Main Menu

নবীনগরে চাকরী দেওয়ার কথা বলে,লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

+100%-


প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় ‘ডেল্টা এ্যানভাইরনমেন্ট ডেভেলপমেন্ট’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) ‘গ্রুপ অর্গানাইজার ও ফিল্ড অফিসার’ পদে মাসিক ৯ থেকে ১১ হাজার টাকা বেতন দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চাকরী প্রার্থীর প্রত্যেকের কাছ থেকে জামানত বাবদ ৩৮০০ টাকা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরজমিনে ঘুরে ভূক্তভোগীদের সংগে কথা বলে জানা গেছে, ডেল্টা এ্যানভাইরনমেন্ট ডেভেলপমেন্ট নামের ওই বেসরকারি সংস্থাটি নিজেদেরকে ‘সরকার অনুমোদিত’ দাবি করে সম্প্রতি উপজেলার ২১ ইউনিয়নে লিফলেট আকারে একটি ‘নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি’ বিলি করে। উপজেলার সর্বত্র বিলি করা ওই শত শথ লিফলেটে নবীনগর উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে একজন করে এইচএসসি পাস ‘গ্রুপ অর্গানাইজার’ (পুরুষ) ও প্রত্যেক ওয়ার্ডে (প্রতি ইউনিয়নে ৯জন) একজন করে এসএসসি পাস ‘ফিল্ড অফিসার’ (পুরুষ/মহিলা) পদে লোক নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়। ওই লিফলেটে লোভনীয় বেতন প্রাপ্তির কথা পড়ে (গ্রুপ অর্গানাইজার পদে ১১ হাজার ও ফিল্ড অফিসার পদে ৯ হাজার) শত শত চাকরী প্রার্থীরা এসে জানতে পারেন চাকরী পেতে উভয় পদের জন্য জামানত হিসেবে ওই সংস্থায় নগদ ৩৮০০ (তিন হাজার আটশত) টাকা করে জমা রাখতে হবে। অত:পর লোভনীয় বেতনের আশায় চাকরী প্রার্থীরা সংস্থার নিয়ম অনুযায়ি জামানত বাবদ প্রত্যেকে নগদ ৩৮০০ টাকা করে ওই সংস্থায় জমা করেন।
ভূক্তভোগী হাবিবুর রহমান ও নাছিমা আক্তার নামের দুই চাকরী প্রার্থী বলেন,‘গত ২০ এপ্রিল ছিল জামানতের ৩৮০০ টাকাসহ বায়োডাটা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। কিন্তু আমরা জামানতের টাকাসহ বায়োডাটা জমা দিয়ে এখন ওই সংস্থা সম্পর্কে মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরণের নেতিবাচক কথাবার্তা শুনতেছি।’
মঙ্গলবার (২৩.০৪.১৩) সকালে উপজেলার কণিকাড়া গ্রামের কবরস্থানের পাশে অবস্থিত ওই সংস্থার অফিসে গিয়ে একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো দেখা গেলেও অফিসে তালা ঝুলতে দেখা যায়। এসময় গ্রামের অনেকেই এই অফিসের বিষয়ে  তেমন কোন তথ্য দিতে পারেননি।
এ বিষযে ওই সংস্থার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার কণিকাড়া গ্রামের বাসিন্দা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী শারমীন আক্তার (পিংকী) চাকরী প্রার্থীদের কাছ থেকে ৩৮০০ টাকা করে নেওয়ার কথা স্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন,‘ভাই, একটি পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে আমি নিজেও এই সংস্থায় জামানত হিসেবে ৩৯৫০ টাকা জমা রেখে ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের চাকরী নিয়েছি। কিন্তু দু’মাসেও কোন বেতন পাইনি। পাশাপাশি লোভনীয় বেতনের আশায় ১০ হাজারের উপর জামানতের টাকা জমা রেখে আমার আম্মাসহ পরিবারের একাধিক লোককে ওই দুই পদে চাকরী পেতে বায়োডাটা জমা দিয়েছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, সবই ভূয়া, হয়তো কোন প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েছি।’
ওই সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরিচয় দিয়ে জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যাক্তি ঢাকা থেকে মুঠোফোনে বলেন,‘দেশের পরিস্থিতি বর্তমানে ভালো নয় বিধায় আমরা দুই সপ্তাহের জন্য আমাদের সংস্থার যাবতীয় কার্যক্রম আপাতত স্থগিত ঘোষণা করেছি। ইনশাল্লাহ, দুই সপ্তাহ পর আবার এর কার্যক্রম চালু করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আ,ন,ম নাজিম উদ্দীন বলেন,‘সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যের  সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসংগত,গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘নবীনগরে ১২ লাখ টাকা নিয়ে এনজিও উধাও’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও, প্রশাসন ওই বিষয়ে অদ্যাবধি কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করেন।






Shares