ভুল খবর শুনছি না তো। কেউ হয়তো ঠাট্টা করছে!
কয়েক সপ্তাহ আগে খবরটা পেয়ে ঠিক এ রকমই মনে হয়েছিল নাদিয়া জামির হুসেনের। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি এই কন্যা গত বছর সাহেবদের মুলুকে ইংরেজদের গো-হারান হারিয়ে সেরার শিরোপা জিতেছিলেন কেক বানানোর প্রতিযোগিতায়।
‘বেকিং কুইন অব ব্রিটেন’ উপাধি জিতে সে বার চমকে দিয়েছিলেন সবাইকে। সেই বাঙালি কন্যাকেই এ বার বেছে নেওয়া হয়েছিল ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ৯০তম জন্মদিনের কেক তৈরির জন্য। ডাক আসতেই থরহরিকম্প নাদিয়ার। কিন্তু ভয়ে পেয়ে পালিয়ে আসার মেয়েও নন তিনি। স্বামীর কথায় সাহস সঞ্চয় করে চ্যালেঞ্জটা নিয়েই ফেলেন।
গত বছর বেকিং প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে নাদিয়ার বানানো কেকটা ছিল রানির টুপির আদলে। দুধসাদা রং। গায়ে জড়ানো সোনালি ফিতে আর মুক্তোর মালা। মাথায় লাল ফুল। কিন্তু রানির জন্মদিনের জন্য কেমন কেক ঠিকঠাক হবে— কিছুতেই মাথায় আসছিল না নাদিয়ার। প্রথমে ভেবেছিলেন আঙুরের স্বাদের কেক বানালে কেমন হয়! কিন্তু যদি রানির ভাল না লাগে। তাই অনেক ভেবে কমলালেবুর স্বাদের কেক বানানোরই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নাদিয়া। রানির পছন্দ হবে কি না, সে নিয়ে খুঁতখুঁতুনিটা অবশ্য মনের কোণে রয়েই গিয়েছিল।
কারণ কেমন স্বাদের কেক বানাতে হবে, তা নিয়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারের তরফ থেকে কোনও নির্দেশই পাননি নাদিয়া। শুধু বলা ছিল, ফ্রুট কেক বানানো চলবে না! এইটুকু মাথায় নিয়ে নাদিয়া নামলেন অভিযানে। রানির কেক বলে কথা! তাই কেক-স্রষ্টার অকপট মন্তব্য, ‘‘তিন স্তরের ওই কেক বেক করার সময়েও বেশ নার্ভাস লাগছিল। হাত-পা কাঁপছিল।’’
শেষমেশ সব উতরেছে ভাল ভাবেই। কেক দেখে হাসি ফুটেছে খোদ রানির মুখে। তাতে উচ্ছ্বসিত নাদিয়াও। উইন্ডসরের গিল্ডহলে অনেক অতিথির ভিড়ে নাদিয়াকে পাশে নিয়েই তিন তলা সেই কেকে ছুরি ছুঁইয়েছেন রানি।