারবাদক গ্রুপ; যেটা আপনার ভালো লাগে।
৫। চেকপয়েন্ট নির্ধারণ করুন
যা যা করছেন, সেগুলো নথিনদ্ধ করুন, এবং শেষ হবার পর চেকপয়েন্টে টিক দিন। এটা আপনার মধ্যে একটি সন্তুষ্টির বোধ এনে দেবে। আপনার ব্যক্তিগত চেকলিস্টের নোটবুকটা হতে পারে দামী এবং আকর্ষণীয়। নানা রঙ ব্যবহার করুন  এবং নানা রকম ডিজাইন দিন নিজের খেয়াল খুশিমত। যেন বারেবার ফিরে আসতে ইচ্ছা করে সেটির দিকে।





Shares