Main Menu

মেঘনা নদী থেকে নবীনগরে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে চাদা দাবি:: সন্ত্রাসীদের গুলিতে ২ জন গুলিবিদ্ধ!

+100%-
মিঠু সূত্রধর পলাশ, নবীনগর প্রতিনিধি:: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের গুলিতে ২ জন বালু শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধরা হলেন উপজেলার ধরাভাঙ্গা গ্রামের মকবুল হোসেন (৪৩) ও মুক্তারামপুরের সোহেল মিয়া (৩২)। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত দুজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের সোনাবালুয়া ঘাট এলাকায় গতকাল রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই মো. এমরান হোসেন আজ সোমবার সকালে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের জাফরাবাদ মৌজায় অবস্থিত মেঘনা নদী থেকে সম্প্রতি বালু উত্তোলনের ইজারা পায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ শোভনের মালিকানাধীন মুন্সি এন্টার প্রাইজ। ইজারা পাওয়ার পর মেঘনা নদীর জাফরাবাদ ও নতুন চর বালু মহাল থেকে বালু উত্তোলন শুরু করে ইজারাদারের লোকজন। কিন্তু ইজারাদারের লোকজনের অভিযোগ, বালু উত্তোলন শুরুর পর থেকে মেঘনা নদীর ওপারে অবস্থিত নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার তীর ঘেঁষে কিছু লোক (বালু ব্যবসায়ী) এই এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করতে গেলে তাদের (রায়পুরা) মোটা অংকের চাঁদা দিতে হবে বলে বারবার দাবি করে আসছিলেন।
এলাকার লোকজন জানান, এ অবস্থায় গতকাল রবিবার সন্ধ্যার পরপর মেঘনা নদীর অপর প্রান্ত থেকে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা ৩/৪টি স্পীডবোটযোগে নদীর নবীনগর প্রান্তে এসে বালু মহালের ক্যাশ কাউন্টারে হামলা চালায়। এসময় শ্রমিকদের উপর অতর্কিতভাবে গুলি ছুঁড়তে থাকে সন্ত্রাসীরা। এতে ঘটনাস্থলে বালু শ্রমিক মকবুল হোসেন ও সোহেল মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। এদেরকে পরে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে বালু মহালের ইজারাদার জেলা ছাত্রলীগ নেতা শাহাদাৎ হোসেন শোভন বলেন, ‘ইজারা পাওয়ার পর বালু উত্তোলনের শুরু থেকেই নদীর অপর প্রান্তে থাকা রায়পুরা উপজেলার কিছু সন্ত্রাসী আমাদের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছিলো। চাঁদা না দেওয়ায়, সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গতকাল আচমকা হামলা চালিয়ে ২ জনকে গুলিবিদ্ধ করে পালিয়ে যায়। আমরা এ বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা নেবো।’
এ বিষয়ে রায়পুরার চরমধুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহসান শিকদার দৈনিক যুগান্তরকে বলেন, ‘এই বালু মহালে ৩% শেয়ার সূত্রে আমিও মালিক। এই ঘটনা আমি শুনেছি কিন্তু কে বা কারা এই হামলা চালিয়েছে আমার জানা নেই। তবে আমি এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি’।
স্থানীয় ধরাভাঙ্গা গ্রামের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন,’আমরা এখন আতংকিত। অন্য উপজেলা থেকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গতকাল ৩/৪টি স্পীডবোট নিয়ে মেঘনা নদী যুগে যেভাবে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে আমাদের এলাকায় প্রবেশ করতে শুনেছি, এরপর এসব চাঁদাবাজদের হাতে আমরা কতটা নিরাপদ থাকতে পারবো, সেটিই এখন ভাবছি।’
এ বিষয়ে রায়পুরা এলাকার কয়েকজন বালু ব্যবসায়ীর সাথে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নবীনগরের ইউএনও তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন,’ঘটনাটি রাতেই শুনেছি। এ বিষয়ে গুলী বর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশকে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে নবীনগর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম আজ সকালে বলেন,’গুলাগুলির ঘটনার পর এলাকার পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ শান্ত রয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন আছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।