কয়েক হাজার বছরের পুরোনো লাশ এবং কয়েকটি বাস্তব নিদর্শন।



একজন ভদ্রলোকের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এই পোষ্টঃ তিনি বলেনঃ-
দয়া করে আবারও একটু খেয়াল করে চিন্তা করে দেখেন, কোরআনের আলৌকিকতা নিয়ে আলেচনা এবং বিতর্ক হওয়া টা খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। একজন মানুষ, শুধু মাত্র সে বলল যে সে ঈশ্বরের সাথে কথা বলেছেন বা ঈশ্বরের কাছ থেকে মেসেজ পেয়েছেন সেটা আমাকে এক ধাক্কায় বিশ্বাস করে নিতে হবে ? বিশ্বাস করে নিয়ে এরপর বিশ্বাসের চশমা দিয়ে মেসেজগুলোর বিচার করতে হবে ?
———————————————————————————-
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ- পবিত্র কোরআনে, সূরা-আরাফ, আয়াত-৬৯. ‘তোমরা কি আশ্চর্য হচ্ছো যে, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তির নিকট উপদেশ এসেছে, যাতে সে তোমাদেরকে সতর্ক করে? আর তোমরা স্মরণ কর, যখন তিনি তোমাদেরকে নূহের কওমের পর স্থলাভিষিক্ত করেছিলেন এবং সৃষ্টিতে তোমাদেরকে দৈহিক গঠন ও শক্তিতে সমৃদ্ধ করেছেন। সুতরাং তোমরা স্মরণ কর আল্লাহর নিআমতসমূহকে, যাতে তোমরা সফলকাম হও’।
———————————————————————————-
*(হে আল্লাহ আমাদের ক্ষমা কর, জানি আপনার কথার বিচার করার বিন্দুমাত্র যোগ্যতা আমাদের নেই)*
আসুন এবার বিশ্বাসের চশমা দিয়ে কোরআনের মেসেজগুলোর যাচাই করি।
আল্লাহ তায়ালা যদি মেসেজ না দিয়ে থাকেন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে তাহলে কি ভাবে আমরা জানলাম এই কথাগুলো?
পবিত্র কোরআনে, সূরা- ইউনুস, আয়াত ৮৮-৯২,
‘আর মূসা বলল, ‘হে আমাদের রব, আপনি ফির’আউন ও তার পারিষদবর্গকে দুনিয়াবী জীবনে সৌন্দর্য ও ধন-সম্পদ দান করেছেন। হে আমাদের রব, যাতে তারা আপনার পথ থেকে গোমরাহ করতে পারে। হে আমাদের রব, তাদের ধন-সম্পদ নিশ্চিহ্ন করে দিন, তাদের অন্তরসমূহকে কঠোর করে দিন। ফলে তারা ঈমান আনবে না, যতক্ষণ না যন্ত্রণাদায়ক আযাব দেখে’।
‘তিনি বললেন, ‘তোমাদের দো’আ কবূল করা হয়েছে। সুতরাং তোমরা দৃঢ় থাক এবং যারা জানে না তাদের পথ অনুসরণ করো না’।
‘আর আমি বনী ইসরাঈলকে সমুদ্র পার করিয়ে নিলাম। আর ফির’আউন ও তার সৈন্যবাহিনী ঔদ্ধত্য প্রকাশ ও সীমালঙ্ঘনকারী হয়ে তাদের পিছু নিল। অবশেষে যখন সে ডুবে যেতে লাগল, তখন বলল, ‘আমি ঈমান এনেছি যে, সে সত্তা ছাড়া কোন ইলাহ নেই, যার প্রতি বনী ইসরাঈল ঈমান এনেছে। আর আমি মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত’।
‘এখন অথচ ইতঃপূর্বে তুমি নাফরমানী করেছ, আর তুমি ছিলে ফাসাদকারীদের অন্তর্ভুক্ত’।
‘সুতরাং আজ আমি তোমার দেহটি রক্ষা করব, যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাক। আর নিশ্চয় অনেক মানুষ আমার নিদর্শনসমূহের ব্যাপারে গাফেল’।
উপরের ঐ মেসেজ থেকে প্রমান পাওয়া যায় যে ফির’আউনকে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা পানিতে ঢুবিয়ে মৃত্যু দান করেন।
তারপর ঐতিহাসিকগন ১৮৯৮ সালে ফিরআওনের লাশ উদ্ধার করে। যা আজ মিসরের কাইরূতে দ্যা রয়েল মুমী হলে একটি কাচের সিন্দুকের মধ্যে রয়েছে। এর দৈর্ঘ ২০২ সেন্টিমিটার। ফিরআওনের লাশ ১২৩৫ খ্রিষ্টাব্দপূর্বে লাপাত্তা ছিল। ৩১১৬ বছর পরেও পানির নিচে থাকা সত্তেও তার লাশের কোনো পচন ধরে নি। তবে ইতিহাসবীদদের ধারনা অনুযায়ি রামেসীস ২ -কে ফিরআওন বলে গন্য করে।
***অবিশ্বাসীরা গিয়ে দেখে আসতে পারেন। লাস এখনো মেহফুজ।*****
———————————————————————————-
আদ কর্তৃক তাদের বসদ নির্মাণ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ- পবিত্র কোরআনের, সূরা-ফাজর, আয়াত-৬,৭,৮,৯,
তুমি কি দেখনি তোমার রব কিরূপ আচরণ করেছেন ‘আদ জাতির সাথে?
