আজ আলাউদ্দিন খাঁর ৪১তম মৃত্যু বার্ষিকী, স্মৃতিচিহ্ন গুলোর সংস্কারের উদ্যোগ নেই
এস এ রুবেল:- আজ শুক্রবার ৬ই সেপ্টেম্বর সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ-র ৪১তম মৃত্যু বার্ষিকী। তিনি ১৯৭২ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের মাইহার রাজ্যে ১১০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ১৮৬২ সালে নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। এ উপলক্ষে ৬ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার আলাউদ্দিন খাঁ স্মৃতি সংসদ ও শিবপুর এলাকাবাসী ও স্বজন সমাবেশের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অথচ মৃত্যুর ৪১ বৎসর পেরিয়ে গেলেও সংরক্ষনের অভাবে সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ-র জন্মভুমি নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে তার নিজ হাতে গড়া মসজিদটি এবং পিতা-মাতার কবর ধংসের পথে। অন্যদিকে সংগীত বিদ্যালয়, পর্যটন কেন্দ্র, অতিথি শালা, মিলনায়তনে গড়ে তুলার জন্য দানকৃত নির্ধারিত জায়গাটি বর্তমানে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এ দিকে নবীনগরের এক তরুণ ভাষ্করশিল্পী নিজহাতে গড়া সুর সম্রাটের একটি মূর্তি, নবীনগরের কোন পাবলিক স্থানে স্থাপনের চেষ্টায় গলদঘম হয়েই চলেছে। মহান এই গুণীজনের পূর্ণ্য জন্মভূমিতে তাঁর অবদানকে ধরে রাখার, তাঁর স্মৃতিকে লালন করার জন্য সরকারী বা বে-সরকারি কোন পর্যায় থেকেই কোন উদ্যোগ নেই। শিবপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ-র পিতা সবদর হোসেন খাঁ এবং মাতা সুন্দরী খানম এর কবর দুটির চারদিকের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে গেছে এবং মূল কবরস্থানটিও পার্শ্ববতী পুকুরে বিলীন হওয়ার পথে। অন্যদিকে ১৯১৯ ইং সালে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় ওস্তাদজী কর্তৃক নির্মিত হয় সুদৃশ্য একটি মসজিদ। করোকার্য মন্ডিত মসজিদটিতে ছোট-বড় ১৬টি মিনার আছে। মসজিদের পিছনে ঈদের নামাজের জন্য বড় পাকা মাঠ তৈরী করা হয়। ওস্তাদজী নিজে হাতে মাটি কেটে ফেলে ইট বসিয়ে যে মসজিদটি তৈরীর সূচনা করেছিলেন তা আজ সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের পথে। অন্যদিকে ১৯৯১ ইং সালে আলাউদ্দিন খাঁ-র দৌহিত্র লাখু খাঁ সঙ্গীত বিদ্যালয়, পর্যটন কেন্দ্র, অতিথি শালা, মিলনায়তনে গড়ে তুলার জন্য তৎকালীন জেলা প্রশাসকের কাছে ২২.৫০ শতক জায়গা হস্তাস্তর করেন। কিন্তু আজো তা বাস্তবায়িত হয়নি। এ ব্যাপারে সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাাঁ স্মৃতি সংসদের সভাপতি শামিম রানা রতন বলেন, ওস্তাদজীর অনেক সম্পাত্তি থাকলেও তা আজ কতিপয় ব্যক্তির ভোগ দখলে। ফলে ওস্তাদজীর পিতা-মাতার কবর তাঁর নিজ হাতে গড়া মসজিদটি আজ ধ্বংসের পথে। সরকারও কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। যদিও ৮০ দশকের গোড়ার দিকে তৎকালীন সময়ে নবীনগর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও বিএনপি সরকারে তথ্য ও বেতার মন্ত্রী হাবিবুলা খাঁন ঘোষনা দিয়েছিলেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ-র জন্মভূমিতে একটি সংগীত পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার। পর্যটন কেন্দ্র বাস্তবায়নের জন্য সংষ্কৃতি মন্ত্রনালয় ৫ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করে ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে সরকারের নিকট জোর আবেদন জানাচ্ছি যে, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ-র স্মৃতি রক্ষার্থে বিষয়টি বাস্তবায়িত করা হোক। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম নাজিম উদ্দিন বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর পিতা-মাতার কবর সংরক্ষনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং চারিদিকে বাউন্ডারী দিয়ে উপরে ছাঁদ দেওয়া হবে, যাতে দর্শনার্থীরা ছাঁদের নিচে দাড়িয়ে তা দেখতে পারে। |