নবীনগরে ডাক্তারের অবহেলায় শিক্ষকের মৃত্যু



নবীনগর, প্রতিনিধি :: উপজেলার পৌর এলাকার ডাক্তারের অবহেলায় মির্জাচর উচ্চ বিদ্যালরের সহকারি শিক্ষক ও সাবেক ইউপি মেম্বার আব্দুল কাশেম (৬০) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর রোগীর আত্মীয়-স্বজন সহ শতশত জনতা হাসপাতাল ঘেরাও করলে কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্স সহ কতৃপক্ষের লোকজন পালিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটে বুধবার রাতে পৌর এলাকার মা হাসপাতাল এন্ড ডায়গনষ্টিক সেন্টারে। পরে ঘটনা ধামাচাপা দিতে আড়াই লক্ষ টাকায় রফাদফা করা হয় বলে জানা যায়।
সরেজমিনে মৃতের আত্মীয় ও উপস্থিত জনতার সাথে কথা বলে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে পার্শ্ববর্তী রায়পুরা উপজেলার মির্জাচর গ্রামের পদ্ম পাড়ার বাসিন্দা ও মির্জাচর উচ্চ বিদ্যালরের সহকারি শিক্ষক ও সাবেক ইউপি মেম্বার আবদুল কাশেম পেটের পিড়া নিয়ে মা হাসপাতালে আসেন। থানার গেইট সংলগ্ন ওই হাসপাতালে কর্তব্যরত ডা: আব্দুল্লাহ আল মামুন তাৎক্ষনিক পাঁচটি ইনজেকশন পুশ করলে সাথে সাথে রোগীর মৃত্যু ঘটে।
মৃত্যুর পর ওই ডাক্তার সহ হাসপাতালে কর্তব্যরত কর্মচারি সবাই পালিয়ে যায়। এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ওই রোগীর আত্মীয় স্বজন সহ শতশত জনতা হাসপাতাল ঘেরাও করে এবং ওই ডাক্তারের বিচার দাবী করে। তাছাড়া ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের যোগ্যতা সহ হাসপাতালের গুনগত মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেন উপস্থিত জনতা। প্রশিক্ষনবিহীন নার্স ও কর্মচারী দিয়ে এলাকার প্রাইভেট হাসপাতালগুলি পরিচালিত হয় বলেও অনেকেই অভিযোগ করেন। শুধু তাই নয় নবীনগর সরকারি হাসপাতালের বিভিন্ন ডাক্তার ও এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ক্লিনিক ব্যাবসার সাথে জড়িত বলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে ম্যানেজ করা বলে জানান উপস্থিত শতশত জনতা।
পরে বিষয়টি আড়াই লক্ষ টাকায় রফাদফা হয় বলে মৃতের পরিবারের লোকজন নিশ্চিত করেন। এছাড়া গত কয়েকমাস আগেও একই ঘটনায় মা হাসপাতালে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়। ওই ঘটনাও প্রায় দেড়লক্ষ টাকার বিনিময়ে রফাদফা হয়। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ধামাচাপার করণে অভিযুক্তরা একের পর এক ঘটনায় পার পেয়ে যায় বলে দাবী করেন এলাকাবাসী।
মৃতের ভাতিজা আবু কাউছার ও রাসেল মিয়া কান্নাজনিত কন্ঠে জানান, আমার চাচার বুকে হালকা ব্যাথা নিয়ে বাড়ি থেকে হেঁটেই মা হাসপাতালে আসেন। ডাক্তারকে না করার পরও তিনি বেশ কয়েকটি ইনজেকশন পুশ করলে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় তাৎক্ষনিক আমার চাচা মারা যান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল মামুন ভুল চিকিৎসার কথা অস্বীকার করে বলেন, ওই রোগীর হার্টএটাক হয়েছিল। রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পরও অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়। কিন্তু হার্টের এতটাই অবনতি ঘটেছিল যে, ওই রোগীর লোকজন এম্বুলেন্স আনার পূর্বেই মারা যায়।
এ ঘটনার ব্যাপারে ওসি মো: আবু জাফরের কাছে জানতে চাইলে অভিযোগ না পাওয়ার কথা বলে তিনি এড়িয়ে যান।