সন্তানদের ভবিষ্যত চিন্তায় অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়েরের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ
ব্রাহ্মনবাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বঘাউড়া গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল খায়ের। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সারা দিয়ে ৩ নম্বর সেক্টরে কর্ণেল শফিউল্লাহর অধীনে দেশ স্বাধীকার আন্দোলনে নিজের জান বাজী রেখে প্রাণপনে লড়াই করে গেছেন। তার মুক্তিবার্তা নং: লাল বই ০২১২০৩১৫১৩, মন্ত্রণালয় সনদ নং: ১৩১৭৪৪, প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষরিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সনদ নং: ১৩১৭। দেশ রক্ষার লড়াইয়ে পাকহানাদার বাহিনীতে পরাজিত করতে পারলেও বার্ধক্যের কাছে তিনি বার বার পরাজিত হচ্ছেন। দরিদ্র ভিটামাটিনহীন মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের নিজের চিকিৎসা চালাতেই হিমসিম খাচ্ছেন। কিন্তু সন্তানদের জন্য মাথাগুজার ঠাই করে রেখে যেতে না পারার কষ্ট তাকে আরো বেশি অসুস্থ্য করে তুলেছে।
মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়েরের জানান, পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৭ জন। তিনি এখন বার্ধক্যে জরাগ্রস্থ। তার উপার্জনের সমস্ত অর্থ সন্তানদের লেখাপাড়ার পিছনে ব্যয় করেছেন। সন্তানরা বড় হয়েছি সত্যি। কিন্তু তারা অর্থনৈতিকভাবে এখনও পিছিয়ে রয়েছে। গ্রামের ছোট্ট একটি ভিটায় টিনের একটি জরাজীর্ণ ঘর আর তাতেই স্বপরিবারে গাদাগাদি করে রাত্রি যাপন করেন সবাই। দুরারোগ্য ক্যানসার ব্যাধিতে আক্রান্ত। চিকিৎসার জন্য মোটা অংকের অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু যেখানে দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও অর্থের অভাবে উপযোক্ত সন্তানদের জন্য বাসস্থানের কোন ব্যবস্থা করতে পারছে না, সেখানে মরনব্যাধি ক্যানসারে নিজের চিকিৎসা খরচ বহন করা সত্যি দুসাধ্য ব্যাপার।
তিনি জানান, স্ত্রী মমতাজ বেগম বার্ধক্য জনিত নানা ব্যাধিতে আক্রান্ত। বড় ছেলে জসিম উদ্দিন বর্তমানে একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত আছেন। তার ৩ সন্তানসহ ৫ সদস্যের পরিবারের চালাতে নিজেই খুব দুরাবস্থায় আছেন। মেঝ ছেলে মফস্বলের একটি বেসরকারী মসজিদে ইমামতি করেন। প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা বেতন পান। এই টাকায় এক মেয়েসহ ৩ সদস্যের পরিবার নিয়ে খুব কষ্টকর দিন অতিবাহিত করছে। ছোট ছেলে মো. ফরিদ মিয়া বেকার অবস্থায় রয়েছে।
আবুল খায়েরের আরো জানান, নিজের করে আসা বুয়েট টেলিফোন একচেঞ্জের চাকরিতে শতচেষ্টায়ও কোন ছেলেকে বহাল করা সম্ভব হলোনা। বাবা মায়ের অসুস্থ্যতায় সন্তানের এগিয়ে আসা উচিত সন্তানদেরে সেই উলব্ধি আছে। কিন্তু সেখানে নিজেরাই চলতে পারছে না সেখানে অসুস্থ্য বাবা মাকে তারা কিভাবে দেখবাল করবে?
অর্থের অভাবে স্বামী হয়ে স্ত্রীকে চিকিৎসা এবং বাবা হয়ে সন্তানদের জন্য মাথাগুজার ঠাই করে রেখে যেতে না পারার কষ্ট তাকে আরো বেশি অসুস্থ্য করে তুলেছে। তাই তিনি দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কাছে সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়েরের বিশ্বাস পৃথিবীর সকল মানুষ বিমুখ করলেও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের বিপদে মুখ ফিরিয়ে নিবেন না। কারণ ’৭১-এ বঙ্গবন্ধুর তৈরি হাতিয়ার মুক্তিযোদ্ধারা কষ্টে থাকলে তিনিই সবচেয়ে বেশী কষ্ট পান।
ছেলে মো. গিয়াস উদ্দীন বলেন, বর্তামনে বাবা-মা গ্রামের বাড়ীতে সন্তানদের থেকে একেবারে একাকী বসবাস করছেন। কারণ বাসস্থানের অভাবে সবাইকে নিয়ে এক সাথে বসবাস করা অসম্ভব। তাই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের এই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন। আপনি দয়া করে এই গরীব, দুস্থ ও অসহায় মুক্তিযোদ্ধা এবং একজন সৎ সরকারী সাবেক কর্মচারী পরিবারের প্রতি টি সু-দৃষ্টি কামনা করছি।