নবীনগরে ড্রেজার দ্বারা বালু উত্তলনের ফলে নদী ভাঙ্গন : সর্বহারা পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে



নবীনগর প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার পশ্চিম ইউনিয়নে মেঘনা নদীর তীরবর্তী চরলাপাং গ্রামে গত বছর নদী ভাঙ্গনের কবলে পরে আধাপাঁকা ১০টি বাড়ি-ঘর, ছোট-বড় প্রায় ১৫টি দোকানপাট নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। এ বছরও প্রায় ২০টি ঘর বিলিন হওয়ার পথে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেঘনা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় এবং ড্রেজার দ্বারা অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে এবং ভাঙ্গনের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিপূর্বেও গ্রামের একটি বড় অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে এ ভাবে ড্রেজার দিয়ে সিন্ডিকেটে বালু ব্যবসায়ীরা বালু উত্তোলন করার ফলে গ্রামটি ভেংগে যাচ্ছে, সর্বহারা হচ্ছেন গ্রামটির সাধারণ মানুষ।
৬টি মৌজা নিয়ে সৃষ্ট এ গ্রামটি তিনটি মৌজা ১,২,৩ সীটটি আগেই বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে চরলাপাং মৌজার ৪, ৫, ৬ নং সীটের মধ্যে কিছু অংশ গত বছর বিলীন হয়ে গেছে বাকি অর্ধেকাংশ এ বছর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। আরো প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা নদী ভাঙ্গন কবলের শিকারের মধ্যে আছে। বর্তমানে গ্রামের যে অংশটুকু ভাংগনে আশংকায় আছে সে সকল অংশের মানুষ তাদের বাড়ি ঘর সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, জরুরী ভিত্তিতে সুরক্ষাবাদ নির্মাণ ও অবৈধ ভাবে বলু উত্তলন বন্ধ করা না হলে আগামী ২ বছরে মধ্যে গ্রামের অস্তিতই পাওয়া যাবে না। নবীনগর উপজেলার মানচিত্র থেকে গ্রামটি হারিয়ে যাবে। নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়া অসহায় পরিবারগুলো তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বেচেঁ থাকার লড়াই করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত জিয়াউর রহমান, আহমেদ মিয়া, খবির মিয়া, কিবরিয়া মিয়া, ভানু মিয়া, স্বপন মিয়া, জাহেরা খাতুন, মলাই মিয়া, ডা: নাছির, বাশার মিয়া, জাকির, সাদিক, মনিরসহ আরো অনেকে তাদের কষ্টের জীবন যাপনের চিত্র তুলে ধরে গ্রামটি রক্ষায় সরকারের আশু পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য আকুল আবেদন জানান।
স্থানীয় হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোর্শেদুল ইসলাম লিটন জানান, চরলাপাং ও দড়ি গ্রামের শেষ অস্তিত রক্ষার জন্য বিগত এক সভায় স্থানীয় সংসদ কঠোর হুশিয়ারের পরও আজ পূর্যন্ত অবৈধ বালু উত্ত্যলন বন্ধ হয়নি।এ বিষয়ে সর্বশেষ গতকাল (১৬/০৭) নবীনগর থানা পুলিশ বাধা প্রধান করলেও তা আমলে নিচ্ছেনা বালু ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালেহীন তানভীর গাজী জানান, এ বিষয়ে খোজ খবর নিয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তিনি নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়্যারম্যানকে বলেছেন। প্রতিবেদন পাবার পর পরবর্তী ব্যবস্হা গ্রহন করা হবে।