নবীনগর আওয়ামীলীগ নেত্রী স্বপ্না আক্তার হত্যার এক বছর পেরিয়ে গেলেও তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই
নবীনগর প্রতিনিধি: গত বছরের ২২ নভেম্বর দূর্বৃত্তদের হাতে খুন হন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা স্বপ্না আক্তার (৪০)। ঘটনার এক বছর পেরিয়ে গেলেও আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্তে নেই কোনো অগ্রগতি। হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে। এর ফলে সুষ্ঠু বিচার পাওয়া নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন স্বপ্নার পরিবার।
আদৌ এ হত্যাকান্ডের বিচার হবে কিনা সে প্রশ্নও উঁকি দিচ্ছে সবার মনে। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছে নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগও।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২২ নভেম্বর নবীনগর উপজেলার সাতমোড়া ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন থেকে সিএনজি অটোরিকশায় করে নিজ বাড়ি জিনোদপুর ইউনিয়নের চারপাড়া গ্রামের ফিরছিলেন স্বপ্না। পথিমধ্যে রাত ৯টার দিকে অটোরিকশাটি বাঙ্গরা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এলে যাত্রীবেশে থাকা দুর্বৃত্তরা তার মাথায় গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় ওইদিন মধ্যরাতেই স্বপ্নার ছোট ভাই আমির হোসেন বাদী হয়ে স্থানীয় বাঙ্গরা উত্তরপাড়ার আপন, বিল্লাল, নাহিদ ও মেরকুটা এলাকার যুবলীগ নেতা আলমগীর এবং চারপাড়ার সাঈদ ও নাজিম উদ্দিনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে তাদের সঙ্গে স্বপ্নার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক বিরোধ ছিল বলে উল্লেখ করা হয়।
এরপর আনোয়ার হোসেন, শিহাব ও নাছিম সরকার নামে আরও তিনজন হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে আমির হোসেন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এদের মধ্যে আনোয়ার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। আট মাস কারাভোগের পর আনোয়ার জামিনে মুক্ত হন।
তবে এ হত্যাকান্ডে একটি শক্তিশালী পক্ষের মদদ থাকার অভিযোগ রয়েছে। রাঘব-বোয়ালদের জড়িত থাকার তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু হলে মামলা নিয়ে তোড়জোড় কমে আসে বলেও অভিযোগ উঠেছে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলাটি পাঁচ মাস পর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর হয়।
মামলার বাদী আমির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, মামলার তদন্ত কাজে এখন কোনো গতি নেই। সিআইডিকে খবর দিলেও তারা আসামি ধরে না। কার ইশারায় আসামি ধরা পড়ছে না সেটিও আমরা বুঝতে পারছি না। আদৌ আমার বোন হত্যার বিচার পাবো কি না সেটিই এখন সন্দেহ।
নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এড.সুজিত কুমার দেব বলেন,স্বপ্নার মৃত্যুতে আমরা ভালো একজন সাংগঠনিক কর্মীকে হারিয়েছি। নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের জন্য স্বপ্নার মৃত্যু বিরাট ক্ষতি। হত্য মামলাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শস্তির দাবি জানান তিনি।