নবীনগরে সরকারি পুকুর ফের ভরাটের পাঁয়তারা ! প্রতিকার চেয়ে আবেদন
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা সদরের পশু হাসপাতাল সড়কে অবস্থিত কয়েক কোটি টাকা মূল্যের একটি সরকারি পুকুর (অর্পিত সম্পত্তি) ফের বালি ফেলে ভরাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভূয়া জাল দলিলের মাধ্যমে মালিকানা দাবি করে একটি মহল ওই পুকুর ভরাট করে সেটি দখলের আবারও পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে সম্প্রতি বাপ্পি ঘোষ নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা সহকারি কমিশনারের (ভূমি) কাছে আবেদন করেছেন।
প্রাপ্ত অভিযোগ থেকে জানা যায়, মূল্যবান ৮৮ শতকের (দাগ নম্বর-২০৪০,২০৪১,২০৪২) ওই সরকারি পুকুরটি অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভূক্ত হওয়া সত্বেও কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ভূয়া জাল দলিল ও লিজের মাধ্যমে পুকুরটির মালিকানা দাবী করে আসছে। সম্প্রতি পুকুরের মালিকানা দাবিদাররা সরকারি এই পুকুরটি ফের বালি ফেলে ভরাটের পাঁয়তার শুরু করেছে। শুক্রবার (০৭.০১.১৪) দুপুরে সরজমিনে গিয়ে পুকুরটির উত্তর পাড়ে ট্রাক্টর দিয়ে বালি ফেলা অব্যাহত রাখতে দেখা গেছে।
আবেদনকারী বাপ্পি ঘোষ বলেন,‘২০১১ সালেও সরকারি ওই পুকুরটির ভরাটের পাঁয়তারা করা হয়। কিন্তু এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় রিপোর্ট হলে, প্রশাসনের বাঁধার মুখে সেটি ভেস্তে যায় এবং পুকুরের মালিকানা দাবিদার একজনকে কারাগারে নেওয়া হয়। কিন্তু এবার পুকুরটি আবারও ভরাটের পাঁয়তারা শুরু হওয়ায় জনস্বার্থে এর প্রতিকার চেয়ে ফের আবেদন করেছি।’
নবীনগর পৌরসভার সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর স্বপ্না ঘোষ বলেন,‘এই পুকুরটি অর্পিত (ভিপি) সম্পত্তি। এই পুকুর নিয়ে আদালতে একাধিক মামলাও আছে। এরপরও ভূয়া জাল দলিলের মাধ্যমে ওই সরকারি পুকুরের মালিকানা দাবী করে কিভাবে বারবার পুকুরটি ভরাটের পাঁয়তারা করছে, সেটি বুঝতে পারছিনা।’
শুক্রবার সরজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে পুকুরটির বেশীরভাগ অংশের মালিকানা দাবিদার প্রয়াত আবদু মিয়ার ছেলে আবদুল আলীম বলেন,‘ ভাই, পুকুর নয়, পুকুরের পাড় ভরাট করছি। মূলত: পুকুরের ৫৯ শতক জায়গা আমার প্রয়াত পিতা ১৯৬৫ সালে জনৈক ললিত মোহন দাসের কাছ থেকে খরিদ করেছিলেন। কিন্তু ওই ৫৯ শতক জায়গাসহ পুকুরের সর্বমোট ৮৮ শতক জায়গা ভূলবশত সরকারিভাবে অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভূক্ত হয়। পরে সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে আমাদের পক্ষে মালিকানা রায় পাই। যার যাবতীয় কাগজপত্র ও রায়ের কপি আমাদের কাছে আছে।’
নবীনগরের সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আবেদনের প্রাপ্তি স্বীকার করে বলেন,‘ বাদী এবং বিবাদী উভয় পক্ষকেই শিগগীর ডাকা হবে। এরপর কাগজপত্র পরীক্ষা নীরিক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসংগত, ২০১১ সালেও মাটি ফেলে পুকুরটি ভরাট করার পাঁয়তারা করে এই চক্রটি। কিন্তু প্রশাসনের বাঁধার মুখে সেটি ভেস্তে যায়।