আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দিতে ও টাকা নেয়ার অভিযোগ চেয়ারম্যান কবিরের বিরুদ্ধে
অভিযোগ যেন পিছু ছাড়ছেনা নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির আহমেদের। এবার বীরগাঁও ইউনিয়নে “আশ্রয়ণ প্রকল্প-২” এর ঘর বরাদ্দের তালিকায় নাম উঠাতে, ঘর নির্মাণে ও মাটি কাটার শ্রমিকের চাকরি দিতে অর্থ নেয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে । গত ২ জুন এমন ২০ জন ভুক্তভোগীর স্বাক্ষর সম্বলিত একটি আবেদন জমা দেয়া হয়েছে নবীনগর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার কার্যালয়ে।
বীরগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হোসেন সরকার অভিযোগটি করেছেন।
অভিযোগ পত্র সূত্রে জানা গেছে,”আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার” স্লোগানকে সামনে রেখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার সারাদেশের মতো নবীনগর উপজেলায়ও দরিদ্র ও গৃহহীনদের জন্য ঘর বরাদ্দ দেয়। সেই ঘর বরাদ্ধ দিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কবির আহমেদ ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। ঘর প্রতি তিনি দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন জনপ্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। এমনকি ঘর আছে, অবস্থা ভালো এমন লোকদের ও টাকার বিনিময়ে তিনি ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন ।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, ঘর বরাদ্দের কথা বলে পুরো ইউনিয়নের প্রায় ২০০ পরিবারের কাছ থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান কবির আহমেদ । সুদের উপর ও ধারকর্য করে দরিদ্র মানুষেরা চেয়ারম্যানকে টাকা দিয়েছেন। অনেক পরিবার আজ পর্যন্ত তাদের বরাদ্দকৃত ঘর পায়নি এমনকি তাদের দেওয়া টাকাও ফেরত পায়নি।
ঘরের জন্য চেয়ারম্যান টাকা নিয়েছে কিন্তু ঘর বরাদ্দ করেনি বীরগাঁও ইউনিয়ন এর ১,২,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের এমন ২০ জন ভুক্তভোগীর স্বাক্ষরসহ নামের তালিকা ও দরখাস্ততে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে চেয়ারম্যান মোট ২ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা নিয়েছেন। এমন বহু দরিদ্র মানুষ আছে যারা চেয়ারম্যানকে টাকা দিয়ে তার কাছে জিম্মি থাকার ফলে ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না বলেও অভিযোগপত্রে বলা হয়।
সরকার প্রদত্ত যেকোনো সুবিধাভোগীদের তালিকায় নাম উঠাতে চেয়ারম্যান ও তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা বিশাল অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে মাটি কাটার সরকারি চাকরি দেবে বলে ১ নং ওয়ার্ডের শিবপুর গ্রামের আসমা বেগমের কাছ থেকে কামরুল মেম্বার ও কবির চেয়ারম্যান ৩০,০০০ টাকা নিয়েছেন। এছাড়াও ৯ নং ওয়ার্ডের নজরদৌলত গ্রামের রিনা বেগম, সাহিদা বেগম, রাশিয়া বেগম, মোমেনা ও রানু বেগমসহ ৬ জনের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নিয়েছে কবির চেয়ারম্যান। শুধু তাই নয় পুরো ইউনিয়ন জুড়ে দরিদ্র মানুষেরা বিভিন্ন কাজে তাকে টাকা প্রদান করেছেন। তাই ভুক্তভোগীদের এজন্য দুর্দশার কথা বিবেচনা করে অতিসত্বর এই দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সেই আবেদনপত্রে দাবি জানানো হয়।
অভিযোগকারী হোসেন সরকার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশ থেকে দারিদ্রতা দূর করতে চান। সে জন্য তিনি নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু দূর্নীতির জন্য তার সুফল সাধারণ মানুষ পায় না। আমি চাই এর সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষিদের আইনের আওতায় আনা হোক যাতে সরকারের নেয়া উদ্যোগগুলোর সুফল সবাই ভোগ করতে পারে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম বলেন, ইতিমধ্যে ওই চেয়ারম্যানের একটি দূর্নীতির বিষয়ে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিয়েছি। কোন অনিয়ম দূর্নীতি সহ্য করা হবে না। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি।