নবীনগর ছেলের বিরুদ্ধে চুরির অপবাদ দিয়ে বৃদ্ধ বাবার ঘর ভাংচুর ও লুটপাট
মিঠু সূত্রধর পলাশ : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ছেলের বিরুদ্ধে চুরির অপবাদ দিয়ে লুটপাটের পর বৃদ্ধ বাবার একটি ঘর ভাঙচুর ও অপর ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বৃদ্ধ জীবন মিয়া (৬০) তার স্ত্রী, তিন ছেলে, এক মেয়ে ও ছেলের বৌকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। উপজেলার ব্রাহ্মণহাতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানান, জীবন মিয়ার ছেলে হান্নান মিয়া (৩০) কে গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার নোয়াগাঁ গ্রাম থেকে চোর অপবাদ দিয়ে আটক করে স্থানীয় প্রভাবশালী মো. রিপন মিয়া ও তার লোকজন। পরে ওই দিনই রিপন মিয়া তার বাড়িতে সালিশি সভা ডেকে আটক হান্নান মিয়াকে দুই বছর বিনা পয়সায় রিপন মিয়ার গরুর খামারে কাজ করার সিদ্ধান্ত দেন। খামারে কাজ করার একপর্যায়ে গত শুক্রবার রাতেই খামার থেকে হান্নান পালিয়ে যায়। পরে খামারে কাজ না করে হান্নান পালিয়ে গেলে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত রোববার প্রভাবশালী রিপন মিয়ার লোকজন হান্নানের পিতা জীবন মিয়ার দুটি বসত ঘরের মধ্যে একটি বসত ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। অপর একটি বসত ঘরের তালা লাগিয়ে দিয়ে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেন।
স্থানীয় ব্রাহ্মণহাতা গ্রামর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মো. অলি মিয়া বলেন, চোর সন্দেহে হান্নানকে আটকের পর রিপন সাহেবের বাড়িতে শালিসি সভায় তাকে বিনা বেতনে দু’বছর কাজ করার সিদ্ধান্ত দেন রিপন সাহেব। আমি তাকে পুলিশে দেয়ার কথা বলেছিলাম। পরে শুনেছি হান্নান পালিয়ে গেলে রিপন সাবের লোকজন তার পিতার বসতঘর ভাংচুর করে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এ বিষয়ে অসহায় বৃদ্ধ জীবন মিয়ার সাথে কথা বললে কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি জানান, আমার ছেলে চোর হলে তাকে পুলিশে দিক। তার বিচার করুক। কিন্তু তারা কেন আমার বাড়ি-ঘর ভাঙ্গে, আমার জিনিস পত্র নিয়া বিক্রয় করে। আমি এ বিষয়ে এলাকার সাহেব সর্দার ও পুলিশকেও জানিয়েছি তারাও কিছু করেনা। আমি আহন পালাপা-মাই বৌ বাচ্চা নিয়া কোথায় দাঁড়ামু।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) মেহেদী হাসান জানান, এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। ঘটনা শুনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমি নিজেও সেখানে যাব। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে প্রভাবশালী রিপন মিয়ার সাথে কথা বলতে তিনি জানান, চোর হান্নান সর্ম্পেকে আমার ভাতিজা হয়। তাকে ভালো হওয়ার জন্য সুযোগ দেয়া হয়েছিল আমার খামারে চাকরি দিয়ে। তাদের ঘর ভাঙ্গার বিষয়ে আমি জানি না। গ্রামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি একসময় গ্রামকে অনেক ঘৃণা করতাম। গ্রামে গেলে আমার প্রতিদিন এক লাখ টাকা খরচ হয়। আমি স্পাইডার গ্রুপের ম্যানিজং ডিরেক্টর। এলাকার অনেক উন্নয়নমূলক কাজে আমি অবদান রাখি।