ডিজিটাল ভিক্ষুক: আছে নিজস্ব ওয়েবসাইট, ক্রেডিট কার্ড
তিনি ভিক্ষুক। তার কোন বাড়িঘর নেই। থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রোয়েটের রাস্তায়। এভাবেই কেটে যাচ্ছে তার এক দশক। ভিক্ষা করলে কি হবে তার রয়েছে নিজস্ব ওয়েবসাইট।
আছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম লিঙ্কডইন-এ একাউন্ট। আর ভিক্ষা নেন ক্রেডিট কার্ডে। অদ্ভুত এই ভিক্ষুকের নাম আবে হ্যাগেনস্টোন (৪২)।
এক দশক আগে ডেট্রোয়েটে ব্যস্ত মার্কেটের পাশে সড়কে একটি ফাঁকা জায়গা দেখে সেখানে বসে পড়েন তিনি। সেই থেকে সেখানেই তার ঘরবাড়ি। সেখানে বসেই ভিক্ষা করে যাচ্ছেন।
যেহেতু তিনি ভিসা, মাস্টার কার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেসের মাধ্যমে ভিক্ষার অর্থ গ্রহণ করেন, আছে নিজের ওয়েবসাইট তাই তাকে কেউ কেউ ডিজিটাল ভিক্ষুক হিসেবে অভিহিত করেন। ভিক্ষায় তিনি ব্যবহার করেন মোবাইল ফোনও। এর মাধ্যমে কার্ডের অর্থ প্রক্রিয়াজাত করেন।
ক্রেডিট কার্ডকে পড়তে পারে এমন একটি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে তিনি দান করা অর্থ নিজের ব্যাংক একাউন্টে জমা করেন। তার ফোনের নাম দিয়েছেন ‘ওবামাফোন’। এ ফোনটি তাকে সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের লাইফলাইন অ্যাসিসট্যান্স প্রোগ্রাম।
এখানেই শেষ নয়। তিনি দান করা অর্থ সংগ্রহ করেন লিঙ্কডইন পেজ ও তার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। ওয়েবসাইতে তিনি বিজ্ঞাপন দিয়েছেন ছোটখাট কাজ হলেও তিনি করতে চান। এ সাইটের মাধ্যমে তিনি নতুন পরিকল্পনা করছেন। গৃহহীন মানুষের জন্য তিনি একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চান, যারা ছোটখাট কাজ খুঁজে ফিরছেন। এসব মানুষকে যেন তাদের পছন্দমতো কাজ জুটিয়ে দেয়া যায় সে জন্য তার এ লক্ষ্য।
তিনি বলেন, আমার কাজকর্ম হলো গৃহহীন মানুষদের নিয়ে। যদি বছরের প্রতিদিন প্রতিজন পূর্ণ বয়স্ক মার্কিনির অর্ধেক এক পেনি করে দান করেন তা দিয়েই এটা করা সম্ভব। নিজের ব্লগে তিনি লিখেছেন, আমি নিজে যদি নিজেকে রাজপথ থেকে স্থায়ীভাবে প্রত্যাহার করতে পারি তাহলে আমি আরও একজনকে সহায়তা করতে পারবো। তারপর আরও একজনকে।
তিনি এখানেই থেমে থাকেন নি। এমন একটি অ্যাপ বানাচ্ছেন যা ভুয়া গৃহহীন মানুষকে সনাক্ত করতে পারবে। সনাক্ত করতে পারবে যে তারা আসলেই বেকার, তাদের মাথার ওপর ছাদ আছে কিনা। এ অ্যাপ ব্যবহার করে তিনি প্রকৃত ও ভুয়া গৃহহীন মানুষের একটি ডাটাবেজ তৈরি করতে চান