উপজেলা নির্বাচনের গেজেট প্রকাশ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ নবীনগর উপজেলার বিজয়ী প্রার্থীদের নাম নেই
মিঠু সূত্রধর পলাশ নবীনগর প্রতিনিধি: ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ীদের নাম প্রকাশ করে গত ১৬ এপ্রিল গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু সে গেজেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা নির্বাচনে বেসরকরিভাবে নির্বাচিত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নাম প্রকাশ হয়নি। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে কৌতূহল দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, নবীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৬টি কেন্দ্রের ব্যালট পেপারে গরমিলসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ পুনরায় ভোটগ্রহণের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কাজী জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটু।
সে আবেদনে উল্লেখ করা ওই ১৬ কেন্দ্র হলো-উপজেলার বারো আউলিয়া মাদরাসা, ব্রাহ্মণহাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোনাউর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধনাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারায়ণপুর ডি.এস ফাজিল মাদরাসা, চরলাপাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লাপাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চিত্রি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাফরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফতেহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাহবাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শাহপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র।
লিখিত আবেদন সূত্রে জানা গেছে, ১৬টি কেন্দ্রে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের ব্যালট পেপারে গরমিল, প্রথমিক বেসরকারি ফলাফল বার্তা প্রেরণ শিট ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কর্তৃক গণনার ফলে তিন প্রার্থীর মোট ভোট ও বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যায় ব্যাপক গরমিল রয়েছে। এছাড়াও অন্যায় ও অবৈধভাবে নৌকা প্রতীকের সাড়ে চার হাজার বৈধ ভোট স্থানীয় এমপি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে উপজেলার কর্মকর্তাবৃন্দের সমন্বয়ে বাতিল দেখানো হয়েছে।
লিখিত আবেদনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুল দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নৌকা প্রতীকের পোলিং এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে দোয়াত কলম প্রতীকে সিল মেরে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নবীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সমন্বয়ে ভোররাতে বেসরকরিভাবে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী মো. মনিরুজ্জামানকে বিজয়ী ঘোষণা করায় গেজেট না প্রকাশ করারও দাবি জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার জাহিদুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে আমার কোন ধারনা নাই। তবে নির্বাচন যেহেতু হেয়েছে গেজেট হবে। ইলেকশন বন্ধের বা বাতিলের কোর্টের কোন রায় নাই,কমিশনের কোন সিদ্ধান্ত নাই, সে ক্ষেত্রে গেজেট না হবার কোন কারন নাই।
উল্লেখ্য যে, নবীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনির (দোয়াত কলম) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
৩১ মার্চ রোববার রাতে উপজেলা পরিষদের ফলাফল কক্ষ থেকে এ ফল ঘোষণা করা হয়। বিজয়ী দোয়াত কলমের প্রতীকের প্রাপ্তভোট ৪৯ হাজার ৮৭৮। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী নৌকা প্রতীকের জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটু পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৬৯০ ভোট। ভাইস চেয়ারম্যান পদে জাকির হোসেন সাদেক (চশমা) ২৪ হাজার ৯১১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী (টিউবওয়েল প্রতীক) কবির আহাম্মেদ পেয়েছেন ২১ হাজার ২৩১ ভোট।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে শিউলী রহমান (কলস প্রতীক) ২৫ হাজার ৪৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী মাহামুদা আক্তার শিউলী পেয়েছেন ২২ হাজার ৬৪৫ ভোট।