ইরাম গোত্রের সাথে, যারা ছিল সুউচ্চ স্তম্ভের অধিকারী?
যার সমতুল্য কোন দেশে সৃষ্টি করা হয়নি।
আর সামূদ সম্প্রদায়, যারা উপত্যকায় পাথর কেটে বাড়ি ঘর নির্মাণ করেছিল?
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেনঃ- পবিত্র কোরআনের, সূরা-আরাফ, আয়াত-৭২. অতঃপর আমি তাকে ও তার সাথে যারা ছিল, তাদেরকে আমার পক্ষ থেকে রহমত দ্বারা রক্ষা করেছি এবং তাদের মূল কেটে দিয়েছি, যারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করেছিল। আর তারা মুমিন ছিল না।
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাদের নাফরমানির কারনে তাদেরকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিয়েছেন। আদ সমপ্রদায় হাত দিয়ে পাথর কেটে ঘর নির্মান করেছিল। তা আজ সাউদি আরবের মাদীনা থেকে তাবুক যেতে রাস্তার পাশে অবস্থিত। বাস্তব প্রমান দেখে আসতে পারেন।
———————————————————————————-
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ- পবিত্র কোরআনের, সূরা-হুদ, আয়াত-৭৭.৮১, আর যখন লূতের কাছে আমার ফেরেশতা আসল, তখন তাদের (আগমনের) কারণে তার অস্বস্তিবোধ হল এবং তার অন্তর খুব সঙ্কুচিত হয়ে গেল। আর সে বলল, ‘এ তো কঠিন দিন’।
তারা বলল, ‘হে লূত, আমরা তোমার রবের প্রেরিত ফেরেশতা, তারা কখনো তোমার কাছে পৌঁছতে পারবে না। সুতরাং তুমি তোমার পরিবার নিয়ে রাতের কোন এক অংশে রওয়ানা হও, আর তোমাদের কেউ পিছে তাকাবে না। তবে তোমার স্ত্রী (রওয়ানা হবে না), কেননা তাকে তা-ই আক্রান্ত করবে যা তাদেরকে আক্রান্ত করবে। নিশ্চয় তাদের (আযাবের) নির্ধারিত সময় হচ্ছে সকাল। সকাল কি নিকটে নয়’?
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেনঃ- পবিত্র কোরআনের, সূরা-হিজর, আয়াত-৭৩,৭৪,
অতএব সূর্যোদয়কালে বিকট আওয়াজ তাদের পেয়ে বসল।
অতঃপর আমি তার (নগরীর) উপরকে নিচে উলটে দিলাম এবং তাদের উপর বর্ষণ করলাম পোড়া মাটির পাথর।
দুনিয়াতে তারা ছিল নির্লজ্জ এক জাতি যারা সমকামিতাই লিপ্ত ছিল। তাদের অপকর্মের কারণে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে উলটে জমিনের নিচে দাফন করে দিলেন। যে স্থানটি আজ মৃত সাগর( Dad sea) নামে পরিচিত। যা আজ অবিশ্বাসীদের জন্য নির্দশনসরূপ বাস্তব প্রমান দেখে আসতে পারেন। ফিলিস্তিন এবং জরদানের মধ্যবর্তি সীমান্ত এলাকায়।
=============================================
উপরের বর্ণিত কয়েক হাজার বছর পুরোনো ঘটনা থেকে কি এটা প্রমানিত হয় না যে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কাছে মেসেজ প্রেরণ করেছেন সর্বশক্তিমান স্রষ্টা। এছাড়াও পবিত্র কোরআনে আরো অনেক ঘটনা আছে যা এখানে লিখে শেষ করা যাবে না।